স্বর্বেদ মহামন্দির

স্বর্বেদ বা সরবেদ মহামন্দির (সংস্কৃত: स्वर्वेद महामंदिर) ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের বারাণসী শহর থেকে বারো কিলোমিটার দূরে উমরাহাঁ'তে অবস্থিত। মন্দিরটি বিশ্বের বৃহত্তম ধ্যান কেন্দ্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই মন্দিরে কোন দেব-দেবীর অধিষ্ঠান নেই অর্থাৎ এখানে কোনও দেবতার পুজা-অর্চনা করা হয় না, শুধুমাত্র ধ্যানে অংশগ্রহণ করা হয়।[১]

স্বর্বেদ মহামন্দির
स्वर्वेद महामंदिर
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিহিন্দুধর্ম
জেলাবারাণসী
অবস্থান
অবস্থানউমরাহা বারাণসী উত্তরপ্রদেশ ভারত
দেশভারত
স্বর্বেদ মহামন্দির উত্তর প্রদেশ-এ অবস্থিত
স্বর্বেদ মহামন্দির
বারাণসীর যেখানে মন্দিরটি অবস্থিত
স্থানাঙ্ক২৫°১৮′৪০.৩৯″ উত্তর ৮৩°০′০৬.৯২″ পূর্ব / ২৫.৩১১২১৯৪° উত্তর ৮৩.০০১৯২২২° পূর্ব / 25.3112194; 83.0019222
স্থাপত্য
সৃষ্টিকারীশ্রীসদগুরু সদাফল দেও বিহঙ্গম যোগ সমাজ
ওয়েবসাইট
https://www.swarved-mahamandir.org/

ইতিহাস সম্পাদনা

 
অনন্ত শ্রী সদগুরু সদাফল দেও জী মহারাজ

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অমর যোদ্ধা অনন্ত শ্রী সদগুরু সদাফল দেও জী মহারাজ ছিলেন ঊনিশ শতকের এক আত্মিক বা আধ্যাত্মিক নেতা ও যোগসাধক এবং 'বিহঙ্গম যোগ'-এর মহান শ্রদ্ধেয় প্রতিষ্ঠাতা। 'বৃহত্তম বিহঙ্গম যোগ সমাজ' তথা সংস্থার শতবর্ষ উদযাপনের অঙ্গ হিসাবে স্বর্বেদ মহামন্দিরের পরিকল্পনা করা হয় এবং ২০০৪ খ্রিস্টাব্দে সদগুরু আচার্য স্বতন্ত্র দেব এবং সন্ত প্রভার বিজ্ঞান দেব মহামন্দিরের ভিত্তি স্থাপন করেন। দশ বৎসর পরে ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০২৩ খ্রিস্টাব্দের ১৮ ডিসেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মন্দিরটির আনুষ্ঠানিক দ্বারোদ্ঘাটন করেন। [২] প্রসঙ্গত, উল্লেখ্য এই যে, মন্দির নির্মাণকালে ২০২১ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী প্রথমবার পরিদর্শনে এসেছিলেন।[৩]

মন্দিরের নামকরণ ও বৈশিষ্ট্য সম্পাদনা

মন্দিরটির নামকরণ অনন্ত শ্রী সদগুরু সদাফল দেও জী মহারাজ রচিত স্বর্বেদ শীর্ষক এক আধ্যাত্মিক পুস্তকের নামে রাখা হয়েছে। 'স্বঃ' অর্থ 'আত্মা' ও 'বেদ' অর্থ 'জ্ঞান' এই দু'টি শব্দের সমন্বয়ে 'স্বর্বেদ'- এর উৎপত্তি। মানবজাতিকে মহৎ আধ্যাত্মিক জ্ঞানের আভায় আলোকিত করতে এবং সারা বিশ্বে শান্তিপূর্ণ আবহ বজায় রাখতে যে আত্মজ্ঞানের প্রয়োজন তাই 'স্বর্বেদ'। তাই এই মন্দিরের কোনও নির্দিষ্ট দেবতার পুজো না করে, ধ্যান করা হয়। আত্মার জ্ঞান লাভের উদ্দেশ্যে 'স্বর্বেদ মহামন্দির' তাই ধ্যানের পীঠস্থান।[১]

প্রাচীন দর্শন, আধ্যাত্মিকতা এবং আধুনিক স্থাপত্যের এক অত্যাশ্চর্য নকশায় প্রায় তিন লক্ষ বর্গফুটের বিস্তৃত ক্ষেত্রের উপর ১২৫ টি পাপড়িযুক্ত পদ্মের গম্বুজ-শীর্ষ গোলাপী মাকরানা মার্বেলের সাততলা মন্দিরটি বিপুল অর্থ ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। নির্মাণকাজে ১৫ জন ইঞ্জিনিয়ারের তত্ত্বাবধানে ও নির্দেশনায় ৬০০ জন নির্মাণ শ্রমিক লিপ্ত ছিলেন। বিশাল কাঠামোর এই মন্দিরের ছাদ ও দরজা সেগুন কাঠের তৈরি। গোলাপী বেলেপাথরের মন্দিরের দেয়াল স্বর্বেদের ৩১৭৩ টি শ্লোকের খোদাইয়ে সজ্জিত করা হয়েছে। বিশাল পরিসরের এই মহামন্দিরে প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ একসঙ্গে বসে প্রাণায়াম, ধ্যান ও যোগাসন করতে পারবেন। এছাড়াও মন্দির সংলগ্ন বাগানে নানা ওষধি গাছসহ ১০১ টি ফোয়ারায় এবং অত্যাধুনিক আলোর ব্যবস্থায় এই মন্দিরটির সৌন্দর্য বৃদ্ধি হয়েছে। [১]

আরো দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা