মকবুল হোসেন চৌধুরী

মকবুল হোসেন চৌধুরী (১৮৯৮-২০ ডিসেম্বর ১৯৫৭) ব্রিটিশ ভারতের সাংবাদিক, খেলাফত আন্দোলন নেতা, ভাষাসৈনিক ও রাজনীতিক যিনি ১৯৩৭ সালে আসাম ব্যবস্থাপক পরিষদের এম এল এ ছিলেন। তিনি ছিলেন সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।[১][২]

মকবুল হোসেন চৌধুরী
আসাম ব্যবস্থাপক পরিষদের সদস্য
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১৮৯৮
সুনামগঞ্জ, আসাম, ব্রিটিশ ভারত
(বর্তমান বাংলাদেশ)
মৃত্যু২০ ডিসেম্বর ১৯৫৭
দাম্পত্য সঙ্গীশফিকুন্নেসা চৌধুরী
সন্তানহাসান শাহরিয়ার সহ ৬ জন
পিতামাতাআবুল হোসেন চৌধুরী
আজিজুন্নেছা চৌধুরী
প্রাক্তন শিক্ষার্থীমুরারিচাঁদ কলেজ

প্রাথমিক জীবন সম্পাদনা

মকবুল হোসেন চৌধুরী ১৮৯৮ সালে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বিন্নাকুলি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আবুল হোসেন চৌধুরী এবং মাতা আজিজুন্নেছা চৌধুরী।

১৯১৯ সালে তিনি সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এন্ট্রাস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এমসি কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি ১৯২০ সালে খিলাফত আন্দোলনে যোগদান করেন।

মকবুল হোসেন চৌধুরীর স্ত্রী শফিকুন্নেসা চৌধুরী, বড় ছেলে ফারুক চৌধুরী, মেঝো ও ছোট মেয়ে রোকেয়া সামাদ, আসিয়া চৌধুরী ও আসমা হোমায়েরা চৌধুরী। মেঝো ছেলে হোসেন তওফিক চৌধুরী সাংবাদিক, আইনজীবী ও কলামিস্ট। ছোট ছেলে হাসান শাহরিয়ার বাংলাদেশের জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ছিলেন।

কর্মজীবন সম্পাদনা

মকুবল হোসেন চৌধুরী ছিলেন সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন পত্রিকা সিলেটের ‘যুগভেরী’র (১৯৩২) প্রথম সম্পাদক। এর আগে তিনি সিলেটের ‘যুগবাণী’ (১৯২৫) ও কলকাতার দৈনিক ‘ছোলতান’ (১৯৩০)-এর সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি ‘সিলেটপত্রিকা’ (১৯৫৭) সম্পাদনা করেন।

তিনি ইন্ডিয়ান জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিভাগের যুগ্ম সম্পাদকের দার্য়িত্ব পালন করেন।

রাজনৈতিক জীবন সম্পাদনা

১৯২০ সালে তিনি সিলেটের প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে ভারতের নাগপুওে অনুষ্ঠিত সর্ব ভারতীয় কংগ্রেস সম্মেলনে যোগদান করেন। সরকার বিরোধী বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে ব্রিটিশরাজ তাকে দু’বছর কারারুদ্ধ করে রাখেন।

১৯৩৭ সালে তিনি মুসলিম লীগের মনোনয়ন নিয়ে আসাম ব্যবস্থাপক পরিষদের এমএলএ নির্বাচিত হন। সিলেটে অনুষ্ঠিত গণভোটে সিলেটকে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে ১৯৪৬ সালে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।[৩]

২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ সালে তিনি সুনামগঞ্জে ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন ও রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে মিছিলকারীদের উপর গুলিবর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে মুসলিম লীগ থেকে পদত্যাগ করেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ সালে তার নেতৃত্বে সুনামগঞ্জের অনুষ্ঠিত ছাত্র জনতার প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

গ্রন্থ সম্পাদনা

মকুবল হোসেন চৌধুরীর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে:

  • খোলাফায়ে রাশেদীন
  • মাল্টার বন্দী
  • কুরআন পরিচয়
  • ইসলামী জীবনাদর্শ
  • জ্ঞানবাণী

মৃত্যু সম্পাদনা

মকুবল হোসেন চৌধুরী ২০ ডিসেম্বর ১৯৫৭ সালে মৃত্যুবরণ করেন।[৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. মতিউর রহমান চৌধুরী (২০ ডিসেম্বর ২০১৬)। "সাংবাদিকতায় একটি অনন্য নাম"দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ 
  2. "আজ মকবুল হোসেন চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী"দৈনিক কালের কণ্ঠ। ২০ ডিসেম্বর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ 
  3. "চৌধুরী, মকবুল হোসেন"বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা