ইনভিজিবল চিলড্রেন

মার্কিন চলচ্চিত্র

ইনভিজিবল চিলড্রেন হল ২০০৬ সালের একটি আমেরিকান প্রামাণ্য চলচ্চিত্র। এই প্রামাণ্যচিত্রে উগান্ডায় লর্ডস রেজিস্ট্যান্স আর্মি কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। [১]

ইনভিজিবল চিলড্রেন
থিয়েটারে মুক্তির পোস্টার
পরিচালকজেসন রাসেল
ববি বেইলি
ল্যারেন পুল
পরিবেশকইনভিজিবল চিলড্রেন, ইনকর্পোরেটেড
মুক্তি
  • ২০০৬ (2006)
স্থিতিকাল৫৫ মিনিট
দেশযুক্তরাষ্ট্র
ভাষাইংরেজি

সারসংক্ষেপ সম্পাদনা

২০০৩ সালে কলেজ শিক্ষার্থী জেসন রাসেল, ববি বেইলি এবং ল্যারেন পুল ডারফুরের যুদ্ধের উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র তৈরির উদ্দেশ্যে নথি সংগ্রহের জন্য আফ্রিকা ভ্রমণ করেছিলেন। কিন্তু, সেখানে তারা ডারফুর যুদ্ধের নথি সংগ্রহের পরিবর্তে উত্তর উগান্ডার সংঘাতের দিকে মনোযোগ দেন, এই সংঘাত ইরিত্রিয়ান স্বাধীনতা যুদ্ধের পর আফ্রিকার দ্বিতীয় দীর্ঘতম চলমান সংঘাত হিসেবে পরিচিত ছিল। উত্তর উগান্ডায় তারা যখন গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিল তখন তাদের সামনে প্রকাশ্যে একজনকে গুলি করে হত্যা করতে দেখল।[২] ওই ঘটনার পরে তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত জোসেফ কনি ও তার বাহিনী লর্ডস রেজিস্ট্যান্স আর্মি (এলআরএ) সম্পর্কে জানতে পারে। তারা কনি ও এলআরএ কর্তৃক সংঘটিত অপরাধ, বিশেষ করে শিশুদের উপর ভয়াবহ নির্যাতন ও তাদের শিশু সৈনিক হিসেবে ব্যবহার করার তথ্য সংগ্রহ করে দেশে ফিরে আসে। ওই তথ্যর ভিত্তিতে তারা ইনভিজিবল চিলড্রেন: দ্য রাফ কাট নামে এই প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করে। এই প্রামাণ্যচিত্রটিতে জোসেফ কনি এবং তার লর্ডস রেজিস্ট্যান্স আর্মি কতৃর্ক শিশুদের অপহরণ, শিশুদের উপর চালিত ভয়াবহ নির্যাতন এবং তাদের শিশু সৈনিক হিসেবে ব্যবহার করার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এই প্রামাণ্যচিত্রটি উগান্ডার শিশুদের মাত্র একটি দলকে কেন্দ্র করে নির্মিত যারা এলআরএ কতৃর্ক অপহরণ এড়াতে প্রতি রাতে আশ্রয়ের জন্য মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে যেত। মূলত, এই প্রামাণ্যচিত্রের মাধ্যমেই উগান্ডায় সংগঠিত ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র সকলের সামনে আসে।[৩]

প্রদর্শনী সম্পাদনা

প্রামাণ্যচিত্রটি তৈরির পরে তারা শুধু তাদের পরিবার, বন্ধুদের ও কিছু পরিচিত কাছে প্রদর্শন করে। পরবর্তীতে, ২০০৪ সালের ২২ জুন, সান দিয়েগো বিশ্ববিদ্যালয়ের জোয়ান বি ক্রোক ইনস্টিটিউট ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসে প্রামাণ্যচিত্রেটি প্রথমবারের মত জনসমক্ষে দেখানো হয়েছিল। [৪] তারা মনে করেছিলো যে, উগান্ডার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশ্ববাসী একেবারেই অবগত নয় এবং এটি সবাইকে জানানো উচিত। তাই তারা

তখন থেকে ইনভিজিবল চিলড্রেন, ইনকর্পোরেটেড এর উদ্যোগে ১০ হাজারেরও বেশি কলেজ, উচ্চ বিদ্যালয়, গীর্জা, কনসার্ট এবং অন্যান্য স্থানে প্রামাণ্যচিত্রটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। অনুমান করা হয় ২০০৯ সালের জুন পর্যন্ত ৫ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ ইনভিজিবল চিলড্রেন: দ্য রাফ কাট দেখেছে। [৫]

সামাজিক সক্রিয়তা সম্পাদনা

এই প্রামাণ্যচিত্রে দেখানো শিশুদের গল্প তৃণমূল পর্যায়ে আন্দোলনের ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে, যা হাজার হাজার আমেরিকান কিশোরকে উত্তরাঞ্চলীয় উগান্ডায় যুদ্ধবিধ্বস্ত স্কুল পুনর্নির্মাণ এবং আফ্রিকান যুবকদের বৃত্তি প্রদানের জন্য অর্থ সংগ্রহের জন্য একত্রিত করেছিলো। [৬]

২০০৫ সালে, অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইনভিজিবল চিলড্রেন, ইনকর্পোরেটেড তৈরি করা হয়েছিল, যেটি উগান্ডার পরিস্থিতির প্রতি সাধারণ মানুষের সাড়া দেওয়ার একটি অন্যতম উপায় হিসেবে কাজ করেছে। [৭] ২০১০ সালের জুলাই মাসে উগান্ডার রাজধানী কাম্পালায় এক হামলায় এই সংস্থার নাট হেন নামক একজন কর্মী নিহত হয়। [৮]

ডিভিডি সম্পাদনা

এই প্রামাণ্যচিত্রটি প্রায় ৫৫ মিনিট দীর্ঘ এবং এর ডিভিডিতে বিভিন্ন চিত্রায়ন বিকল্পের ব্যবস্থা রেখে ৩৫ মিনিটের একটি ছোট সংস্করণ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও, ডিভিডিতে বিশেষ বৈশিষ্ট্যও রয়েছে; যেমন, মুছে ফেলা দৃশ্য, অতিরিক্ত অংশ, চলচ্চিত্র নির্মাতার ভাষ্য, যুদ্ধের আপডেট এবং ইনভিজিবল চিলড্রেন, ইনকর্পোরেটেড থেকে ট্রেলার ইত্যাদি। [১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে Invisible Children (ইংরেজি)
  2. Kron, Josh (মার্চ ১০, ২০১২)। "The warlord versus the world"The Sydney Morning Herald। Fairfax Media। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ১০, ২০১২ 
  3. "Invisible Children"www.oprah.com। Harpo, Inc.। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ৮, ২০১২ 
  4. University of San Diego ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৮ মার্চ ২০১২ তারিখে The Joan B. Kroc Institute for Peace & Justice.
  5. Deneen, Sally ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০০৯-১১-২০ তারিখে. "Making a Difference - Invisible Children Helping young victims in war-torn Africa," Success Magazine, 2010.
  6. "Wellspring International."। ২০১০-০৫-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৩-০৬ 
  7. Take Part ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০০৯-০৬-৩০ তারিখে web site, 2010.
  8. "AP Top News at 4:05 a.m. EDT"। জুলাই ১২, ২০১০। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ১২, ২০১০ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা