স্যাভয়ের রাজকন্যা মারিয়া গ্যাব্রিয়েলা

স্যাভয়ের রাজকন্যা মারিয়া গ্যাব্রিয়েলা (মারিয়া গ্যাব্রিয়েলা জিউসেপা আল্ডগোন্দা অ্যাডিলেড লুডোভিকা ফ্যালিসিটা গেনারা ডি স্যাভয়; জন্ম ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৪০) ইতালির শেষ রাজা, দ্বিতীয় উম্বার্তো, ও "মে রানী" বেলজিয়ামের মেরি হোসের মধ্যম কন্যা, এবং তার বাবার সিংহাসনের দাবিদার রাজপুত্র ভেত্তোরিও ইমানুয়েল, নেপলসের যুবরাজের বোন। তিনি একজন ঐতিহাসিক লেখক।

স্যাভয়ের রাজকন্যা মারিয়া গ্যাব্রিয়েলা
স্যাভয়ের রাজকন্যা
১৯৬০ সালে মারিয়া গ্যাব্রিয়েলা
জন্ম (1940-02-24) ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৪০ (বয়স ৮৪)
নেপলস, ইতালি
দাম্পত্য সঙ্গীরবার্ট জেলিংগার ডি বেলকানি
(বি. ১৯৬৯; বিচ্ছেদ. ১৯৯০)
বংশধরমারি এলিজাবেথ জেলিংগার ডি বেলকানি
পূর্ণ নাম
মারিয়া গ্যাব্রিয়েলা জিউসেপা আল্ডগোন্দা অ্যাডিলেড লুডোভিকা ফ্যালিসিটা গেনারা ডি স্যাভয়
রাজবংশস্যাভয়
পিতাদ্বিতীয় উম্বার্তো
মাতাবেলজিয়ামের মেরি জোসে
পেশাঐতিহাসিক লেখক

প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা সম্পাদনা

 
১৯৬০-এর দশকে গ্যাব্রিয়েলা

মারিয়া গ্যাব্রিয়েলা ১৯৪০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইতালির নেপলসে জন্ম নেন। তিনি ইতালির শেষ রাজা, দ্বিতীয় উম্বার্তো এবং রানী বেলজিয়ামের মেরি জোসের দ্বিতীয় কন্যা এবং তৃতীয় সন্তান।[১] তার জ্যেষ্ঠ বোন রাজকন্যা মারিয়া পিয়াযুবরাজ ভেত্তোরিও ইমানুয়েল এবং কনিষ্ঠ বোন রাজকন্যা মারিয়া বিয়েতরিচ[২]

গ্যাব্রিয়েলার বাবা-মা ১৯৩০ সাল থেকে বিবাহিত জীবনযাপন করলেও এই দম্পতি একসাথে অসুখি ছিলেন, যেমনটা তার মা মেরি অনেক বছর পরে একটি সাক্ষাত্কারে স্বীকার করেন (On n'a jamais été heureux, "We were never happy")। ১৯৪৬ সালের গণভোটের মধ্য দিয়ে ইতালিয় রাজতন্ত্রের বিলুপ্তের পর এই দম্পতি পৃথক হন। নাৎসি বাহিনীর গ্রেপ্তার এড়াতে তার মা ইতালি থেকে গ্যাব্রিয়েলা এবং তার ভাইবোনদের সঙ্গে নিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিরপেক্ষ ভূমিকায় অবস্থান নেয়া সুইজারল্যান্ডে পালিয়ে যায়। ১৯৪৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৪৫ সালে ইতালিতে প্রত্যাবর্তন না হওয়া পর্যন্ত তারা সুইজারল্যান্ডে আশ্রয় নেয়, যখন গ্যাব্রিয়েলার পিতামহ রাজা তৃতীয় ভিক্টর ইমানুয়েলের রাজ্যে তার বাবা উম্বার্তো তৃতীয়বারের জন্য লেফটেন্যান্ট-জেনারেল নিযুক্ত হয়েছিলেন। রাজতন্ত্র পতনের পর নির্বাসিত পরিবারটি কিছৃ সময় পর্তুগালে আশ্রয় নিয়েছিল, সেখান থেকে গ্যাব্রিয়েলা তার ভাইবোন সহ মায়ের সঙ্গে সুইজারল্যান্ডে ফিরে আসে, আর তার বাবা পর্তুগিজ রিভিয়ারায় থেকে যান।[২] দুজনই ক্যাথলিক হবার কারণে তার বাবা-মা কখনো তালাকপ্রাপ্ত হন নি।

সুইজারল্যান্ডে শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি মারিয়া গ্যাব্রিয়েলা ফ্রান্সের প্যারিসের লুভ্‌র সংশ্লিস্ট একটি বিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছিলেন।[২] তার বাবার মৃত্যুর পর এবং তার ভাইয়ের অনুমোদনের সাথে, তিনি লোজানে রাজা দ্বিতীয় উম্বার্তো ফাউন্ডেশন চালু করেছিলেন, যা স্যাভয় রাজ্যের ইতিহাস ও উত্তরাধিকার সংরক্ষণের জন্য উৎসর্গিত ছিলো।[২] গ্যাব্রিয়েলা বহু সাংস্কৃতিক উপস্থাপনায় অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং ১৯৯২ অলিম্পিকের সময় আলবার্টভিলে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিলেন।[২] ২১ শতকের শুরুতে গ্যাব্রিয়েলা বেশিরভাগ বইয়ের সহ-লেখক ছিলেন, যার বেশিরভাগ স্টেফানো পাপির সঙ্গে।

ইরানের শাহের বিয়ের প্রস্তাব সম্পাদনা

১৯৫০-এর দশকে, সম্প্রতি তার দ্বিতীয় স্ত্রী সোরায়া এসফানদিয়ারি-বখতিয়ারি থেকে তালাকপ্রাপ্ত ইরানের পাহলভি রাজবংশের তৎকালীন শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভি রাজকন্যা মারিয়া গ্যাব্রিয়েলাকে বিয়ে করার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলনে। ত্রয়োবিংশ পোপ জন সে সময়ে এই প্রস্তাবের বিরোদিতা জানান। "একটি মুসলিম সার্বভৌম এবং একটি ক্যাথলিক রাজকন্যার" বিবাহের গুজব সম্পর্কে ভ্যাটিকান পত্রিকার সম্পাদকীয়তে ল'আসার্ভাতোরে রোমানো লিখেছিলেন যে, এই ম্যাচটি "একটি গুরুতর বিপদ" ঘটাবে।[৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Montgomery-Massingberd, Hugh. "Burke’s Royal Families of the World: Volume I Europe & Latin America, 1977, p. 367. আইএসবিএন ০-৮৫০১১-০২৩-৮
  2. de Badts de Cugnac, Chantal. Coutant de Saisseval, Guy. Le Petit Gotha. Nouvelle Imprimerie Laballery. Paris. 2002. pp. 620-621. (French) আইএসবিএন ২-৯৫০৭৯৭৪-৩-১
  3. Paul Hofmann, "Pope Bans Marriage of Princess to Shah", New York Times, 24 February 1959, p. 1.

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা