রাধাবতী দেবী
রাধাবতী দেবী একজন বাংলাদেশী তাঁতশিল্পী ও উদ্ভাবক। তিনি কলাগাছের তন্তু দিয়ে কলাবতী শাড়ি তৈরি করেছেন।[২][৩][৪] বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজির উদ্যোগে তিনি কলাগাছের সুতা দিয়ে শাড়ি বুনন করেন। তাকে স্মরণ রাখতে কলাগাছের ‘কলা’ আর রাধাবতীর ‘বতী’ যোগ করে শাড়ির নাম বাখা হয় ‘কলাবতী’।[৫] কলাগাছের সুতা থেকে তৈরি ১৩ হাতের শাড়িটি অনেকটা মণিপুরী ও জামদানি শাড়ির মতো।
রাধাবতী দেবী | |
|---|---|
| জন্ম | ১৯৬৩ (বয়স ৬০–৬১)[১] |
| পরিচিতির কারণ | কলাবতী শাড়ির উদ্ভাবক |
২০২০ সালে তাঁতজাত বস্ত্রের শ্রেষ্ঠ নকশাকার হিসেবে তিনি বাংলাদেশ মণিপুরি আদিবাসী ফোরাম কর্তৃক ‘নকশাকার গুরুমাতা’ উপাধি লাভ করেন ।[৬][৭]
ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা
রাধাবতী দেবী মৌলভীবাজার জেলা কমলগঞ্জ উপজেলা সদরের মণিপুরী জনগোষ্ঠীর ভানুবিল মাঝেরগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছেন।[৮] তার জন্মের কয়েক মাস পর বাবা ব্রজবল্লভ সিংহ[৯] মারা যান। রাধাবতী বড় হন মামার কাছে। তেতইগাঁও রশিদ উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তার বিয়ে হয়ে যায়। সংসার জীবন শুরুর তিন মাস পর বিচ্ছেদ হয়ে যায়। ২০১৬ সালে তার মাও মারা যান।
কর্মজীবন সম্পাদনা
পারিবারিক ঐতিহ্য হিসাবে ১৯৭৫ সাল থেকে তিনি মণিপুরী তাঁতবস্ত্র তৈরি করছেন।[১০] ১৯৯২ সাল থেকে শাড়ি তৈরি শুরু করেন।[১১] তিনি মাফলার, ওড়না, শাড়ি, গামছা, উত্তরীয়সহ বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে বিক্রি করতেন। পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন তাঁতবস্ত্র দোকানের চাহিদা এলেই তিনি সে হিসাবে মণিপুরী তাঁতবস্ত্র তৈরি করে দিয়ে থাকেন।
বাড়িতে টকটকি (তাঁতের কাঠের মেশিন) দিয়ে মণিপুরী বস্ত্র বুনন করেন। তাঁতবস্ত্র তৈরিতে ১৯৮৬ সালে প্রথম ভারতের মণিপুরের ইম্পলে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছিলেন। এরপর কমলগঞ্জের মাধবপুরে মণিপুরী ললিত কলা একাডেমিতে ২০১০ সালে ২ বার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। সেই থেকে তিনি এখন মণিপুরী তাঁতবস্ত্র বুননে এলাকায় একজন ওস্তাদ (গুরু) হয়ে উঠেন।[১২]
তথ্যসূত্র সম্পাদনা
- ↑ হোসাইন, মানসুরা (২০২৩-০৪-০৯)। "প্রশিক্ষণকেন্দ্র খুলে অন্যদের শাড়ি বানানো শেখাতে চাই"। Prothomalo। ২০২৩-০৪-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১১-৩০।
- ↑ "'কলাবতী' শাড়ির উদ্ভাবককে সংবর্ধনা"। banglanews24.com। ২০২৩-০৪-০৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১১-৩০।
- ↑ www.bahumatrik.com। "কলাবতী শাড়ির উদ্ভাবক রাধাবতী দেবী নিজ গ্রামে সংবর্ধিত"। Bahumatrik | বহুমাত্রিক (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০৮-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১১-৩০।
- ↑ "কলাগাছের সুতায় তৈরি প্রথম শাড়ি 'কলাবতী'"। Bangladesh Journal Online। ২০২৩-১২-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১১-৩০।
- ↑ "কলাগাছের আঁশ থেকে কলাবতী শাড়ি ও একজন রাধাবতী দেবী"। Jugantor (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০৪-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১১-৩০।
- ↑ স্পেশাল, স্টার (২০২৩-০৪-২৩)। "নকশাকার গুরুমাতা রাধাবতীর গল্প"। The Daily Star Bangla (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০৪-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১১-৩০।
- ↑ সিংহ, মানাউবী (২০২২-১১-০৬)। "মণিপুরি শাড়ির 'গুরুমাতা'"। Prothomalo। ২০২২-১২-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১১-৩০।
- ↑ "রাধাবতী দেবীর 'কলাবতী শাড়ি' প্রধানমন্ত্রীর হাতে"। দৈনিক ইনকিলাব। ২০২৩-১২-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১১-৩০।
- ↑ Pratidin, Bangladesh (২০২৩-০৭-২২)। "রাধাবতী দেবীর অনন্য কলাবতী শাড়ি"। বাংলাদেশ প্রতিদিন। ২০২৩-১২-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১১-৩০।
- ↑ "কলা গাছের তন্তু থেকে শাড়ি"। Bangla Tribune। ২০২৩-০৪-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১১-৩০।
- ↑ প্রতিবেদক, বিশেষ (২০২৩-০৪-০২)। "কলাগাছের সুতা দিয়ে বোনা হলো 'কলাবতী' শাড়ি"। Prothomalo। ২০২৩-০৪-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১১-৩০।
- ↑ "রাধাবতী দেবীর মনের জোরেই কলাগাছের সুতায় শাড়ি তৈরি"। Newsbangla24। ২০২৩-১২-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১১-৩০।