অমর গঙ্গোপাধ্যায়
অমর গঙ্গোপাধ্যায় (৩০ নভেম্বর ১৯২৮ — ৫ এপ্রিল ২০০০) ছিলেন বাংলা নাট্যমঞ্চের বিশিষ্ট অভিনেতা।[১] পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমির দীনবন্ধু পুরস্কারে সম্মানিত নাট্য ব্যক্তিত্ব বহুদিন কলকাতার বহুরূপীর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং বাংলা নাটকের উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব শম্ভু মিত্র, খালেদ চৌধুরীর প্রমুখের সঙ্গে কাজ করেছেন।
অমর গঙ্গোপাধ্যায় | |
---|---|
জন্ম | দানাপুর, বিহার, ব্রিটিশ ভারত | ৩০ নভেম্বর ১৯২৮
মৃত্যু | ৫ এপ্রিল ২০০০ | (বয়স ৭১)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পেশা | নাট্য অভিনেতা ও পরিচালক |
পুরস্কার | দীনবন্ধু পুরস্কার (১৯৯৬) |
জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবনসম্পাদনা
অমর গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম বৃটিশ ভারতের অধুনা বিহার রাজ্যের দানাপুর রেল কলোনিতে। পিতা ভৈরবচন্দ্র গঙ্গোপাধ্যায়ও ছিলেন একজন অভিনেতা। পিতার কাছে তিনি অভিনয় ও আবৃত্তি শেখেন। স্কুল কলেজে পড়ার সময় অভিনয় করা ছাড়াও তিনি শৌখিন নাট্যদলে 'চন্দ্রগুপ্ত', 'পণ্ডিতমশায়', 'খ্যাতির বিড়ম্বনা' প্রভৃতি নাটকে অভিনয় করেন।
কর্মজীবনসম্পাদনা
কলকাতার রঙ্গমঞ্চে অভিনয় করার ইচ্ছায় তিনি ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে বাড়ি ছাড়েন এবং সামান্য বেতনের একটা চাকরি জুটিয়ে কলকাতায় থেকে যান। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে অভিনয়ের সূত্রেই প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ কলিম শরাফীর মাধ্যমে বহুরূপীর শম্ভু মিত্রর সঙ্গে পরিচয় হয়। ক্রমে বহুরূপী'র সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত হয়ে পড়েন এবং সব নাটকে বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেন।
উল্লেখযোগ্য নাটক ও চরিত্রসম্পাদনা
নাটক | চরিত্র |
---|---|
ছেঁড়া তার | মামুদ |
চার অধ্যায় | ইন্দ্রনাথ |
উলুখাগড়া | খেলো |
দশচক্র | অমলেন্দু গুহ |
রক্তকরবী | সর্দার |
ডাকঘর | মোড়ল |
পুতুলখেলা | কেষ্টপদ |
মুক্তধারা | হুব্বা |
বিসর্জন | রঘুপতি |
গ্যালিলিও | গ্যালিলিও |
রাজা অয়দিপাউস | তাইরেসিয়াস |
রাজা | কাঞ্চীরাজ |
মহারাজানন্দ | রাজদর্শন |
ধর্মাধর্ম | দুর্যোধন |
অমর গঙ্গোপাধ্যায় 'মানিক', 'শুভবিবাহ', 'কাঞ্চনরঙ্গ', 'আতঙ্ক' প্রভৃতি ছায়াছবিতে এবং দূরদর্শনের 'দিনান্তের আলো' ধারাবাহিক ও 'সুন্দর' নাটকে অভিনয় করে প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে বহুরূপীর অন্তর্কলহে বিরক্ত হয়ে অন্যত্র চাকরি নিয়ে কলকাতা ছেড়ে চলে যান। পরে ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে অবশ্য পুনরায় কলকাতায় ফিরে আসেন এবং বহুরূপীর সভাপতি, সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদাধিকারীর পদে থেকে তিনি অভিনয় শিক্ষার ক্লাশে শিক্ষাদানের কাজ করেছেন। ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি বহুরূপী তথা নাট্যজগৎ থেকে স্বেচ্ছাবসর নেন কিন্তু নাট্যজগৎের কলাকুশলী ও নতুন প্রজন্মের সকলের সঙ্গে আমৃত্যু গভীর সম্পর্ক বজায় রেখেছেন।
সম্মাননাসম্পাদনা
১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাডেমি দীনবন্ধু পুরস্কারে ও ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে প্রবীণ নাট্যব্যক্তিত্ব হিসাবে সম্বর্ধিত করে।
জীবনাবসানসম্পাদনা
অমর গঙ্গোপাধ্যায় ২০০০ খ্রিস্টাব্দের ৫ ই এপ্রিল কলকাতায় প্রয়াত হন।
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, দ্বিতীয় খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, জানুয়ারি ২০১৯ পৃষ্ঠা ২০,২১ আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-২৯২-৬