রাডার এমন একটি পদ্ধতি যা তড়িচ্চৌম্বক তরঙ্গ ব্যবহার করে চলমান বা স্থির বস্তুর অবস্থান, দূরত্ব, উচ্চতা, দিক বা দ্রুতি নির্ণয় করতে পারে। এটি বেতার সংকেত ধারণ এবং দূরত্ব নির্ধারণের সংক্ষিপ্ত রূপ। অর্থাৎ Radar শব্দের পূর্ণরূপ হচ্ছে Radio Detection and Ranging। রাডার বলতে পদ্ধতি এবং যন্ত্র উভয়টিই বোঝানো হয়। একে যদি সংবেদী যন্ত্র ধরা হয় তবে তার উদ্দেশ্য হচ্ছে ব্যবহারকারীর চারদিকের পরিবেশের কোন কোন বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে ধারণা দেয়া। যেমনটি প্রথম লাইনে উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যভাবে ব্যবহার করলে রাডার পৃথিবীর পৃষ্ঠতল সম্বন্ধে তথ্য সরবরাহ করে বা আবহাওয়ামণ্ডলের পরিস্থিতির সম্যক ধারণা দেয়। এছাড়া অনেক দূরের বা কাছের জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক বস্তুসমূহের পৃষ্ঠতল এবং বৈশিষ্ট্য সম্বন্ধেও এটি তথ্য প্রদান করে। রাডারকে অনেক সময় আরও পূর্ণাঙ্গ কোন ব্যবস্থার অংশ হিসেবে ব্যবহার করা হয় বা এর সাথে সহযোগী অন্য যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। এটি যে ধরনের বস্তু সম্বন্ধে ধারণা তার মধ্যে রয়েছে বিমান, জাহাজ, গাড়ি, আবহাওয়ার গড়ন, জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক বস্তু এবং ভূমি।

দীর্ঘ ব্যাপ্তির রাডার এন্টেনা যা অলটেয়ার (ALTAIR) নামে পরিচিত।

আগেই বলা হয়েছে, রাডার কাজ করে তড়িচ্চৌম্বক তরঙ্গ ব্যবহার করে। রাডারের মধ্যস্থিত একটি প্রেরক যন্ত্রের মাধ্যশে চারপাশে বেতার তরঙ্গ প্রেরণ করা হয় যা কোন বস্তু থেকে প্রতিফলিত হয়ে এসে গ্রাহক যন্ত্রে ধরা পড়ে। গ্রাহক যন্ত্র সাধারণত প্রেরক যন্ত্রের কাছেই বা একই স্থানে অবস্থান করে। প্রতিফলিত হয়ে আসা বেতার তরঙ্গ বেশ দুর্বল হলেও একে ইচ্ছামত বিবর্ধিত করা যায়। এ কারণেই রাডার অনেক দূরের বস্তুকেও বিকিরণের মাধ্যমে চিহ্নিত করতে পারে। কিন্তু অন্যান্য তরঙ্গ শব্দ বা দৃশ্যমান আলোক তরঙ্গ চিহ্নিত করা বেশ কষ্টকর। প্রতিফলনকারী বস্তুর দূরত্ব পরিমাপ করা হয় রাডার পাল্‌সের বিকিরণ এবং প্রতিফলনের মধ্যবর্তী সময় মেপে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই সময় অতি ক্ষুদ্র হয়। রাডার ব্যবহারের প্রধান ক্ষেত্রগুলো হচ্ছে আবহাওয়াবিজ্ঞান বা আবহবিদ্যা, এয়ার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, চলমান গাড়ির দ্রুতি নির্ণয়, যুদ্ধ এবং জ্যোতির্বিজ্ঞান। ব্রিটেনে এর প্রকৃত নাম ছিল আরডিএফ (রেডিও ডিরেকশন ফাইন্ডার)। ১৯৪১ সালে রাডার নামের ব্যবহার শুরু হয়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

আরো পড়ুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা