স্মৃতিশ বন্দ্যোপাধ্যায়

ভারতীয় বিপ্লবী

স্মৃতিশ বন্দ্যোপাধ্যায় (অক্টোবর, ১৯১০ - সেপ্টেম্বর ৩, ১৯৪৭) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব।সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রতারোধকল্পে কলকাতায় শান্তিমিছিল পরিচালনাকালে গুন্ডার ছুরিকাঘাতে নিহত শহিদ।[১]

স্মৃতিশ বন্দ্যোপাধ্যায়
শহীদ স্মৃতিশ ব্যানার্জী
জন্মঅক্টোবর ১৯১০
উত্তরপাড়া হুগলি ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ)
মৃত্যু৩ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭
জাতীয়তাভারতীয়
অন্যান্য নামস্মৃতিশ ব্যানার্জী
কর্মজীবনবিপ্লবী
উল্লেখযোগ্য কর্ম
 

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

স্মৃতিশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ব্রিটিশ ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার উত্তরপাড়ায়। পিতা শ্যামাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। আশুতোষ মুখোপাধ্যায় ছিলেন তার মাতামহ। উত্তরপাড়া ও কলকাতার ভবানীপুরে তার শিক্ষালাড। ভবানীপুরের সাউথ সুবার্বান স্কুল থেকে ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি ম্যাট্রিক পাশ করেন। স্কুলের ছাত্রবস্থাতেই তিনি বিপ্লবী আন্দোলনের সংস্পর্শে আসেন।

ক্রিয়াকলাপ সম্পাদনা

স্মৃতিশ উত্তরপাড়া কর্মীসংঘের অন্যতম সংগঠক ও কর্মী হিসাবে জনসেবার কাজ শুরু করেন। আরামবাগ ছাত্র আন্দোলন ও কৃষকদের খাজনা বন্ধের আন্দোলন পরিচালনা করার অপরাধে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে তিনি কারারুদ্ধ হন। মুক্তি পেয়ে ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে উত্তরপাড়া সন্নিহিত অনেক গ্রামে ৯-১০টি নৈশ বিদ্যালয় স্থাপন করেন।

সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বিদ্ধস্ত কলকাতা, ১লা সেপ্টেম্বর, ১৯৪৭, সােমবার-গান্ধীজি মৌনব্রত রেখেছেন, পরে ঠিক করলেন অনশন করবেন, যতদিন না এই অবস্থা ঠিক হয়, তিনি অনশন চালিয়ে যাবেন। ওই দিন, রাত দশ টা-বেলেঘাটার "হায়দারি ম্যানশন"-এর বাইরে এক গন্ডগােল দানা বাঁধছে। গান্ধীজি দরজার সামনে এসে উপস্থিত হলেন। একটা লাঠি, আরেকটা হঁটের টুকরাে তাঁকে লক্ষ্য করে ছোঁড়া হলে সেটি গিয়ে লাগে তাঁরই পাশে দাঁড়ানাে এক মুসলিম যুবকের গায়ে। তখনকার মতাে কোন মতে গন্ডগােল সামাল দেওয়া হয়।

মৃত্যু সম্পাদনা

৩রা সেপ্টেম্বর, ১৯৪৭, বুধবার শচীন্দ্রনাথ মিত্র ও স্মৃতিশ বন্দ্যোপাধ্যায়-এর নেতৃত্বে শহর জুড়ে এক ধর্মনিরপেক্ষ-শান্তি মিছিলের ডাক দেওয়া হয়। উদ্দেশ্য ছিল, শহরের ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষা ও শান্তি কায়েম করা। মুরগীহাটা-র কাছে শচীন্দ্রনাথ মিত্র ও পার্ক সার্কাস-এর কাছে স্মৃতিশ বন্দ্যোপাধ্যায় দাঙ্গাবাজদের হাতে নিহত হন ও গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন স্মৃতিশ বন্দ্যোপাধ্যাযের সতীর্থ সুশীল দাসগুপ্ত। ৫ দিন ভর্তি থাকার পর উনিও শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।[২]

৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ১৯৪৭—সুরাবর্দীর উপস্থিতিতে, প্রায় ৪০ জন হিন্দু-মুসলিম নেতৃবৃন্দর সাক্ষরিত শান্তির সনদ গান্ধীজির কাছে প্রেরণ করা হয়। গান্ধীজি তাঁর ৭৩ ঘন্টার অনশন ভঙ্গ করেন। [৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৮৩৯, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. "বইয়ের উৎস - উইকিপিডিয়া"bn.wikipedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০২-০১ 
  3. "জেলে ত্রিশ বছর"উইকিপিডিয়া। ২০১৯-১১-০৪।