সীতাকুণ্ড অক্সিজেন প্ল্যান্ট বিস্ফোরণ

২০২৩ সালের ৪ মার্চ শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার ‘সীমা অক্সিজেন লিমিটেডের’ প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।[১] বিস্ফোরণের ফলে পরবর্তীতে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। এই ঘটনায় ৭ জন নিহত হন।[২]

সীতাকুণ্ড অক্সিজেন প্ল্যান্ট বিস্ফোরণ
মানচিত্র
তারিখ৪ মার্চ ২০২৩ (2023-03-04)
সময়বিস্ফোরণ হওয়ার সময়: বিকেল ৪ টা (বিএসটি)
অবস্থানকদমরসুল, ভাটিয়ারী, সীতাকুণ্ড, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
স্থানাঙ্ক২২°২৭′০০″ উত্তর ৯১°৪৪′১৩″ পূর্ব / ২২.৪৫০০° উত্তর ৯১.৭৩৬৯° পূর্ব / 22.4500; 91.7369
মৃত
আহত২৫

সীতাকুণ্ড উপজেলার কদমরসুল এলাকায় অবস্থিত একটি বেসরকারি অক্সিজেন প্ল্যান্টে এ ঘটনা ঘটে। সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো. ফজলে রাব্বি বলেন, বিকাল সাড়ে চারটার দিকে ওই অক্সিজেন প্লান্টে বিকট বিস্ফোরণ হয়। অক্সিজেন রিফুয়েলিং করার সময় এ বিস্ফোরণ ঘটে। সেসময় কারখানার ভেতরে অনেকেই কাজ করছিলেন। ফলে অনেক মানুষ হতাহত হন। পরে প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

ঘটনার পর তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠিত হয়।[৩]

অগ্নিকাণ্ড সম্পাদনা

কারখানাটি প্রতিদিন ২৫০০ সিলিন্ডার অক্সিজেন উত্পাদন করে। যেখানে উৎপাদন কাজে নিয়োজিত থাকেন ২৫০-৩০০ শ্রমিক। যার মধ্যে ৫ জন প্রাণ হারান।[৪]

কারণ সম্পাদনা

যে পাইপ দিয়ে সিলিন্ডারে অক্সিজেন ভরা হয়, সেটিতে ফাটল বা ছিদ্র হওয়া, দ্বিতীয়ত গ্যাস নিয়ন্ত্রণের ভালভে (যন্ত্রাংশ) ত্রুটি থাকা এবং সিলিন্ডারের ভেতরে ফাটল থাকা এই তিনটি কারণে সীমা অক্সিজেন কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে ধারণা করে গনমাধ্যমে বিবৃতি দেয় বিশেষজ্ঞরা।[৫]

ঘটনাক্রম সম্পাদনা

  • ৪ মার্চ বিকেল ৪ টায় প্লান্টে বিস্ফোরণ হয়।

হতাহত সম্পাদনা

এতে ৭ জন নিহত[৫] এবং ২৫ জন আহত হয়েছে। ঘটনাস্থলে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলম বলেন, এ পর্যন্ত ছয়জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে অক্সিজেন প্ল্যান্টের ভেতর থেকে ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আরেকজনের মরদেহ প্ল্যান্টের বাইরে থেকে উদ্ধার করা হয়। দুর্ঘটনাস্থল থেকে উড়ে যাওয়া প্ল্যান্টের একটি লোহার টুকরার আঘাতে আধা কিলোমিটার দূরে এক ব্যক্তি নিহত হন।[৬] ৫ মার্চ রাত সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ তে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কারখানার সিনিয়র অপারেটর লাল শর্মা মারা যান।[৫]

ক্ষয়ক্ষতি সম্পাদনা

বিস্ফোরণে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্ট এক প্রকার লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, বিস্ফোরণে প্ল্যান্টের দেয়াল ভেঙে পড়েছে। প্লান্টের মেশিনারিজ ও জিনিসপত্র যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। আশপাশে টিনের টুকরা পড়ে রয়েছে। প্ল্যান্টটি দুমড়েমুচড়ে গেছে। চারটি ট্রাকে আগুন ধরে যায়। এগুলোও দুমড়েমুচড়ে যায়। বিস্ফোরণের তীব্রতা এত বেশি ছিল তিন কিলোমিটার দূর থেকেও শব্দ শোনা গেছে। দুর্ঘটনাস্থলের আশপাশে আধা কিলোমিটার এলাকায় বাড়িঘর ও অফিস-আদালত কেঁপে ওঠে। বিকট শব্দে অনেক স্থাপনার কাচ ভেঙে যায়। দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে।

প্রতিক্রিয়া সম্পাদনা

পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দায়িত্ব ও কর্তব্য অবহেলার অভিযোগ এনে কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় কারখানার ৩ মালিকসহ মোট ১৬ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়।[৭]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন প্লান্টে অগ্নিকাণ্ড, নিহত ৫, আহত ৫০ জন"। VOA। ৪ মার্চ ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ৫ মার্চ ২০২৩ 
  2. "সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন প্লান্টে বিস্ফোরণ-আগুন: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬"dhakatimes24.com। ৫ মার্চ ২০২২। 
  3. "সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন প্লান্টে বিস্ফোরণ: তদন্ত কমিটি গঠন"dhakatimes24.com। ৫ মার্চ ২০২২। 
  4. "সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন প্লান্টে বিস্ফোরণে আরো একজনের মৃত্যু"বণিক বার্তা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০২৩ 
  5. "সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ: তদারকি ও নিরাপত্তায় ঘাটতি"prothomalo.com। ৬ মার্চ ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ৬, ২০২৩ 
  6. "বিস্ফোরণে আধা কি.মি. উড়ে যাওয়া লোহার টুকরার আঘাতে নিহত ১"। সমকাল। ৪ মার্চ ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ৫ মার্চ ২০২৩ 
  7. "সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ : কারখানার ৩ মালিকসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা"। মানবজমিন। ৭ মার্চ ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০২৩