ইন্দ্রা নুই

ভারতীয় আমেরিকান ব্যাবসায়িক

ইন্দ্রা কৃষ্ণমুর্থী নুই (তামিল: இந்திரா கிருஷ்ணமூர்த்தி நூயி) (জন্মঃ ২৮ অক্টোবর ১৯৫৫) বিখ্যাত খাদ্য ও পানীয় প্রস্তুতকারক সংস্থা পেপসিকোর প্রধান কার্য নির্বাহক।[] ১লা অক্টোবর, ২০০৬ থেকে কম্পানির প্রধান কার্য নির্বাহকের পদের, স্টিভেন রিনেমন্ডের উত্তরসুরি হিসেবে ১৪ই আগস্ট, ২০০৬ সালে নুইকে মনোনীত করা হয়[][]৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৭ সালে তাকে কম্পানির চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত করা হয় এবং ২রা মে, ২০০৭ থেকে তিনি তার দ্বায়িত্ব পালন করছেন[]। ২০০৮ সালের ফোর্বস পত্রিকায়, পৃথিবীর ১০০ জন সবচেয়ে প্রভাশালী মহিলার তালিকায় তাকে তৃতীয় স্থানে রাখে[]ফরচুন পত্রিকা তাদের বার্ষিক মান নির্ধারণের বিচারে তাকে ২০০৬, ২০০৭ এবং ২০০৮ সাল গুলির জন্য সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী মহিলা হিসেবে নামাঙ্কিত করে[][][]

ইন্দ্রা নুই
বিশ্ব অর্থনৈতিক আলোচনাচক্র, ডাভোস ২০০৮
জন্ম (1955-10-28) ২৮ অক্টোবর ১৯৫৫ (বয়স ৬৯)
শিক্ষামাদ্রাস খ্রিষ্টান কলেজ
আইআইএম কলকাতা
ইয়েল স্কুল অফ ম্যানেজমেন্ট
নিয়োগকারীপেপসিকো
উপাধিপ্রধান কার্য নির্বাহক
মেয়াদ২০০৬- বর্তমান
পূর্বসূরীস্টিভেন রিনেমন্ড
বোর্ড সদস্যLincoln Center for the Performing Arts
আন্তর্জাতিক উদ্ধার কমিটি
ওয়েবসাইটপেপসিকর

প্রাথমিক জীবন

সম্পাদনা

তিনি একটি তামিল পরিবারে ২৮শে অক্টোবর, ১৯৫৫ সালে) ভারতের, তামিলনাড়ুর চেন্নাইতে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি চেন্নাইর হোলি অ্যাঞ্জেলস AIHSS বিদ্যালয় থেকে প্রথমিক শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৭৪ সালে মাদ্রাস খ্রীষ্টান কলেজ থেকে রসায়ন শাস্ত্রে স্নাতক হন এবং পরে তিনি কলকাতার ইন্ডিয়ান ইন্স্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট থেকে এমবিএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭৮ সালে তিনি ইয়েল স্কুল অফ ম্যানেজমেন্টে ভর্তি হন এবং 'সরকারী ও বেসরকারী সংস্থার পরিচালন ব্যবস্থায়' মাস্টার'স ডিগ্রী অর্জন করে।

কর্মজীবন

সম্পাদনা

ভারতে নুই জনসন এন্ড জনসন এবং মেটুর বিয়ার্ডশেল সংস্থায় সামগ্রী প্রবন্ধক (প্রডাক্ট ম্যানেজার) হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৮০ সালে স্নাতক হয়ে নুই দ্য বস্টন কনসাল্টিং গ্রুপে (BCG) এবং তারপর মটোরোলা, এশিয়া ব্রাউন বভেরী প্রভৃতি সংস্থায় পরিচালন কৌশলীর পদাধিকারিনী হিসেবে কাজ করেন[১০]। পেপসিকোর বোর্ড অফ ডাইরেক্টরসের একজন সভ্য হওয়া ছাড়াও তিনিইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি, ক্যাটালিস্ট[১১] বোর্ডেরও একজন সভ্য এবং লিংকন সেন্টার ফর দ্য পারফর্মিং আর্টসের সদস্য। তিনি পরম্পরাগত ভাবে একজন অংশীদার ইয়েল কর্পোরেশনের[১২] এবং আইসেনহাওয়ার ফেলোশিপ ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এবং বর্তমানে ইউএস-ইন্ডিয়া বিসনেস কাউন্সিলের সভাপতি হিসেবেও কর্মরত[১০]

পেপসিকোর নির্বাহিক

সম্পাদনা

ইন্দ্রা নুই ১৯৯৪ সালে পেপসিকোতে যোগদান করেন এবং ২০০১ সালে তাকে কোম্পানির সভাপতি এবং চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (CEO) হিসেবে মনোনীত করা হয়। কোম্পানির বিশ্ব-পরিচালন ব্যবস্থাকে তিনি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন যার মধ্যে পেপসিকোর ১৯৯৭ সালের পুনর্গঠন হয়, যাতে ট্রাইকোন নামক রেস্তোরাগুলি থেকে কোম্পানির বিচ্ছিন্নকরণও অন্তর্গত যা বর্তমানে ইয়াম! ব্র্যান্ডস নামে পরিচিত। নুই ১৯৯৮ সালে ট্রপিকানার[১৩] অর্জনে এবং কাকার ওটস কোম্পানির সঙ্গে একত্রীকরণের নেতৃত্ব প্রদান করেছিলেন, যার ফলে গাটোরেড এবং পেপসিকোর অধীনস্থ হয়। ২০০৭ সালে পেপসিকোর ৪৪ বছরের ইতিহাসে তিনি পঞ্চম চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার হন[১৪]

হৃদয়বৃত্তি এবং রসিকতা সহকারে তার দৃঢ়তা এবং গভীর অন্তর্গমনের ক্ষমতা, তার ব্যাবসায়ীক সহকর্মীদের দ্বারা উচ্ছসিত ভাবে প্রশংসিত হয়েছে। বিসনেস উইক অনুসারে, ২০০০ সালে[] তার CFO হিসেবে কাজ শুরু করার পর কোম্পানির বার্ষিক রাজস্ব আয় ৭২ শতাংশ বৃদ্ধি পায় এবং ২০০৬ সালে সর্বমোট লাভ দ্বিগুনের চেয়েও বেশি, ৫.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়[১৫]ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের ২০০৭ এবং ২০০৮ সালে[১৬][১৭] ৫০ জন লক্ষনীয় মহিলার তালিকায় এবং টাইম'সের ২০০৭ এবং ২০০৮ সালে পৃথিবীর ১০০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তালিকায় তার নাম ছিল।

ক্ষতিপূরণ

সম্পাদনা

২০০৮ সালে, পেপসিকোর CEO হিসেবে ইন্দ্রা নুইরের সর্বমোট ক্ষতিপূরণ (বেতন) ছিল ৪,৯১৭,৭০১ মার্কিন ডলার, যার মধ্যে ১,৩০০,০০০ মার্কিন ডলার মৌলিক বেতন, ২,৬০০,০০০ মার্কিন ডলার নগদ বোনাস, ৬,৪২৮,৫৩৮ মার্কিন ডলার এর উপাদান এবং ৪,৩৮২,৫৬৯ মার্কিন ডলার ঐচ্ছিক ছিল[১৮]

রাজনীতি

সম্পাদনা

২০০৮ সালের জানুয়ারিতে নুই, ভারতে ব্যবসাকারী বিশ্বের ৩০০টি বৃহৎ সংস্থার হয়ে প্রতিনিধিত্বকারী অমুনাফাকারী একটি প্রতিষ্ঠান, ইউএস-ইন্ডিয়া বিসনেস কাউন্সিল (USIBC)-এর সভাপতি নির্বাচিত হন। নুই, ইউএস-ইন্ডিয়া বিসনেস কাউন্সিলের পরিচালক সভা যা, সমুদায় আমেরিকান শিল্প সমাজের ৬০ জনেরও বেশি প্রবীণ প্রতিনিধির সমন্বয়, তার নেতৃত্ব প্রদান করেন[১৯][২০]

স্বীকৃতি

সম্পাদনা

২০০৭ সালে ভারত সরকার দ্বারা পদ্মভূষণ খেতাবে ভূষিত করার জন্য তাকে মনোনীত করা হয়[২১]ইউ.এস. নিউস এন্ড ওয়ার্ল্ড রিপোর্টে ২০০৮ সালে আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ আর্টস এন্ড সায়েন্সেসের ফেলোশিপের জন্য নির্বাচিত করা হয়[২২]। ফোর্বস সমীক্ষা অনুসারে ইন্দ্র নুই 2009 সালে বিশ্বের তৃতীয় সর্ব-শক্তিমান মহিলা বলে গণ্য হন[২৩]

পাদটিকা

সম্পাদনা
  1. "SAJAforum: BUSINESS: Indra Nooyi's $6.2 pennies income"। ২২ অক্টোবর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  2. "Forbes Profile: Indra Nooyi"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০১-১৫ 
  3. "PepsiCo names first woman CEO"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১২-০৯ 
  4. "PepsiCo's Board of Directors Appoints Indra K. Nooyi as CEO"। ২০১৬-০৩-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১২-০৯ 
  5. Taub, Stephen (২০০৭-০২-০৫)। "PepsiCo Serves Up CEO in Chairman Role"। ২০০৭-০৩-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৭-০৯ 
  6. "The 100 Most Powerful Women: #3"। ২০০৮-০৮-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৮-২৭ 
  7. "50 Most Powerful Women 2006: #1"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১২-০৯ 
  8. "50 Most Powerful Women 2007: #1"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১২-০৯ 
  9. "50 Most Powerful Women 2009: #1"। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-০৯ 
  10. "Alumni Leaders - Indra Nooyi '80"। Yale School of Management। ২০১২-০৯-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-০৯ 
  11. "Board of Directors"। Catalyst। ২০০৯-০৩-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-০৯ 
  12. "PepsiCo president Indra Nooyi elected to Yale Corporation"Yale Bulletin & Calendar। ৩০ আগস্ট ২০০২। ১৮ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুলাই ২০০৯ 
  13. Levine, Greg (২০০৬-০৮-১৪)। "'Power Women' Member Nooyi To Lead 'Platinum' Pepsi"Forbes। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৯-১০ 
  14. "Indra Nooyi, Chairman and CEO of PepsiCo, Named CEO of the Year by GSCLG"। Marketwire। ২০০৯-০৯-০৯। ২০১৯-১২-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-০৯ 
  15. Brady, Diane (২০০৭-০৬-১১)। "Indra Nooyi: Keeping Cool In Hot Water"BusinessWeek। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-১০ 
  16. McKay, Betsy (2008-22-19)। "The 50 Women to Watch 2007"Wall Street Journal। সংগ্রহের তারিখ 2009-07-10  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  17. Crittenden, Michael R. (২০০৮-১১-১০)। "The 50 Women to Watch 2008"Wall Street Journal। ২০১৩-০৬-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-১০ 
  18. 2008 CEO, ইন্দ্রা কে. নুই-এর ক্ষতিপূরণ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১ নভেম্বর ২০০৯ তারিখে, Equilar.com
  19. "PepsiCo's Indra K. Nooyi Elected Chairman of U.S.-India Business Council" (PDF) (সংবাদ বিজ্ঞপ্তি)। U.S. Chamber of Commerce। ২০০৯-০১-২৩। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-০৯ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  20. "USIBC Leads U.S. Commercial Nuclear Executives to Help Implement Historic Nuclear Deal" (পিডিএফ) (সংবাদ বিজ্ঞপ্তি)। U.S. Chamber of Commerce। ২০০৯-০১-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-০৯ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  21. [Aloke] (২০০৭-০২-২৩)। "Khushwant, Karnik, Nooyi, Remo, Mittal on Padma list"Hindustan Times। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-০৯  |author-link1= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  22. "Academy Announces 2008 Class of Fellows"। American Academy of Arts & Sciences। ২০০৮-০৪-২৮। ২০০৯-০৬-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-০৯ 
  23. দ্য 100 মোস্ট পাওয়ারফুল উইমেন , Forbes.com

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা
পূর্বসূরী
স্টিভেন রিনেমন্ড
সভাপতি এবং পেপসিকোর CEO
২০০৬- বর্তমান
উত্তরসূরী
Incumbent