আগোস্তিনো ভেসপুচ্চি
আগোস্তিনো ভেসপুচ্চি ছিলেন একজন ফ্লোরেন্সীয় চ্যান্সেলারি কর্মকর্তা ও কেরানি। পাশাপাশি তিনি ছিলেন ইতালীয় নাট্যকার নিক্কোলো মাকিয়াভেল্লির সহকারিদের মধ্যে অন্যতম।[৩] তিনি লিওনার্দো দা ভিঞ্চির বিখ্যাত মোনা লিসার চিত্রকর্মে অঙ্কিত নারীকে লিসা দেল জোকোন্দো হিসেবে নিশ্চিত করতে পরোক্ষ সাহায্য করার জন্য সর্বাধিক পরিচিত।[৪] তাছাড়াও তিনি বেশ কয়েকটি টিকে থাকা চিঠি ও পাণ্ডুলিপির লেখক।[৫]
আগোস্তিনো ভেসপুচ্চি | |
---|---|
জাতীয়তা | ইতালীয় |
অন্যান্য নাম | আগোস্তিনুস মাথেই ভেসপুচ্চি[১] |
পেশা | সরকারি কেরানি |
আত্মীয় | আমেরিগো ভেসপুচ্চি (চাচাতো ভাই)[২] |
মোনা লিসা
সম্পাদনালিওনার্দোর মোনা লিসা সম্পর্কে সমসাময়িক নিষ্পত্তিমূলক তথ্যের অভাবের কারণে চিত্রকর্মটিতে অঙ্কিত নারীর পরিচয় নিশ্চিত করা কঠিন ছিল। ২০০৫ সালে সিসারোর এপিস্তউলেই আদ ফামিলিয়ারেস (লাতিন: Epistulae ad Familiares, আত্মীয়দের চিঠি) বইটির ১৪৭৭ সালের সংস্করণের ডান মার্জিনে ভেসপুচ্চির লেখা একটি মন্তব্য হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার থেকে আবিষ্কারের পর এই অবস্থার পরিবর্তন হয়। ড. আরমিন শ্লেচার লাইব্রেরিতে একটি ইনকুনাবুলা (মুদ্রণশিল্পের প্রাথমিক পর্যায়ে মুদ্রিত বই) প্রদর্শনীর জন্য বইয়ের তালিকা প্রস্তুত করার সময় এই আবিষ্কার করেছিলেন।[৪]
নোটের সংক্ষিপ্ত ল্যাটিন পাঠ্যটি নিম্নরূপ: Apelles pictor. Ita Leonardus Vincius facit in omnibus suis picturis, ut enim caput Lise del Giocondo et Anne matris virginis. Videbimus, quid faciet de aula magni consilii, de qua re convenit iam cum vexillifero. 1503 octobris. [৫] (বাংলা: "চিত্রকর আপেলিস। লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি তার সমস্ত চিত্রকর্মে এমনটিই করেছেন; উদাহরণস্বরূপ, লিসা দেল জোকোন্দো এবং কুমারী মাতা অ্যানের মাথার অংশে।[ক] আমরা দেখতে পাব যে তিনি মহা কাউন্সিলের হল সম্পর্কে কী করবেন, যে সম্পর্কে তিনি ইতোমধ্যে গোনফালোনিয়েরের সাথে একমত হয়েছেন। অক্টোবর ১৫০৩।")[৭]
এই মন্তব্যে ভেসপুচি লিওনার্দো এবং বিখ্যাত প্রাচীন গ্রিক চিত্রশিল্পী আপেলিসের শৈলীর মধ্যে একটি সাদৃশ্য উল্লেখ করেছেন। উভয় শিল্পীই বাকি চিত্রকর্মের কাজ করার আগে প্রথমেই খুবই বিশদে বিষয়বস্তুর মাথা ও কাঁধ এঁকে নিতেন। একটি উদাহরণ হিসাবে ভেসপুচ্চি লিওনার্দোর "লিসা দেল জোকোন্দো"র প্রতিকৃতিতে কাজ তালিকাভুক্ত করার পাশাপাশি মন্তব্যে "অক্টোবর ১৫০৩" তারিখ দিয়েছেন। নাম ও তারিখের অন্তর্ভুক্তি শিল্প-ইতিহাসবিদ জর্জিও ভাসারির লিখিত ১৫৫০ সালে প্রকাশিত উৎসের বৈধতা নিশ্চিত করে। ভাসারির এই লেখাটি পরবর্তীতে বেশ পরিচিত হলেও প্রায়ই অবিশ্বস্ত হিসেবে বিবেচিত হতো। ভাসারি লিখেছিলেন এই সময়ের মধ্যে লিওনার্দো তার স্ত্রী, "মোনা লিসা" আঁকার জন্য ফ্রান্সেসকো দেল জোকোন্দোর কাছ থেকে কমিশন নিয়েছিলেন।[৮] এখানে "মোনা" শব্দটি কোনও নাম হিসাবে নয়, বরং, "কুমারি নারী'র ইতালীয় সাহিত্য রূপ "ম্যাডোনা"র (Madonna) একটি সংক্ষিপ্তরূপ হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে।[৯]
টীকা
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Schlechter, Armin (২০০৮-০৪-২৯), "Ita Leonardus Vincius facit in omnibus suis picturis", IASL Online (জার্মান ভাষায়), আইএসএসএন 1612-0442, সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৭-০৫
- ↑ "The 'Heidelberg Document'"। The Mona Lisa Foundation (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১২-০৯-১১। ১ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-৩০।
- ↑ Viroli, Maurizio (২০০৫)। "Introduction"। The Prince। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা x। আইএসবিএন 0-19-280426-X।
- ↑ ক খ "Mona Lisa – Heidelberg discovery confirms identity"। হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার। হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০৮। ২০১১-০৫-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৭-০৫।
- ↑ ক খ Probst, Veit। "Rätselhafte Mona Lisa"। হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার (জার্মান ভাষায়)। হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৭-০৫।
- ↑ Burke, Jill (২০০৮)। "Agostino Vespucci's Marginal Note about Leonardo da Vinci in Heidelberg."। Leonardo da Vinci Society Newsletter (ইংরেজি ভাষায়) (30): 4 – Academia.edu-এর মাধ্যমে।
- ↑ According to the German translation given on Probst, Veit। "Rätselhafte Mona Lisa"। হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার (জার্মান ভাষায়)। হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়। ৭ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৫-২৫।
- ↑ Probst, Veit। "Rätselhafte Mona Lisa"। হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার (জার্মান ভাষায়)। হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৭-০৫।
- ↑ Nicholl, Charles (২৮ মার্চ ২০০২)। "The myth of the Mona Lisa"। The Guardian। UK। সেপ্টেম্বর ৫, ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুন ২০১১।