অশোক সেন
অশোক সেন (জন্ম ১৯৫৬) একজন ভারতীয় বাঙালি তাত্ত্বিক পদার্থবিদ এবং এলাহাবাদের হরিশ-চন্দ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটে বিশিষ্ট অধ্যাপক।[২] তিনি এমআইটি'তে মর্নিংস্টার ভিজিটিং প্রফেসর এবং কোরিয়া ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডির একজন বিশিষ্ট অধ্যাপক। তার কাজের প্রধান ক্ষেত্রটি হল স্ট্রিং তত্ত্ব। তিনি "সমস্ত স্ট্রিং তত্ত্বগুলি একই অন্তর্নিহিত তত্ত্বের পৃথক সীমা" এই উপলব্ধির পথ উন্মুক্ত করার জন্য তিনি মৌলিক পদার্থবিজ্ঞান পুরস্কার অর্জন করেন।
অশোক সেন | |
---|---|
জন্ম | |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
নাগরিকত্ব | ভারত |
মাতৃশিক্ষায়তন | |
পরিচিতির কারণ | স্ট্রিং ক্ষেত্র তত্ত্ব এস-দ্বৈত সেন অনুমান |
দাম্পত্য সঙ্গী | সুমথি রাও |
পুরস্কার |
|
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যা |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | ফার্মিল্যাব স্ট্যানফোর্ড লিনিয়ার এক্সিলারেটর সেন্টার টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ হরিশ-চন্দ্র রিসার্চ ইনস্টিটিউট |
ডক্টরাল উপদেষ্টা | জর্জ স্টারম্যান |
ওয়েবসাইট | www |
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাতিনি ১৫ জুলাই ১৯৫৬ কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।[৩] অনিল কুমার সেন এবং গৌরী সেনের জ্যেষ্ঠ পুত্র তিনি। অনিল কুমার সেন স্কটিশ চার্চ কলেজের পদার্থবিদ্যার একজন প্রাক্তন অধ্যাপক এবং গৌরী সেন হলেন একজন গৃহিণী।[৪]
কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুল এবং শৈলেন্দ্র সরকার বিদ্যালয় থেকে তার বিদ্যালয়ের পঠন-পাঠন শেষ করেন। অশোক সেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত প্রেসিডেন্সি কলেজ (বর্তমানে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিত) থেকে ১৯৭৫ সালে স্নাতক এবং এক বছর পরে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি কানপুর থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। প্রেসিডেন্সি কলেজে তার স্নাতক গবেষণা সময় তিনি ব্যাপকভাবে অমল কুমার রায়চৌধুরী কাজ এবং শিক্ষা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়। তিনি স্টোনি ব্রুক বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যায় তার ডক্টরেট সম্পূর্ণ করেন।
পেশা
সম্পাদনাআশোক সেন স্ট্রিং তত্ত্ব বিষয়ে বেশ কয়েকটি মূল অবদান রেখেছেন, তার মধ্যে শক্তিশালী-দুর্বল সংযোজন দ্বৈত বা এস-দ্বৈত সম্পর্কিত তার ল্যান্ডমার্ক গবেষণা পত্র,[৫] যা গবেষণার ক্ষেত্রটি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ছিল। তিনি অস্থির ডি-ব্রাঞ্চগুলির অধ্যয়নের জন্য অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেন এবং এই জাতীয় ব্রাঞ্চগুলিতে খোলা স্ট্রিং ট্যাচিয়ন কনডেনসেশন সম্পর্কে বিখ্যাত সেন অনুমান নামে এক থিয়োরি প্রদান করেন।[৬] টোলিয়ন রোলিং[৭] সম্পর্কে তার বর্ণনা স্ট্রিং সৃষ্টিতত্বের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি স্ট্রিং ক্ষেত্র তত্ত্ব সম্পর্কিত অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাপত্র রচনা করেন। ১৯৯৯ সালে তিনি তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং কর্তৃক মনোনীত হয়ে রয়্যাল সোসাইটির ফেলোশিপ অর্জন করেন।[২] এছাড়াও তার অবদানগুলির মধ্যে রয়েছে এক্সট্রিমাল ব্ল্যাক হোলের জন্য এন্ট্রপি ক্রিয়ার আনুষ্ঠানিকতা এবং এটি আকর্ষণকারীদের কাছে প্রয়োগ। তার সাম্প্রতিক গুরুত্বপূর্ণ কাজের মধ্যে রয়েছে আকর্ষক প্রক্রিয়া এবং ব্ল্যাক হোলের মাইক্রোস্টেটগুলির যথাযথ গণনা এবং নতুন করে স্ট্রিং পার্টনিউথিউড তত্ত্বের উন্নয়ন। তিনি সম্মানিত সহযোগী হিসাবে ভারতের ভুবনেশ্বর, জাতীয় বিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (এনআইএসইআর)-এ যোগদান করেছেন।[৮]
সম্মান ও পুরস্কার
সম্পাদনাঅশোক সেন বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পুরস্কার পেয়েছেন। যার মধ্যে ২০১২ সালের ‘ফান্ডামেন্টাল ফিজিক্স প্রাইজ’ অন্যতম। এর আর্থিক মূল্য ছিল ৩ মিলিয়ন ডলার। ‘ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর থিওরিটিক্যাল ফিজিক্স’ ১৯৮৯ সালে তাকে প্রদান করে ‘আইসিটিপি প্রাইজ’। এখন তিনি ওই সংস্থার ‘সায়েন্টিফিক কাউন্সিল’-এর অন্যতম সদস্য।[১]
ইতালির ত্রিয়েস্ত শহরে আব্দুস সালাম ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর থিওরিটিকাল ফিজিক্স (আইসিটিপি) ২০১৪ সালে অশোক সেনের সঙ্গে আরও দুই বিজ্ঞানী আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্ড্রু স্ট্রমিংগার এবং সুইৎজারল্যান্ডে সার্ন গবেষণাগারের গ্যাব্রিয়েল ভেনেজিয়ানো'কে ‘ডিরাক পদক’কে পুরস্কৃত করে।[১]
এছাড়াও তিনি দেশ-বিদেশের বহু পুরস্কারে ভূষিত হেয়েছন। ভারত সরকার তাকে দিয়েছে পদ্মভূষণ।
- মৌলিক পদার্থবিজ্ঞান পুরস্কার, ২০১২, স্ট্রিং ফিল্ড তত্ত্বে কাজ এর জন্য। [৯][১০]
- ডক্টর অব সাইয়েন্স (হোনরিস কাউসা), ২০০৯, আইআইটি খড়গপুর দ্বারা ভূষিত
- রয়েল সোসাইটিএর সদস্য ১৯৯৮
- পদ্মশ্রী ২০০১
- শান্তি স্বরূপ ভাটনাগর পুরস্কার ১৯৯৪
- আইসিটিপি পুরস্কার, ১৯৮৯[১১]
- পদ্মভূষণ ২০১৩ [১২]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ "বিজ্ঞানী অশোক সেন সম্মানিত"। আনন্দবাজার পত্রিকা। ৯ আগস্ট ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- ↑ ক খ Pulakkat, Hari (১৯ ডিসেম্বর ২০১৩)। "How many of us know about Breakthrough Prize winner, Ashoke Sen?"। The Economic Times। সংগ্রহের তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- ↑ "Fellow Profile — Sen, Prof. Ashoke"। Indian Academy of Sciences। Bangalore: Indian Academy of Sciences। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০১৬।
- ↑ Miudur, G.S. (২ আগস্ট ২০১২)। "Physicist with pillow power"। সংগ্রহের তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- ↑ "Dyon — monopole bound states, selfdual harmonic forms on the multi — monopole moduli space, and SL(2,Z) invariance in string theory"। Phys. Lett.। B329: 217–221। ১৯৯৪। arXiv:hep-th/9402032 । ডিওআই:10.1016/0370-2693(94)90763-3। বিবকোড:1994PhLB..329..217S।
- ↑ "Tachyon condensation on the brane antibrane system"। JHEP। 8: 012। ১৯৯৮। arXiv:hep-th/9805170 । ডিওআই:10.1088/1126-6708/1998/08/012। বিবকোড:1998JHEP...08..012S।
- ↑ "Rolling Tachyon"। JHEP। 4: 048। ২০০২। arXiv:hep-th/0203211 । ডিওআই:10.1088/1126-6708/2002/04/048। বিবকোড:2002JHEP...04..048S।
- ↑ "School of Physical Sciences"। National Institute of Science Education and Research। সংগ্রহের তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- ↑ New annual US$3 million Fundamental Physics Prize recognizes transformative advances in the field ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ আগস্ট ২০১২ তারিখে, FPP, accesed 1 August 2012
- ↑ http://economictimes.indiatimes.com/news/politics/nation/indian-scientist-ashoke-sen-bags-top-physics-honour/articleshow/15322177.cms
- ↑ "Infosys Prize 2009 Mathematical Sciences"। ১৭ নভেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ এপ্রিল ২০১৩।
- ↑ "Rajesh Khanna, Sridevi, Mary Kom, Rahul Dravid on Padma list"। Times of India। TNN। জানু ২৬, ২০১৩।