অ্যাবা

সুইডিশ পপ সঙ্গীত ব্যান্ড

অ্যাবা (ইংরেজি: ABBA) হচ্ছে একটি সুইডিশ পপ সঙ্গীত ব্যান্ড। ১৯৭২ সালে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্যান্ডটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যরা ছিলেন আনি-ফ্রিদ ‘ফ্রিদা’ লিংস্তা, বিয়োর্ন উলভিউস, বেনি আন্দারসন এবং আগনেথা ফেলৎসকোগ। তাদের সৃষ্ট গানগুলো জনপ্রিয় গানের ইতিহাসে বাণিজ্যিকভাবে অন্যতম সফল গানগুলোর অন্তর্ভুক্ত। ১৯৭২ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী টপচার্টগুলোতে তাদের গানগুলোই শীর্ষ অবস্থান করতো। এখন পর্যন্ত (প্রেক্ষিত ২০০৮) বিশ্বব্যাপী অ্যাবার রেকর্ডগুলোর প্রায় ৩০ কোটি ৭৫ লক্ষ কপিরও বেশি বিক্রি হয়েছে,[১][২] যা তাদেরকে রেকর্ডেড সঙ্গীতের ইতিহাসের চতুর্থ বৃহত্তম বিক্রিত জনপ্রিয় সঙ্গীত গোষ্ঠী হিসেবে পরিণত করেছে। বর্তমানেও (প্রেক্ষিত ২০০৮) প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী তাদের রেকর্ড বিশ থেকে ত্রিশ লক্ষ কপি করে বিক্রি হয়।[৩] অ্যাবা হচ্ছে প্রথম ব্যান্ড যার সদস্যরা অ-ইংরেজিভাষী দেশ থেকে এলেও যথেষ্ট সাফল্য ও প্রভাবের সাথে ইংরেজিভাষী দেশগুলোর টপচার্টে অবস্থান করেছে। যেসকল ইংরেজিভাষী দেশের টপচার্টে অ্যাবা অবস্থান করেছে তার মধ্যে ছিলো - যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, আয়ারল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড। এছাড়াও মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, কলম্বিয়া, পেরু ও অন্যান্য অ-ইংরেজিভাষী দেশগুলোর টপচার্টেও অ্যাবা অবস্থান করেছে। ইংরেজি ছাড়াও অ্যাবা স্পেনীশ ভাষায় তাদের গানের সংস্করণ বের করেছিলো—গ্রাসিয়াস পর লা মিউসিকা নামক এই অ্যালবামটি ছিলো অ্যাবার সবচেয়ে জনপ্রিয় গানগুলোর স্পেনীয়ভাষী সংষ্করণ।

১৯৭৪ সালে অ্যাবা; বাঁ থেকে ডানে — বেনি আন্দারসন, আনি-ফ্রিদ লিংস্তা, আগনেতা ফেলৎসকুগ, ও বিয়োর্ন উলভিউস।
১৯৭৪ সালে অ্যাবা; বাঁ থেকে ডানে — বেনি আন্দারসন, আনি-ফ্রিদ লিংস্তা, আগনেতা ফেলৎসকুগ, ও বিয়োর্ন উলভিউস।
প্রাথমিক তথ্য
উপনাম
  • আগনেথা
  • বিয়োর্ন
  • বেনি
  • আনি-ফ্রিদ
উদ্ভবস্টকহোম, সুইডেন
ধরনপপ, রক, ডিসকো, ইউরোপপ, সিন্থপপ
কার্যকাল
  • ১৯৭২—১৯৮২,
  • ২০১৬—বর্তমান
লেবেলপোলার (সুইডেন)
পোলিডর (জার্মানি/নেদারল্যান্ডস)
আটলান্টিক (যুক্তরাষ্ট্র/কানাডা)
ইউনিভার্সাল (যুক্তরাষ্ট্র)
এপিক (যুক্তরাজ্য/ইতালি)
ভোগ (ফ্রান্স)
ডিস্কোম্যাট
আরসিএ (অস্ট্রেলিয়া/দক্ষিণ আমেরিকা/মেক্সিকো)
পলিগ্রাম
কার্নাবি
সানশাইন (রোডেশিয়া-জিম্বাবুয়ে)
অ্যারিস্টন/ডিগ ইট (ইতালি)
দলছুটহেপ স্টারস, হুটেন্যানি সিংগারস
প্রাক্তন
সদস্য
ওয়েবসাইটabbasite.com

ব্যান্ডে থাকাকালীন সময় ফেলৎসকোগ ও উলভিউস ছিলেন বিবাহিত দম্পতি, পরে লিংস্তা এবং আন্দারসনও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। যদিও পরবর্তীকালে উভয় দম্পতির মধ্যেই বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকাকালীন অবস্থায় উভয় দম্পতিকেই যথেষ্ট চাপ সহ্য করতে হচ্ছিলো, যার ফলশ্রুতিতে ১৯৭৯ সালে, প্রথমে উলভিউস-ফেলৎসকোগ দম্পতির মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে, এবং দুই বছর পরে ১৯৮১ সালে আন্দারসন-লিংস্তা দম্পতির মধ্যেও বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। ১৯৭০-এর দশকের শেষ দিক থেকে ১৯৮০-এর দশকের শুরুর দিক পর্যন্ত নিজেদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের প্রভাব দলটির গানের মধ্যেও বিরাজমান ছিলো, ফলে বিভিন্ন সুরে বিভিন্ন অন্তঃদর্শন সম্বন্ধীয় গানের কথা সৃষ্টি হয়েছিলো।

অ্যাবা ভেঙে যাওয়ার পর আন্দারসন ও উলভিউস মঞ্চের জন্য গান লেখায় নিজেদের নিয়োজিত করেন এবং সেখানেও সাফল্য অর্জন করেন। অপরদিকে লিংস্তা ও ফেলৎসকোগ পৃথকভাবে একক সঙ্গীতে নিজেরা সাফল্য লাভ করেন। বিভিন্ন চলচ্চিত্রেও অ্যাবার গান যথেষ্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মুরিয়েল’স ওয়েডিং এবং অ্যাডভেঞ্চারস অফ প্রিসিলা, কুইন অফ দ্য ডেজার্ট। ১৯৯৯ সালে অ্যাবা’র গানগুলো নিয়ে ব্যবসাসফল গীতিনাট্য মামা মিয়া! তৈরি হয়, এবং এর বিশ্বব্যাপী সফরে অ্যাবা’র জনপ্রিয় গানগুলো পরিবেশিত হয়। পরবর্তীতে এই সাফল্যের রেশ ধরে ২০০৮ সালে এই গীতিনাট্যটির চলচ্চিত্র সংস্করণও মুক্তি পায়। সেটি ছিলো ঐ বছরে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র। ২০১০ সালে ১৫ মার্চ ব্যান্ড দলটি দ্য রক অ্যান্ড রোল হল অফ ফেইম-এ স্থান পায়।[৪]

ডিসকোগ্রাফি সম্পাদনা

গ্রন্থপঞ্জি সম্পাদনা

  • ওল্ডহ্যাম, অ্যান্ড্রু, ক্যাল্ডার, টনি, এবং আরভিন, কলিন (১৯৯৫)। অ্যাবা: দ্য নেম অফ দ্য গেম", আইএসবিএন ০-২৮৩-০৬২৩২-০।
  • পটিজ, জঁ-মারি (২০০০)। অ্যাবা – দ্য বুক, আইএসবিএন ১-৮৫৪১০-৯২৮-৬।
  • পাম, কার্ল ম্যাগণাস (২০০২)। ব্রাইট লাইটস ডার্ক শ্যাডোস: দ্য রয়্যাল স্টোরি অফ অ্যাবা, আইএসবিএন ০-৭১১৯-৯১৯৪-৪।
  • পাম, কার্ল জসলিন (২০০৪)। ফ্রম “অ্যাবা” টু “মামা মিয়া”, আইএসবিএন ১-৮৫২২৭-৮৬৪-১।

টীকা সম্পাদনা

  1. Amol Rajan। "Former ABBA drummer found dead in garden"msnbc। ২৪ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুলাই ২০০৮ 
  2. Sherwin, Adam (১৯ এপ্রিল ২০০৬)। "Its Abba on the phone making a lot more money money money"The Times। London। 
  3. "ABBA drummer found dead in pool of blood"The Local। ১৭ মার্চ ২০০৮। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মার্চ ২০০৮Despite having broken up a quarter of a century ago, the group still sells between two and four million albums a year. 
  4. "ABBA makes Rock and Roll Hall of Fame Los Angeles Times 16 December 2009"। Latimes.com। ১৬ ডিসেম্বর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১০ 

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা