হলুদ বিহার নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান।[১][২] এটি উপজেলার বিলাশবাড়ী ইউনিয়নের হলুদ বিহার গ্রামে অবস্থিত। হলুদ বিহার গ্রামে মূলতঃ চারটি ঢিবি থাকলেও বর্তমানে কেবল ১০০ ফুট ব্যাসের একটি মাত্র ঢিবি রয়েছে।

হলুদ বিহার
স্থানীয় নাম
ঢিবি
হলুদ বিহারের অবশিষ্ট
ধরনপ্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন
অবস্থানবদলগাছী উপজেলা
স্থানাঙ্ক২৪°৫৫′৫৬.৬৪″ উত্তর ৮৮°৫৮′১৭.০৪″ পূর্ব / ২৪.৯৩২৪০০০° উত্তর ৮৮.৯৭১৪০০০° পূর্ব / 24.9324000; 88.9714000
অঞ্চলনওগাঁ জেলা
পরিচালকবর্গবাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর
মালিকবাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর
সূত্র নংBD-E-48-26

হলুদ বিহার গ্রামটি স্থানীয়ভাবে দ্বীপগঞ্জ নামেও পরিচিত। ঢিবিগুলোও বিক্ষিপ্তভাবে ছড়ানো বেশ কিছু স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ দেখে ধারণা করা হয়ে থাকে, এই স্থানটিতে পূর্বে বৌদ্ধদের বসতি ছিল।[৩][৪]

ইতিহাস সম্পাদনা

বিভিন্ন সময় হলুদ বিহারে বেশ কয়েকজন প্রত্নতাত্ত্ববিদ ও সংস্থা ভ্রমণ করে এলাকাটি সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য দেন। ১৯৩০ বা ১৯৩১ সালে ভারতীয় প্রত্নতত্ববিদ জি.সি দত্ত ভারতের প্রত্নতত্ত্ব জরিপ বিভাগের অধীনে এলাকাটি পরিদর্শন করেন। তিনি তার রিপোর্টে উল্লেখ করেন, পুরো অঞ্চলটি পূর্ব থেকে পশ্চিমে ৬৪.৫ মিটার ও উত্তর থেকে দক্ষিণে ৪০.৫ মিটার এবং সংলগ্ন ভূমি হতে অঞ্চলটির উচ্চতা প্রায় ১০.৫ মিটার। এসময় গ্রামের একটি স্থান থেকে প্রায় ১ মিটার উঁচু একটি গণেশের ব্রোঞ্জ মূর্তি আবিষ্কৃত হয়। ধারণা করা হয়ে থাকে, মূর্তিটি ৮-৯ শতকের দিকে তৈরি।[৫]

প্রত্নতত্ত্ববিদ কাজী মোহাম্মদ মেছের তাঁর রাজশাহীর ইতিহাস নামীয় গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, হলুদ বিহার ডিবি থেকে ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে কালো পাথরের তৈরী একটি বুদ্ধ মূর্তি, কয়েকটি পোড়ামাটির চিত্রফলক এবং কিছু প্রাচীন মুদ্রা আবিষ্কৃত হয়েছিল। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এই এলাকাটিতে অনুসন্ধানের জন্য ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে প্রাক্তন সুপারিন্টেন্ডেন্ট হারুন-অর-রশীদকে প্রেরণ করেছিল। তিনিও তার প্রতিবেদনে এ অঞ্চলে প্রাচীন সভ্যতার বিভিন্ন ধ্বংসাবশেষ, পোড়ামাটির ফলক ও পাথরের ভাস্কর্য দেখতে পান বলে উল্লেখ করেন।[৬]

এরপর ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর স্থানটিকে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান হিসেবে নথিভুক্ত করে এবং ১৯৮৪ ও ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দে দুটি খননকার্য পরিচালনা করে।[৭]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা