আব্রাহাম বেন মর্ডচাই ফেরিসোল (ইংরেজি: Abraham ben Mordecai Farissol) (১৪৫১- ১৫২৫ বা ১৫২৬) ছিলেন একজন ইহুদি-ইতালীয় ভূগোলবিদ, কসমোগ্রাফার, লেখক এবং তার্কিক। তিনিই ছিলেন প্রথম হিব্রু লেখক যিনি সদ্য আবিষ্কৃত আমেরিকা নিয়ে বিশদ আলোচনা করেছিলেন।

আব্রাহাম বেন মর্ডচাই ফেরিসোল
স্থানীয় নাম
אברהם בן מרדכי פריצול
জন্ম১৪৫১
মৃত্যু১৫২৫ বা ১৫২৬
অ্যাভিগন, পবিত্র রোম সাম্রাজ্য
ভাষাহিব্রু

জীবনী সম্পাদনা

ফেরিসোল রোমান সাম্রাজ্যের অ্যাভিগনে জন্মগ্রহণ করেন, যেখানে তার পরিবার অন্তত এক শতাব্দী বসবাস করে আসছিল।[১] ১৪৬৮ সালের তিনি মান্টুয়ায় চলে যান, যেখানে তিনি জুদাহ মেসের লিওনের সাথে লেখক হিসাবে কাজ করেছিলেন।[২] ১৪৭৩ সালে তিনি ফেরারায় চলে যান, সেখানে তিনি ইহুদি উপাসনালয়ে হাজ্জান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।

উল্লেখযোগ্য কাজ সম্পাদনা

মহিলাদের প্রার্থনা বই সম্পাদনা

১৪৭১ এবং ১৪৮০ সালে ফেরিসোল মহিলাদের প্রার্থনা বিষয়ক দুটি বই প্রকাশ করেছিলেন। এর মধ্যে 'বীরকোট হাশচর' উল্লেখযোগ্য যেখানে তিনি মহিলাদের প্রার্থনার প্রথাগত আবৃত্তির ধরনের পরিবর্তন এনেছিলেন। বইটি ১৯৭৩ সালে ইসরাইলের জাতীয় গ্রন্থাগারে দান করা হয়েছে।[৩]

বাইবেলের ব্যাখ্যা এবং অনুবাদ সম্পাদনা

ফেরিসোল 'পিরি শোষণানিম' বা গোলাপ ফুল শিরোনামে ইহুদীদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ তাওরাতের একটি সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা লিখেছিলেন। তিনি এরিস্টটলের 'যুক্তিবিদ্যা' নামক বইটি হিব্রু ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন এবং দার্শনিক পোর্ফাইরিও সংকলন অনুবাদ করেছিলেন।[৪] এছাড়াও ১৪৬৮ এবং ১৪৭৪ দিকে লেখা তার কিছু চিঠি ও ধর্মোপদেশমূলক বক্তৃতা পাওয়া যায়।

মাগেন আব্রাহাম সম্পাদনা

তিনি 'মাগেন আব্রাহাম' শিরোনামে তিন খণ্ড বিশিষ্ট মধ্যযুগীয় ইহুদি পোলিমিকস এবং প্রার্থনা গ্রন্থ রচনা করেছেন যার দ্বিতীয় খণ্ড ছিল খ্রিস্ট ধর্মের বিরুদ্ধে এবং তৃতীয় খণ্ড ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে।

ইগেরেট অরোট 'ওলাম সম্পাদনা

তাঁর লেখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ত্রিশ খণ্ডে বিভক্ত মহাজাগতিক এবং ভৌগোলিক গবেষণামূলক গ্রন্থ 'ইগেরেট অরোট 'ওলাম'[৫] গ্রন্থটির প্রতিটি অধ্যায়ে তিনি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চল বা বিষয় নিয়ে কাজ করে এবং বহু মহাজাগতিক ও ঐতিহাসিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা ও আলোচনা করেছেন।[৬] বইটিতে বিশ্বের সদ্য আবিষ্কৃত বিভিন্ন অংশ, ভারতে যাতায়াতের নতুন পর্তুগিজ সমুদ্রপথ, উপজাতি এবং বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ইহুদিদের অবস্থার বিবরণ রয়েছে। এতে আমেরিকার আদিবাসীদের যৌনচর্চা, সামাজিক সংগঠন, সম্পত্তির অভাব, স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য বিষয়ের বর্ণনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Bernardini, Paolo; Fiering, Norman (২০০১-০৩-০১)। The Jews and the Expansion of Europe to the West, 1450-1800 (ইংরেজি ভাষায়)। Berghahn Books। আইএসবিএন 978-1-78238-976-7 
  2. Zonta, Mauro (২০০৬)। Hebrew Scholasticism in the Fifteenth Century: A History and Source Book। Springer Science & Business Media। পৃষ্ঠা 209। আইএসবিএন 978-1-4020-3715-3 
  3. Borschel-Dan, Amanda (৮ মার্চ ২০১৯)। "The Jewish egalitarian revolution that almost was in Renaissance Italy"The Times of Israel। সংগ্রহের তারিখ ৮ মার্চ ২০১৯ 
  4. Patai, Raphael (১৯৯৬)। The Jewish Mind। Wayne State University Press। পৃষ্ঠা 170। আইএসবিএন 0-8143-2651-X 
  5. "FARISSOL (PERIZOL), ABRAHAM BEN MORDECAI - JewishEncyclopedia.com"www.jewishencyclopedia.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-১২ 
  6. Abrahams, Israel (২০০৪)। Chapters on Jewish Literature (ইংরেজি ভাষায়)। Library of Alexandria। আইএসবিএন 978-1-61310-749-2