যদুনাথ পাল

যদুনাথ পাল (ইংরেজি: Jadunath Pal) ( ১৯ জানুয়ারি, ১৮২২  –   ২৫ নভেম্বর, ১৯২৫) ছিলেন খ্যাতনামা বাঙালি মৃৎশিল্পী। ঊনবিংশ শতকে মানুষের পূর্ণাবয়ব মূর্তি নির্মাণে বিশেষ পারদর্শী এই মৃৎশিল্পীর খ্যাতি  দেশের বাইরে ইউরোপেও ছড়িয়ে পড়েছিল।

সংক্ষিপ্ত জীবনী

যদুনাথ পালের জন্ম বৃটিশ ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণিতে। পিতার নাম আনন্দ পাল। কৃষ্ণনগরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের মৃৎশিল্পীদের বিশেষ উৎসাহ দিতেন। তারাও সাধারণ মানুষ কিংবা মনীষীদের অবিকল প্রতিকৃতি  নিখুঁত ভাবে তৈরি করতে পারেন। বংশপরম্পরায়  যদুনাথ ছোটবেলা থেকেই এবিষয়ে বিশেষ পারদর্শিতা লাভ করেছিলেন। বিশ্বের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে বৃটিশ সরকার থেকে তাঁকে মূর্তি তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হত।  মাটির কাজে নিখুঁতভাবে মানুষের বিশেষ সম্প্রদায় কিংবা গোষ্ঠী-বিশেষের জাতিগত রূপ ও বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তুলতে তার অসাধারণ দক্ষতা ছিল। ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দ হতে আয়োজিত আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে  তার হাতে গড়া মূর্তি ও মডেল স্থান পায়।  তন্মধ্যে  বিভিন্ন পেশায় নিযুক্ত সতেরোটি  মানুষের মডেল অন্যতম।  ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে যে ষাঁড়ের মূর্তি প্রদর্শিত হয়েছিল সেটি সেখানকার জাতীয় সংগ্রহালয় - ভিক্টোরিয়া সংগ্রহালয়ে  রক্ষিত হয়। ভারতের আদিম অধিবাসীদের মূর্তিগুলির একটি সেট কলকাতার জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।  তিনি কিছুদিন কলকাতার গভর্নমেন্ট আর্ট স্কুলের মডেলিং শিক্ষক ছিলেন। সমসাময়িক অনেক খ্যাতনামা ব্যক্তির মূর্তিও তিনি  গড়েছিলেন। কলকাতার বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদে সংগৃহীত বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তিটি তার কীর্তি।