১৯০৮ সালে বালিতে ওলন্দাজ হস্তক্ষেপ

১৯০৮ সালে বালিতে ওলন্দাজ হস্তক্ষেপ ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের উপর ওলন্দাজদের ঔপনিবেশিক নিয়ন্ত্রণের চূড়ান্ত পর্যায় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ১৯০৬ সালে বাল তে ওলন্দাজ হস্তক্ষেপের পর এটি বালিতে সপ্তম ও শেষ সামরিক হস্তক্ষেপ ছিল।

১৯০৮ সালে বালিতে ওলন্দাজ হস্তক্ষেপ
তারিখএপ্রিল ১৯০৮
অবস্থান
ফলাফল ওলন্দাজদের বিজয়
বিবাদমান পক্ষ
 নেদারল্যান্ডস বালীয় বিদ্রোহী
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী
নেদারল্যান্ডস মারিনাস বার্নার্ডাস রস্ট ভ্যান টোনিনজেন দেবা আগুং জাম্বে  
বাংলির রাজা  আত্মসমর্পণকারী
কারাঙ্গাসেমের রাজা  আত্মসমর্পণকারী
শক্তি
২৫০ ৭০০
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি
৬ জন নিহত
৫ জন আহত
১৯৪ জন মৃত
১৯০৮ সালে দেবা আগুং

আফিম চাষের একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার ও রীতিনীতি আরোপ করার জন্য ওলন্দাজেরা প্রচেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে বালীয়দের বিদ্রোহের দমনপীড়নের মাধ্যমে এই সামরিক হস্তক্ষেপের সূত্রপাত হয়েছিল৷[১] কারাঙ্গসেমের রাজা এই একচেটিয়া আধিপত্যের বিরোধিতা করেছিলেন, যার ফলে ক্লুংকুং-এর রাজধানীতে দাঙ্গা শুরু হয়। বালীয়রা একজন জাভাই আফিম ব্যবসায়ীকে হত্যা করলে গেলগেলেও দাঙ্গা শুরু হয়ে যায়।[২]

ওলন্দাজরা দাঙ্গা দমন করতে সৈন্য পাঠায়। গেলগেলে, তারা ১০০ জন বালীয়কে হত্যা করে ও সেখানকার রাজাকে ক্লুংকুং-এ পালিয়ে যেতে বাধ্য করে।[২] এর পর তার ক্লুংকুং শহরে বোমা হামলা চালায়।

১৯০৮ সালের ১৮ই এপ্রিল ক্লুংকুং-এর রাজা দেবা আগুং তার শেষ সম্মুখ সংঘর্ষে আরও ২০০ জন সৈন্যবল নিয়ে রাজপ্রাসাদ থেকে এক দুর্ধর্ষ হামলার ছক কষেন। সৈন্যরা সশস্ত্র সাদা বস্ত্রসজ্জায় সজ্জিত ছিলেন এবং হাতে ছিল কিংবদন্তি অনুযায়ী শত্রুদমনকারী কিরিচ[১] The Raja was shot by a Dutch bullet. Immediately, the six wives of the king resorted to ceremonial suicides, or puputan, killing themselves with their own kris, soon followed by the other Balinese in the procession.[২]

ওলন্দাজরা রাজপ্রাসাদে আগুন লাগিয়ে তা ধূলিসাৎ করেন। ক্লুংকুং ওলন্দাজদের ক্ষমতার অধীনে আসার পর গিয়ানিয়ার ও কারাঙ্গাসেমের মতো বাংলিও ১৯০৮ সালের অক্টোবর মাসে ওলন্দাজদের সাথে বোঝাপড়া করে তাদের সাম্রাজ্যের অংশীভূত হয়।[১] এই ঘটনার সাথে সাথে ওলন্দাজদের বালি বিজয় সম্পন্ন হয়।[১][২]

পরিণাম সম্পাদনা

১৯০৬ সাল এবং তার পর পরই ১৯০৮ সালে ওলন্দাজরা বালিদ্বীপে অভিযান চালিয়ে সমগ্র দ্বীপের ওপর নিজেদের আধিপত্য কায়েম করতে সক্ষম হয়।

ওলন্দাজদের আক্রমণ অবশ্য মিডিয়া বেশ গুরুত্ব নিয়ে সুচারুভাবে কভারেজ করে এবং বালি দ্বীপের দক্ষিণ অংশের রক্তাক্ত বিজয়ের খবর পশ্চিমা বিশ্বে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। অপরাধ এবং শাস্তিমূলক কর্মের কঠোরতার মধ্যে অসামঞ্জস্য আলাদা করে নির্দেশ করা হয়। এর ফলে নেদারল্যান্ডসের পূর্ব থেকে হওয়া কল্যাণকর এবং দায়িত্বশীল ঔপনিবেশিক শক্তির ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে।[৩]

জাভা, সুমাত্রা এবং তার পূর্বের দ্বীপগুলিতে নেদারল্যান্ডসএর নীতির জন্যও সমালোচনার মুখে পড়ে তারা তা সংশোধন করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং একটি নির্দিষ্ট "নৈতিক নীতি" প্রতিষ্ঠার কথা বলে।[৪] ফলস্বরূপ, বালিতে ওলন্দাজরা বালীয় সংস্কৃতির অধ্যয়ন করতে শুরু করে এবং এর রক্ষক হয়ে ওঠে। তারা প্রাথমিক স্তরের আধুনিকীকরণের ভূমিকা ছাড়াও এটিকে সংরক্ষণ করার চেষ্টা করে।[৪] বালি সংস্কৃতি সংরক্ষণ এবং এটিকে শাস্ত্রীয় সংস্কৃতির একটি "জীবন্ত যাদুঘর" করার প্রচেষ্টা করা হয়[৫] ও ১৯১৪ সালে বালিতে পর্যটন উন্মুক্ত করা হয়।[৬] ১৯০৬ এবং ১৯০৮ সালের বাহিনীর সামরিক আগ্রাসনের কঠোরতা এমনভাবে আন্তর্জাতিক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল যে ওলন্দাজরা চাপের মুখে বালির সংস্কৃতি সংরক্ষণে যথেষ্ট অবদানে রাখতে শুরু করে। দ্বীপটি আজ অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যে পরিণত হয়েছে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Bali and Lombok Lesley Reader, Lucy Ridout p.496
  2. Insight Guides Indonesia, p.40
  3. Michael Hitchcock; Nyoman Darma Putra (২০০৭)। Tourism, development and terrorism in Bali। পৃষ্ঠা 14। আইএসবিএন 0-7546-4866-4 
  4. Hanna, p.171
  5. Barski, p.49
  6. Barski, p.50