আলীবর্দীর সমাধি পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে খুশবাগ নামে পরিচিত বাগান কমপ্লেক্সের মধ্যে অবস্থিত। নদীর তীর থেকে প্রায় এক কিমি দূরে লালবাগ সদরঘাটের বিপরীতে এর অবস্থান। আলীবর্দীর পাশেই প্রিয় দৌহিত্র সিরাজের সমাধি। সিরাজের পদপ্রান্তে বেগম লুৎফা। পূর্ব পাশে শায়িত আছেন সিরাজের ভ্রাতা মির্জা মেহেদি, যাঁকে সিরাজের মতোই নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছিল।[১]

আলীবর্দীর সমাধি

ইতিহাস সম্পাদনা

আলীবর্দী খা ৮০ বছর বয়সে ১৭৫৬ সালের ১০ এপ্রিল (৯ রজব, ১১৬৯ হি.) তারিখে মারা যান এবং খুশবাগের (আনন্দ উদ্যান) বাইরে দেয়াল ঘেরা আঙ্গিনার মধ্যে তার মায়ের কবরের কাছে একটি আবদ্ধ উঁচু ভিতের মধ্যে তাকে সমাহিত করা হয়। নওয়াব সিরাজউদ্দৌলা এ স্থানে আলীবর্দী এবং তার পরিবারবর্গের জন্য একটি সমাধিসৌধ নিমার্ণ করেন। ফলে খুশবাগের পরিধি বৃদ্ধি পায়। তার শবদেহ পূর্বের কবর থেকে তুলে এনে বর্তমান কবরে সমাহিত করা হয়। চমকপ্রদ এ বাগান কমপ্লেক্সটি তিনটি দেয়াল ঘেরা আঙ্গিনার সমন্বয়ে তৈরি। মাঝের দেয়াল ঘেরা আঙ্গিনাটিতে সমাধিসৌধটি অবস্থিত, যা আলীবর্দী খান, তার দৌহিত্র সিরাজউদ্দৌলা এবং তাদের পরিবারের প্রধান ব্যক্তিবর্গের কবর ধারণ করে আছে।[২]

সমাধিটি ইটের তৈরী, যার মধ্যে খুব কমই রয়েছে প্রাচ্যের স্থাপত্যিক অবয়ব। এর চারকোণে নির্মিত চারটি ছোট মিনার এবং অভিক্ষিপ্ত ছাঁইচ বাদ দিলে এটি ব্রিটিশ রীতির বাংলোর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। সমাধিটি বর্গাকৃতির, সমান্তরাল ছাদ বিশিষ্ট ইমারত এবং ভূমি স্তর থেকে ২ ফুট উঁচুতে অবস্থিত, এবং পূর্ব ও পশ্চিম দিকের দুটি ছোট সিঁড়ি দিয়ে উপরে পৌঁছানো যায়। এ ছাড়া সমাধিটির খিলান দ্বারা নির্মিত বারান্দা পরিবেষ্টিত প্রত্যেক দিকে পাঁচটি করে খিলান পথ রয়েছে, এরপরই মাঝখানে একটি বর্গাকৃতি কক্ষের অবস্থান, যা আলীবর্দী খানের কবরকে ধারণ করে আছে। এ সমাধির অভ্যন্তরভাগের স্থাপনা ঢাকার পরিবিবির সমাধির হুবহু অনুরূপ বলেই মনে হয়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা