আবাশিরি কারাগার (জাপানি: 網走刑務所, হেপবার্ন: Abashiri Keimusho) হল হোক্কাইদো প্রশাসনিক অঞ্চলের অন্তর্গত আবাশিরি শহরে ১৮৯০ সালে চালু হওয়া একটি কারাগার। এট জাপানের উত্তর সীমায় আবাশিরি নদীর কাছে এবং টেন্টো পর্বতের পূর্বদিকে অবস্থিত। এখানে দশ বছরের কম সাজাপ্রাপ্ত কয়েদিদের রাখা হয়।[১] কারাগারের পুরোনো অংশকে ১৯৮৩ সালে টেন্টো পর্বতের পদমূলে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল, সেখানে সেটি দেশের একমাত্র কারাগার যাদুঘর হিসাবে কাজ করে।

আবাশিরি কারাগার
মানচিত্র
অবস্থানআবাশিরি, হোক্কাইদো প্রশাসনিক অঞ্চল, জাপান
স্থানাঙ্ক৪৪°০′৫৯.৭″ উত্তর ১৪৪°১৩′৫১.৮″ পূর্ব / ৪৪.০১৬৫৮৩° উত্তর ১৪৪.২৩১০৫৬° পূর্ব / 44.016583; 144.231056
অবস্থাসক্রিয়
খোলা হয়১৮৯০
ব্যবস্থাপকবিচার মন্ত্রণালয়

ইতিহাস সম্পাদনা

১৮৯০ সালের এপ্রিল মাসে, মেইজি সরকার এক হাজারেরও বেশি রাজনৈতিক বন্দিকে জনহীন আবাশিরি গ্রামে পাঠায় এবং আরও জনবহুল দক্ষিণের সাথে সংযোগকারী রাস্তা তৈরি করতে বাধ্য করে।[২] প্রথমদিকে অবস্থা অত্যন্ত কঠোর ছিল, যথেষ্ট পরিমানে খাবার ছিলনা এবং আবাসিকেরা পর্যাপ্ত বিশ্রামের সুযোগ পায়নি। এছাড়াও অনেকেই পালানোর চেষ্টা করেছিল। পালানোর চেষ্টা করার শাস্তি হিসাবে এবং তার সঙ্গে অপুষ্টি ও দুর্ঘটনায় ২০০ জনেরও বেশি বন্দী মারা গিয়েছিল।[৩] আবাশিরি কারাগারটি পরবর্তীতে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ কৃষি কারাগার হিসেবে পরিচিতি লাভ করে এবং সমগ্র জাপান জুড়ে অন্যদের জন্য একটি মডেল হিসেবে উল্লেখ করা হতে থাকে।[২][৪]

১৯০৯ সালের আগুনে কারাগারের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে গিয়েছিল, কিন্তু ১৯১২ সালে এটির পুনর্গঠন করা হয়।[৪] আগে এর নাম ছিল আবাশিরি কাঙ্গোকু (網走監獄), ১৯২২ সাল থেকে এটির বর্তমান নাম চালু হয়েছে। ১৯৮৪ সালে, কারাগারটিকে পিলার দ্বারা নির্মিত আধুনিক কংক্রিট কমপ্লেক্সে স্থানান্তরিত করা হয়।[২]

১৯৬৫ সালে নির্মিত আবাশিরি কারাগার চলচ্চিত্র এবং তার পরিশিষ্টগুলির কারণে, কারাগারটি একটি জনপ্রিয় পর্যটক আকর্ষণে পরিণত হয়েছিল।[২] কারাগারটি তার বন্দীদের দ্বারা খোদাই করা কাঠের নিপোপো (ニポポ) পুতুলের জন্যও পরিচিত।[৫]

২০১০ সালের জুন মাসে আবাশিরি কারাগার।

যাদুঘর সম্পাদনা

 
আসল কারাগারের অভ্যন্তরে, আবাশিরি কারাগারের জাদুঘরে গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক সম্পত্তি

১৯৮৩ সালে, কারাগারের পুরোনো অংশগুলিকে টেন্টো পর্বতের পদমূলে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল, সেখানে সেটি এখন যাদুঘর হিসাবে কাজ করে। এর নাম এখন আবাশিরি কারাগার যাদুঘর (博物館網走監獄)। এটি এই দেশের একমাত্র কারাগার যাদুঘর[২] ২০১৬ সালের হিসেব অনুযায়ী, জাদুঘরে সংরক্ষিত ভবনগুলির মধ্যে আটটি ভবন সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা কর্তৃক গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক সম্পত্তি মনোনীত হয়েছে[৪][৫] এবং তিনটিকে অধিগম্য সাংস্কৃতিক সম্পত্তি হিসেবে নিবন্ধিত করা হয়েছে।

উল্লেখযোগ্য কয়েদি সম্পাদনা

কল্পকাহিনীতে সম্পাদনা

১৯৬৫ সালে নির্মিত আবাশিরি কারাগার চলচ্চিত্রটি কারাগারের বৈশিষ্ট্যযুক্ত ইয়াকুজা চলচ্চিত্রের একটি জনপ্রিয় সিরিজের জন্ম দিয়েছিল।

২০১২ সালে ভিডিও গেম ইয়াকুজা ৫, প্রধান চরিত্রগুলির মধ্যে একজন, তাইগা সেজিমা, আবাশিরি কারাগার থেকে পালিয়ে হোক্কাইদো পাহাড়ের গভীরে একটি গ্রামে চলে গিয়েছিল।

দ্য ব্ল্যাকলিস্ট সিরিজের ২০১৪ সালের পর্ব "মাকো তানিদা"তে, পর্বের শিরোনামযুক্ত ইয়াকুজা সর্দার আবাশিরি কারাগার থেকে পালিয়ে গিয়েছিল।

রুশ–জাপান যুদ্ধের কিছু পরেই তৈরি হওয়া, ২০১৪ মাঙ্গা সিরিজ গোল্ডেন কামুয়তে, আবাশিরি কারাগারে একটি অভিযানকে এর অন্যতম প্রধান একটি পটভূমি হিসাবে দেখানো হয়েছে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Inmates in Hokkaido raise beef cattle to learn about value of life"The Japan Times। ২০১৫-০৬-২৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-০৭ 
  2. "Abashiri astounds with its ice and convict connections"The Japan Times। ২০১৩-০৩-২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-০৭ 
  3. "Abashiri Prison Museum | Japan Experience" 
  4. "道内の文化財を訪ねて 旧網走監獄 静かに光差す舎房 /北海道" (Japanese ভাষায়)। Mainichi Shimbun। ২০১৬-০৬-১২। ২০১৮-০৩-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-০৭ 
  5. "国の重要文化財指定へ!事務局長に聞く「博物館網走監獄」の楽しみ方" (Japanese ভাষায়)। Hokkaido Relations, Inc.। ২০১৫-১২-২৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-০৭ 
  6. Schreiber, Mark (২০১৮-০৫-০৫)। "News outlets quick to fall in love with prison break coverage"The Japan Times। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-১৩ 
  7. Mitchell, Richard H. (১৯৯২)। Janus-Faced Justice: Political Criminals in Imperial JapanUniversity of Hawaii Press। পৃষ্ঠা 93। আইএসবিএন 9780824814106। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-১৩ 
  8. Ishikawa, Machiko। "Writing the Sense of Loss in the Inner Self: A Narrative of Nakagami Kenji and Nagayama Norioin Late 1960s Tokyo" (পিডিএফ)Australian National University। পৃষ্ঠা 5। ২০২২-০৩-২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-১৩ 
  9. Simonović, B. (২০১৬-০৪-২৬)। "Pol i Hiroši, braća po ocu Ličaninu" (Bosnian ভাষায়)। Vesti। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-১৩ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা