অরুনা শানবাগ মামলা

(অরুণা শানবাগ মামলা থেকে পুনর্নির্দেশিত)

অরুনা রামচন্দ্র শানবাগ (১ জুন ১৯৪৮ - ১৮ মে ২০১৫), একজন ভারতীয় নার্স ছিলেন, যিনি যৌন নিপীড়নের ফলে প্রায় ৪২ বছর কোমায় ছিলেন এবং তাঁর নিকটজনের কাছ থেকে আদালতে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করে মামলা করা হয়েছিল, এতে তিনি মনোযোগের কেন্দ্রে চলে এসেছিলেন।[১]

১৯৭৩ সালে, মুম্বাইয়ের পারেলের কিং এডওয়ার্ড মেমোরিয়াল হাসপাতালে জুনিয়র নার্স হিসেবে কাজ করার সময়, শানবাগ একজন ওয়ার্ড বয় সোহানলাল ভার্থা ওয়ালমিকি দ্বারা যৌন নিপীড়নের শিকার হন এবং হামলার পর কোমায় চলে যান।[২] সুপ্রিম কোর্টে পরোক্ষে অরুণার স্বেচ্ছামৃত্যুর আর্জি জানান সাংবাদিক ও সমাজকর্মী পিঙ্কি বিরানি। তাঁর আর্জি ছিল, যে জীবনদায়ী ব্যবস্থার মাধ্যমে অরুণাকে কৃত্রিম ভাবে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে, তা তুলে নিয়ে অরুণার মৃত্যুকে ত্বরান্বিত করা হোক। কিন্তু হাসপাতালের ডাক্তার, নার্সরা পিঙ্কির সেই আর্জির তীব্র বিরোধিতা করেন। তার প্রেক্ষিতে ২০১১ সালের ২৪ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট পিঙ্কির আর্জি খারিজ করে দেয়। তবে শীর্ষ আদালত তখন এও বলেছিল, পিঙ্কি যা চাইছেন, তার জন্য হাসপাতালের কর্মীদের রাজি হতে হবে।[৩][৪]

তিনি প্রায় ৪২ বছর ধরে কোমায় থাকার পর ২০১৫ সালের ১৮ই মে নিউমোনিয়ায় মারা যান।[১][৫][৬]

ভুক্তভুগী সম্পাদনা

অরুণা শানবাগ ১৯৪৮ সালে কর্ণাটকের উত্তর কন্নড়ের হলদিপুরে জন্মগ্রহণ করেন।[৭][৮][৯] তিনি মুম্বাইয়ের কিং এডওয়ার্ড মেমোরিয়াল হাসপাতালে (কেইএম) নার্স হিসেবে কাজ নিযুক্ত ছিলেন। হামলার সময়, তিনি একই হাসপাতালে নিযুক্ত একজন ডাক্তারের সাথে সম্পর্কে জড়িত ছিলেন। [১০]

আক্রমণ সম্পাদনা

তৎকালীন ২৫ বছর বয়সী শানবাগ ১৯৭৩ সালের ২৭ নভেম্বর রাতে কিংস এডওয়ার্ড মেমোরিয়াল হাসপাতালে চুক্তিভিত্তিক কর্মী সোহানলাল ভরতা ওয়ালমিকি দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হন। সোহানলাল তার উপর হামলা চালায়, যখন শানবাগ হাসপাতালের বেসমেন্টে কাপড় পরিবর্তন করছিলেন। তিনি তাকে একটি কুকুরের চেইন দিয়ে শ্বাসরোধ করেন এবং ধর্ষণ করেন। এই ঘটনার ফলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়, যার ফলে মস্তিষ্কের স্টেম সংকোচন, সার্ভিকাল কর্ড ইনজুরি এবং কর্টিক্যাল ব্লাইন্ডনেস হয়। পরদিন সকাল ৭:৪৫ টায় একজন ক্লিনার তাকে দেখতে পায়।[১১]

অপরাধী সম্পাদনা

সোহানলাল ধরা পড়েন এবং হামলা ও ডাকাতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন এবং তিনি সাত বছরের কারাদণ্ড ভোগ করে ১৯৮০ সালে মুক্তি পান। তাকে ধর্ষণ, যৌন শ্লীলতাহানি বা অপ্রাকৃত যৌন অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়নি, ফলে তাকে শেষ পর্যন্ত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দণ্ডিত করা সম্ভব হয়নি।[১২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Aruna Shanbaug: Brain-damaged India nurse dies 42 years after rape"BBC News। BBC। ১৮ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০১৫ 
  2. Malavika Karlekar। https://web.archive.org/web/20150523142405/http://www.outlookindia.com/article/ten-minutes-to-hell/205787। ২৩ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০১৫  |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
  3. "৪২ বছর মৃত্যুশয্যায়, রেহাই পাননি অরুণা"। www.anandabazar.com। আনন্দবাজার পত্রিকা। ০৯ মার্চ ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  4. "India joins select nations in legalising "passive euthanasia""The Hindu। ৭ মার্চ ২০১১। ১১ মার্চ ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ মার্চ ২০১১ 
  5. "Raped Indian nurse dies after 42 years in coma"The Guardian। Associated Press। ১৯ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০১৫ 
  6. "1973 Sexual Assault Victim Aruna Shanbaug passes away in Mumbai"। news.biharprabha.com। ১৮ মে ২০১৫। ১৮ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০১৫ 
  7. "KEM nurses, dean celebrate Aruna Shanbaug's birthday"Hindustan Times। ২ জুন ২০১১। ১৮ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০১৫ 
  8. "KEM Hospital celebrates Aruna Shanbaug's 64th birthday"The Times of India। ২ জুন ২০১২। ১০ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০১৫ 
  9. "KEM celebrates Aruna Shanbaug's 65th birthday"DNA India। ২ জুন ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০১৫ 
  10. "Rebirth for Aruna, say joyous Mumbai hospital staff"Deccan Herald। ৭ মার্চ ২০১১। ২৮ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ মার্চ ২০১১ 
  11. "Aruna Ramchandra Shanbaug v. Union Of India [2011 (4) SCC 454] (Euthanasia case)"1, Law Street। Supreme Court of India। ৭ মার্চ ২০১১। ১৯ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০১৫ 
  12. "Indian Penal Code Section 377"Indian Kanoon। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২০