ইসলাহ
ইসলাহ বা আল-ইসলাহ (الإصلاح ,إصلاح, al-ʾIṣlāḥ), যা ইসলাহুল কুলুব বা অন্তর সংষ্কার নামেও পরিচিত, হল একটি আরবি শব্দ, যা ইসলামে উন্নয়ন, বিকাশ, অবস্থার উন্নতিকরণ, কোনকিছু সংশোধন ও পাপমোচন, মীমাংসা, বন্দোবস্ত হিসেবে প্রধানত সংষ্কার বা উন্নয়ন অর্থে ব্যবহৃত হয়। শব্দটি ধর্ম এ রাজনৈতিক পরিভাষা হিসেবে এবং ব্যক্তি ও স্থানের নাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাজদিদ (অর্থঃ নবায়ন) হল এর সাথে বহুল ব্যবহৃত একটি শব্দ, যার অর্থ নতুনরূপে মুসলিম সমাজের সংষ্কার এবং যারা তাজদিদ করেন তাদের মুজাদ্দিদ বলা হয়। ইসলামী খলিফা দ্বিতীয় উমরকে ইসলামের প্রথম মুজাদ্দিদ বলে গণ্য করা হয়।
ভুল সংশোধনের সুন্নাহ পদ্ধতি
সম্পাদনা- ভুল সংশোধনে দ্রুত ব্যবস্থাগ্রহণ এবং শিথিলতা না করা
- বিধান বর্ণনার মাধ্যমে ভুলের প্রতিকার
- ভুলকারীদের শরী'আতের দিকে ফিরিয়ে আনা এবং যে মূলনীতির তারা খেলাফ করেছে তা স্মরণ করিয়ে দেওয়া
- ধারণায় ত্রুটির কারণে যে ভুল ধরা পড়ে সেখানে ধারণার সংশোধন
- উপদেশ ও পুনঃপুনঃ ভয় দেখানোর মাধ্যমে ভুলের প্রতিকার
- ভুল-ভ্রান্তিকারীর উপর দয়া-মমতা প্রকাশ করা
- ভুল ধরায় তাড়াহুড়ো না করা
- ভুলকারীর সঙ্গে শান্তশিষ্ট আচরণ
- ভুলের ভয়াবহতা বর্ণনা করা
- ভুলের মাশুল বা খেসারত বর্ণনা করা
- ভুলকারীকে হাতে কলমে বা ব্যবহারিকভাবে শিক্ষাদান
- সঠিক বিকল্প তুলে ধরা
- ভুল করা থেকে বিরত থাকার উপায় বলে দেওয়া
- সরাসরি ভুলকারীর নাম না বলে আমভাবে বলা
- জনসাধারণকে ভুলকারীর বিরুদ্ধে উত্তেজিত না করা
- ভুলকারীর বিরুদ্ধে শয়তানকে সহযোগিতা করা থেকে বিরত থাকা
- ভুল কাজ বন্ধ করতে বলা
- ভুলকারীকে তার ভুল সংশোধন করতে বলার নির্দেশ দেওয়া (ক) ভুলকারীর দৃষ্টি তার ভুলের দিকে ফিরিয়ে দেওয়া, যাতে সে নিজেই তার ভুল শুধরে নিতে পারে (খ) সম্ভব হ'লে কাজটিকে পুনরায় সঠিক পদ্ধতিতে করতে বলা (গ) কাজের অনিয়মতান্ত্রিক ধারাকে যথাসম্ভব নিয়মতান্ত্রিক করতে বলা (ঘ) ভুলের প্রভাব-প্রতিক্রিয়ার সংশোধন (ঙ) ভুলের কাফ্ফারা প্রদান
- কেবল ভুলের ক্ষেত্রটুকু বর্জন এবং বাকীটুকু গ্রহণ
- পাওনাদারের পাওনা ফিরিয়ে দেওয়া এবং ভুলকারীর মান মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখা
- দ্বিপক্ষীয় ভুলের ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে উভয়ের ভুল সম্পর্কে নির্দেশনা প্রদান করা
- ভুলকারীকে যার বিরুদ্ধে সে ভুল করেছে তার থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে বলা
- ভুলকারীকে যার বিরুদ্ধে সে ভুল করেছে তার মর্যাদা স্মরণ করিয়ে দেওয়া, যাতে সে লজ্জিত হয় এবং ওযরখাহী করে
- উত্তেজনা প্রশমনে হস্তক্ষেপ এবং ভুলকারীদের মধ্য থেকে ফেত্নার মূলোৎপাটন
- ভুলের জন্য ক্রোধ প্রকাশ
- ভুলকারী থেকে দূরে সরে যাওয়া এবং এই আশায় বিতর্ক পরিহার করা যে, সে সঠিক পথে ফিরে আসবে
- ভুলকারীকে তিরষ্কার না করা
- ভুলকারীকে কটু কথা না বলা
- ভুলকারী থেকে মুখ না ফিরিয়ে নেওয়া
- ভুলকারীকে বয়কট না করা
- ঘাড়তেড়া ভুলকারীর বিরুদ্ধে বদদো'আ না দেয়া।
- ভুলকারীর প্রতি করুণাবশত কিছু ভুল ধরা এবং কিছু ভুল উপেক্ষা করা, যাতে ইশারা-ইঙ্গিতে পুরো ভুলটা উপলব্ধিতে আসে
- মুসলিমকে তার ভুল সংশোধনে সহযোগিতা করা
- ভুলকারীর সাথে সাক্ষাৎ এবং আলোচনার জন্য তার সাথে বৈঠক
- ভুলকারীর মুখের উপর তার অবস্থা ও ভুলের কথা বলে না দেওয়া
- ভুলকারীকে জেরা না করা
- ভুলকারীকে বুঝিয়ে দেওয়া যে তার খোঁড়া অজুহাত গ্রহণযোগ্য নয়
- মানুষের মেযাজ ও সহজাত প্রবৃত্তির প্রতি লক্ষ্য রাখা[১]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "ভুল সংশোধনের নববী পদ্ধতি, সালিহ আল মুনাজ্জিদ, অনুবাদ: আব্দুল মালেক, হাদীস ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, পৃঃ ৪৭-১৩২" (পিডিএফ)। ৯ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- Khalid bin Abdullah al-Musleh (2004), Islshul Qulub (Reform of the hearts) (urdu)
- ভুল সংশোধনের নববী পদ্ধতি - মুহাম্মদ সালিহ আল-মুনাজ্জিদ (বাংলা) ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ নভেম্বর ২০২২ তারিখে