হোমা দারাবি (ফার্সি: هما دارابی; ১৯৪০–১৯৯৪) ছিলেন একজন ইরানি শিশু বিশেষজ্ঞ, ইরান নেশন পার্টির সাথে যুক্ত শিক্ষাবিদ এবং রাজনৈতিক কর্মী। তিনি বাধ্যতামূলক হিজাব রীতির বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিজের গায়ে আগুন লাগিয়েছিলেন। পরে এই কারণে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যুর হয়েছিল।

হোমা দারাবি
জন্ম১৯৪০
মৃত্যু২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৪(1994-02-22) (বয়স ৫৪)
তেহরান, ইরান
মৃত্যুর কারণআত্মদাহ
জাতীয়তা ইরানি
মাতৃশিক্ষায়তনতেহরান বিশ্ববিদ্যালয়
রাজনৈতিক দলইরান নেশন পার্টি[১]
আন্দোলননারীবাদ[২]
আত্মীয়পারভিন দারাবি (বোন)

জীবনী সম্পাদনা

দারাবি ১৯৪০ সালে তেহরানে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। [৩] উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়া শেষ করে তিনি ১৯৫৯ সালে তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল স্কুলে প্রবেশ করেন।[৪] ১৯৬০ সালে, ন্যাশনাল ফ্রন্টের পক্ষে একটি ছাত্র বিক্ষোভের আয়োজন করার জন্য তাঁকে আটক করা হয়েছিল।[২] তিনি ১৯৬৩ সালে নিজের সহপাঠী মনুছের কেহানীকে বিবাহ করেছিলেন।[৪] পড়াশোনা শেষ করার পর, তিনি উত্তর ইরানে অবস্থিত বাহমানি গ্রামে ডাক্তারি অনুশীলন করেছিলেন।[২] এরপরে আরও কিছু পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে দারাবি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন এবং সেখানে মনোবিজ্ঞানে শিশু বিশেষজ্ঞ ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।[৪] তিনি ১৯৭৬ সালে ইরানে ফিরে আসেন এবং তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে শিশু মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসাবে নিযুক্ত হন। এখানে তিনি আবার পাহলভী রাজবংশের বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠেন।[২] তিনি ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতেও (পরে শহীদ বেহেশতি বিশ্ববিদ্যালয় নামেও পরিচিত) অধ্যাপনা করেছিলেন।[৫]

১৯৯১ সালের ডিসেম্বরে "হিজাবের প্রতি আনুগত্য না দেখানোর জন্য" তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। ১৯৯৩ সালের মে মাসে বিচারসভা (ট্রাইব্যুনাল) এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেওয়া সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর অবস্থান তাঁকে ফিরিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানায়।[২]

মৃত্যু সম্পাদনা

এই ঘটনার পর প্রতিবাদের নিদর্শন হিসেবে, দারাবি ১৯৯৪ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি, তাজরিশের কাছাকাছি একটি জনবহুল রাস্তায়, নিজের মাথায় পেট্রল ঢেলে দিয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। তার আগে তিনি নিজের 'হিজাব' খুলে নিয়েছিলেন।[২][৫]

পরদিন একটি হাসপাতালে দগ্ধজনিত আঘাতে তিনি মারা যান।[১]

তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর বোন পারভিন দারাবি বলেছিলেন "ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানি নারীদের সাথে, বিশেষ করে শিক্ষিতদের সাথে যেভাবে আচরণ করছে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদমূলক কাজ হিসাবে আমার বোন তার নিজের জীবন শেষ করে দিয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই অবমাননাকর এবং এত বেদনাদায়ক এবং এতটাই ভীতিকর যে অনেক নারীই এর থেকে বেরিয়ে আসার কোনো উপায় অনুভব করেন না। ইরানি নারীদের মধ্যে সাধারণ অসন্তোষ বাড়ছে। আত্মহত্যার হার ব্যাপকভাবে বেড়েছে।"[৬]

আরও দেখুন সম্পাদনা

আরও পড়ুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Iranian woman in suicide protest", The Independent, ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৪, সংগ্রহের তারিখ ২০ মার্চ ২০২০, A prominent Iranian female academic, Homa Darabi, poured petrol over herself and set herself on fire to protest at the plight of her countrywomen, according to the Iranian Nation Party to which she belonged, writes Safa Haeri. She died of severe burns in a Tehran hospital on Tuesday. 
  2. Afshar, Haleh (১৯৯৮), "'Disempowerment' and the Politics of Civil Liberties for Iranian Women", Afshar, Haleh, Women and Empowerment: Illustrations from the Third World, Springer, পৃষ্ঠা 121–122, আইএসবিএন 978-0-333-71974-9, ডিওআই:10.1007/978-1-349-26265-6 
  3. Button, John (১৯৯৫), The Radicalism Handbook: Radical Activists, Groups and Movements of the Twentieth Century, ABC-CLIO, পৃষ্ঠা 134, আইএসবিএন 9780874368383 
  4. The Middle East: Abstracts and index, 21 (1), Northumberland Press, ১৯৯৮, পৃষ্ঠা 169 
  5. Wiles, Ellen (২০০৭), "Headscarves, Human Rights, and Harmonious Multicultural Society: Implications of the French Ban for Interpretations of Equality", Law & Society Review, 41 (3), জেস্টোর 4623399, ডিওআই:10.1111/j.1540-5893.2007.00318.x 
  6. "A Sacrificial Light: Self-Immolation in Tajrish Square, Tehran"। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১