অমরেশ্বর ঠাকুর (১ ডিসেম্বর ১৮৮৭ - ২৪ জানুয়ারি ১৯৭৯)[১] একজন বাঙালি সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক এবং পণ্ডিত।

প্রাথমিক জীবন সম্পাদনা

অমরেশ্বর ঠাকুর বর্তমান মুন্সীগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরের ভাগ্যকুল ইউনিয়নের নাগরবন্দী গ্রামের ব্রাহ্মণ বংশের সন্তান। তিনি ১৮৮৭ সালের ১লা ডিসেম্বরে ত্রিপুরা রাজ্যের সভাপণ্ডিত মাতামহ কুলচন্দ্র শিরোমনির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা রামকৃষ্ণ ঠাকুর ছিলেন ভাগ্যকুলের কুণ্ডু জমিদার বংশের কুলপুরোহিত।

আর্থিক অসুবিধার মধ্যে থাকলেও প্রত্যেক পরীক্ষায় বৃত্তি পাওয়ায় তার পক্ষে পড়ালেখা করা সম্ভব হয়। ১৭ বছর বয়সে অমরেশ্বর কলকাতায় দাদার কাছে চলে যান। ১৯০৮ সালে সংস্কৃতে এম.এ পাস করে রিপন কলেজে অধ্যাপনার কাজ শুরু করেন। পরে পালি, দর্শনসংস্কৃতের অন্য একটি বিভাগে এম.এ পাস করেন এবং দু'বার স্বর্ণপদক পান। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পোস্টগ্রাজুয়েট শিক্ষাব ব্যবস্থা প্রবর্তিত হলে তিনি সংস্কৃত বিভাগে যোগ দেন। সুদীর্ঘ ৩৫ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃত বিভাগে অধ্যাপনা করে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে অবসর নেন। গবেষণা ও পাণ্ডিত্যের জন্য তিনি যোগেশ্চন্দ্র গবেষণা পুরস্কার পান।

১৯২৭ সালে হিন্দু ল' অব এভিডেন্সের উপর গবেষণা করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি.এইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করেন। পরে বেদান্তশাস্ত্রী উপাধিও লাভ করেন।

তিনি সংস্কৃত সাহিত্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা। ১০ বছর পরিশ্রমে যাস্কাঁচার্যের নিরুক্ত ৪ খণ্ডে প্রকাশ করেন। তার সম্পাদনা বাল্মীকির রামায়ণ ৪ খণ্ডে প্রকাশিত হয়। কলকাতা সংস্কৃত সিরিজের প্রায় ৪০টি গ্রন্থ টীকা ও অনুবাদ সহকারে প্রকাশ করেন। মম্মট ভট্টের কাব্য গ্রন্থের ইংরেজি ভূমিকা তার একটি বিশেষ অবদান। জৈন ধর্ম, দর্শন, ভিক্ষু সম্প্রদায়, থেরাপন্থী মহাসভা ও জৈন শ্বেতাম্বরদের বিষয়ে আলোচনামূলক বিভিন্ন প্রবন্ধ লিখেছেন।

১৯৭৯ সালের ২৪ জানুয়ারি তিনি কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "ঠাকুর, অমরেশ্বর - বাংলাপিডিয়া"bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-১০