আজিজা আল-ইউসেফ
আজিজা আল-ইউসেফ একজন সৌদি আরবের নারী অধিকারকর্মী এবং শিক্ষাবিদ।[৩] সৌদি কর্তৃপক্ষ তাকে ২০১৮ সালের মে মাসে লুজাইন আল-হাথলুল এবং আরও পাঁচজনের সাথে আটক করে। তিনি সৌদি আরবে নারীদের গাড়ি চালনা, পুরুষতান্ত্রিক অভিভাবকত্ব ব্যবস্থা ও নারী ও শিশুদের পারিবারিক সহিংসতার বিরুদ্ধে আন্দোলন ও বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। নারী অধিকার আদায়ে সরব থাকায় সৌদি সরকার তাকে ২০১৮ সালের মে মাসে গ্রেপ্তার এবং নভেম্বর পর্যন্ত, তাকে দৃশ্যত ধাহবান কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী করে রেখেছিল।[৪]
আজিজা আল ইউসেফ | |
---|---|
জন্ম | ১৯৫৭ বা ১৯৫৮ (৬৬–৬৭ বছর)[১] |
মাতৃশিক্ষায়তন | বাদশাহ সৌদ বিশ্ববিদ্যালয় ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | অবসরপ্রাপ্ত 'কম্পিউটার বিজ্ঞান' অধ্যাপক[২] |
পরিচিতির কারণ | নারী অধিকার (মহিলাদের গাড়ি চালনা, পুরুষদের অধীনে অভিভাবকত্ব) কর্মী [১] |
সন্তান | ৫[১] |
শিক্ষা ও পেশা
সম্পাদনাআজিজা আল-ইউসেফ ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গমনের আগে কিশোর বয়সে বাদশা সৌদ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বল্পকালীন ছাত্রী ছিলেন। ভার্জিনিয়া থেকে ফিরে তিনি বাদশা সৌদ বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।[৫] তিনি বাদশা সৌদ বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপনা করতেন। অধ্যাপক হিসেবে অবসরে যাওয়ার পূর্বে এইবিভাগে ২৮ বছর পড়িয়েছেন।[৬]
নারী অধিকার কার্যক্রম (২০১৩-২০১৮)
সম্পাদনা২০১৩ সালে, আজিজা তার সহকর্মী ইমান আল-নাফজানের সাথে রিয়াদে নিজেরাই গাড়ি চালানোর জন্য গ্রেপ্তার হন। গ্রেপ্তারের পর 'তারা আর কখনো নিজে গাড়ি চালাবেন না'-এই শর্তে মুচলেকা দিতে হয়েছিল।[৭] একইবছর তিনি একজন সৌদি আলেম কর্তৃক তার ৫ বছরের মেয়েকে ধর্ষণের পর বিশ্বব্যাপী সচেতনতা অভিযান শুরু করেন।[৬]
২০১৬ সালে, তিনি সৌদি আরবে পুরুষ অভিভাবকত্ব ব্যবস্থার বিরুদ্ধে একটি অভিযানে নেতৃত্ব দিতে সাহায্য করেছিলেন।[২] তিনি সৌদি আরবের "রাজকীয় উপদেষ্টা পরিষদের কাছে ১৪৭০০ নাগরিক স্বাক্ষর সম্বলিত আবেদন করে অভিভাবকত্ব বিধি বাতিল করার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু তাকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল আবেদনটি চিঠির মাধ্যমে প্রেরণ করতে বলা হয়েছিল।"[৫]
২০১৮-বর্তমান
সম্পাদনা২০১৮ সালের ১৫ থেকে ১৮ মে-এর মধ্যে সৌদি কর্তৃপক্ষ আজিজা আল-ইউসেফকে লুজাইন আল-হাথলুল, ইমান আল-নাফজান, আয়েশা আল-মানা, মাদেহা আল-আজরুশসহ দুইজন নারী অধিকার আন্দোলনের সাথে জড়িত ব্যক্তিকে আটক ও বন্দী করে।[৮][৯][১০] হিউম্যান রাইটস ওয়াচ গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যকে ভীতকর হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে- "যে কেউ যুবরাজের অধিকার কর্মসূচি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছে"।[১১] সৌদি কর্তৃপক্ষ গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে "বিদেশী দলের সাথে সন্দেহজনক যোগাযোগ", "বিদেশে বৈরী উপাদানগুলিকে" আর্থিক সহায়তা প্রদান এবং এধরনের সন্দেহজনক কাজে সরকারি কর্মী নিয়োগের অভিযোগ করেছে।[১২] ২০১৮ সালের নভেম্বর পর্যন্ত, তিনি দৃশ্যত ধাহবান কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী ছিলেন। ২০১৯ সালের মার্চের শেষের দিকে, ঐ কারাগারে বন্দি মহিলারা তাদের নিজেদের নিরাপত্তার অবস্থা এবং বন্দী অবস্থায় তাদের সহ্য করা শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের বর্ণনা দেন। এঘটনার পর তিনি আরো দুই নারী অধিকারকর্মী ইমান আল-নাফজান এবং চিকিৎসক রোকায়া মোহারেবের সাথে জামিনে মুক্তি পান।[১৩]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ Fahim, Kareem (২০১৮-০৬-২৩)। "Meet the Saudi women who advocated for the right to drive — and are paying dearly for it"। The Washington Post। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৬-২৩।
- ↑ ক খ Sidahmed, Mazin (২০১৬-০৯-২৬)। "Thousands of Saudis sign petition to end male guardianship of women"। the Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২০।
- ↑ Burke, Jason (১৭ জুন ২০১১)। "Saudi Arabia women test driving ban"। The Guardian। ১৯ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০১১।
- ↑ "Saudi Arabia: Reports of torture and sexual harassment of detained activists"। www.amnesty.org (ইংরেজি ভাষায়)। Amnesty International। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ ক খ "A conversation with Saudi women's rights advocate Aziza al-Yousef | Rob L. Wagner | AW"। AW (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২০।
- ↑ ক খ Fahim, Kareem (২০১৮-০৬-২৩)। "Meet the Saudi women who advocated for the right to drive — and are paying dearly for it"। Washington Post (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0190-8286। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৬-২৫।
- ↑ Usher, Sebastian (২০১৩-১১-২৯)। "Saudi female driver defies ban"। BBC News (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২০।
- ↑ Female activists detained ahead of Saudi driving ban reversal, 20th May, The National
- ↑ Saudi Arabia arrests female activists weeks before lifting of driving ban, By Sarah El Sirgany and Hilary Clarke, May 21, 2018, CNN
- ↑ "Saudi Arabia 'arrests women's rights activists'"। Al Jazeera English। ১৯ মে ২০১৮। ১৯ মে ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মে ২০১৮।
- ↑ "Saudi Arabia: Women's Rights Advocates Arrested — Jumping Ahead of Crown Prince's Reforms Risks Jail Time"। Human Rights Watch। ১৮ মে ২০১৮। ১৯ মে ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মে ২০১৮।
- ↑ "Saudis detain women's advocates ahead of driving ban lift"। ArabianBusiness.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২০।
- ↑ Michaelson, Ruth (২০১৯-০৩-২৮)। "Saudi Arabia bails three women on trial for human rights activism"। the Guardian। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৩-২৮।