আদেল মাহমুদ (২৪ আগস্ট ১৯৪১ – ১১ জুন ২০১৮) একজন মিশরীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান চিকিৎসক ও সংক্রামক রোগের একজন বিশেষজ্ঞ। মার্ক ভ্যাক্সিনের সভাপতি থাকা অবস্থায় তিনি গারডাসিল এইচপিভি টিকারটোভাইরাস টিকার উন্নতি ঘটান। সেখান থেকে অবসর নেয়ার পর তিনি , প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হন

আদেল মাহমুদ
২০০৮ এ বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ে আদেল মাহমুদ
জন্ম(১৯৪১-০৮-২৪)২৪ আগস্ট ১৯৪১
কায়রো, মিশর
মৃত্যু১১ জুন ২০১৮(2018-06-11) (বয়স ৭৬)
নিউ ইয়র্ক শহর, যুক্তরাষ্ট্র
জাতীয়তামিশরীয়, মার্কিনী
পরিচিতির কারণএইচপিভিরটোভাইরাস টিকার উন্নয়নের জন্য

জীবনী সম্পাদনা

মাহমুদ জন্মগ্রহণ করেন ২৪ আগস্ট, ১৯৪১ এ কায়রো, মিশরে। তার বাবা আব্দেল ফাত্তাহ মাহমুদ কৃষিবিদ ছিলেন। আদেলের ১০ বছর বয়সে তিনি নিউমোনিয়াতে মারা যান। আদেল পেনিসিলিন ঔষুধ কিনতে পাঠানো হয়; কিন্তু সে আসতে আসতে তার পিতা মারা যান। যা আদেলকে প্রভাবিত করেছিল।[১] মাহমুদ , কায়রো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৩ সালে স্নাতক অর্জন করেন।[২] তার মা ফাতিহা ওসমান মেডিকেল স্কুলে পড়ার সুযোগ পেলেও ফাতিহার ভাই নিষেধ করেছিলেন। কারণ তিনি মনে করেছিলেন নারীর চিকিৎসক হওয়া উচিত নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন মাহমুদ সক্রিয়ভাবে রাজনীতি অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি জামাল আবদেল নাসের এর রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেছিলেন। পরবর্তীতে রাজনৈতিক পরিবেশ পরিবর্তন হলে তিনি পড়াশুনার জন্য যুক্তরাজ্য স্থানান্তরিত হন। তিনি ১৯৭১ সালে লন্ডন স্কুল অব হাইজিন থেকে পিএইচডি অর্জন করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি অভিবাসী হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসেন ও পোস্ট ডক্টোরাল গবেষক হিসেবে ক্লিভল্যান্ডের কেস ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগদান করেন। পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালে মেডিসিন বিভাগের প্রধান হন।

১৯৮৮ সালে মার্ক অ্যান্ড কোং. মাহমুদকে ভ্যাকসিন বিভাগের সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত করেন। পদে নিযুক্ত থাকা অবস্থায় তিনি এইচপিভি টিকা ও রোটাভাইরাস টিকার প্রভূত উন্নয়ন করেন। এর পূর্বে প্রচুর সংখ্যক শিশু ডায়রিয়াজনিত রোগে মারা যেত। রোটাভাইরাস টিকার উন্নয়ন এই মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস করে। তিনিই প্রথম এসভ টিকাকে সফলভাবে বাজারে এনে বিক্রির ব্যবস্থা করেন।

মার্ক থেকে ২০০৬ সালে অবসর নেয়ার পর মাহমুদ ২০০৭ এ প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় এর উড্রো উইলসন স্কুল অব পাবলিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স এর নীতি বিশ্লেষক এর ভূমিকা পালন করেন ও ২০১১ সালে প্রিন্সটন এর আণবিক জীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হন।

১১ জুন, ২০১৮ তে মাহমুদ নিউ ইয়র্ক শহরের মাউন্ট সিনাই সেন্ট হাসপাতালে মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ এর কারণে মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। তার মৃত্যুতে মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস তার টুইটার অ্যাকাউন্টে শোকবার্তা দেন। তিনি বলেন, "বলার অপেক্ষা রাখে না, আমাদের সময়ের অন্যতম সেরা ভ্যাকসিন নির্মাতাকে বিশ্ব হারিয়েছে। ড. আদিল মাহমুদ এর ভ্যাকসিন অগণিত শিশুর জীবন রক্ষা করেছে।"[৩]

পরিবার সম্পাদনা

মাহমুদের সাথে ড. স্যলী হুডারের ১৯৭৬ সালে সাক্ষাৎ হয়। স্যালো নিজেও একজন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ। তারা উভয়েই ১৯৯৩ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তারা জ্যায় থ্রন্টন নামে একজন পুত্রকে দত্তক নেন। [১]

মাহমুদের অলফ্যাত আব্দেল ফাত্তাহ নামে একজন বোন ও মাহমুদ আব্দেল ফাত্তাহ নামে একজন ভাই ছিল। তারা দুজনেই চিকিৎসক। [১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Grady, Denise (জুন ১৯, ২০১৮)। "Dr. Adel Mahmoud, Who Was Credited With HPV and Rotavirus Vaccines, Dies at 76"The New York Times। সংগ্রহের তারিখ জুন ২১, ২০১৮ 
  2. "Adel Mahmoud, global health leader and Princeton faculty member, dies at 76"Princeton University। জুন ১৩, ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ জুন ২১, ২০১৮ 
  3. "Who is Dr. Adel Mahmoud, the man the world lost this month?"Egypt Today। সংগ্রহের তারিখ জুন ২৩, ২০১৮