ভারতীয় চিকিৎসা গবেষণা পর্ষদ

ভারতের জৈব-চিকিৎসা সংক্রান্ত শীর্ষ সংস্থা

ভারতীয় চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ (ইংরেজি: Indian Council of Medical Research; সংক্ষেপে ICMR) হচ্ছে ভারতের জৈব-চিকিৎসা সংক্রান্তীয় গবেষণার প্রস্তুতি, সহযোগিতা এবং প্রসারের এক শীর্ষ সংস্থা। পৃথিবীর পুরানো এবং বৃহৎ গবেষণা সংস্থার মধ্যে আইসিএমআর অন্যতম। ভারত সরকারের নেতৃত্বাধীন স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ বিভাগের অধীনস্থ স্বাস্থ্য গবেষণা বিভাগ এর আর্থিক দিকটী সামলায়।[১][২]

ভারতীয় চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ
সংক্ষেপেICMR
গঠিত১৯১১ (IRFA হিসাবে); ১৯৪৯ (ICMRতে পরিবর্তন)
ধরনসরকারী সংস্থা
সদরদপ্তরনতুন দিল্লী
যে অঞ্চলে কাজ করে
ভারত
সচতে এবং মহানির্দেশক
বলরাম ভার্গব
প্রধান প্রতিষ্ঠান
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক (ভারত)
ওয়েবসাইটwww.icmr.nic.in

আইসিএমআরের মোট ২৬টা প্রতিষ্ঠান যক্ষ্মা, কলেরা, এইডস, ম্যালেরিয়া, পুষ্টিহীনতা, কর্কট, খাদ্য এবং ভেষজ বিষবিজ্ঞান, প্রজনন, চিকিৎসা পরিসংখ্যা ইত্যাদি বিভিন্ন স্বাস্থ্যজনিত, রোগসংক্রান্ত অথবা স্বাস্থ্য-সম্বন্ধীয় বিষয়ে গবেষণা গবেষণা করে। আইসিএমআরের ৬টা আঞ্চলিক চিকিৎসা গবেষণা কেন্দ্র আঞ্চলিক ক্ষেত্রে দেখা দেয়া স্বাস্থ্যর সমস্যা শনাক্তকরণ করা ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন ভৌগোলিক ক্ষেত্রে গবেষণা সবলীকরণ করাতেঘ গুরুত্ব আরোপ করে।[২]

ইতিহাস সম্পাদনা

১৯১১ সালে ভারত সরকার ভারতীয় গবেষণা পুঁজি সংঘ (Indian Research Fund Association, IRFA) স্থাপন করে। এর উদ্দেশ্য ছিল দেশের মধ্যে চিকিৎসা-গবেষণার পৃষ্ঠপোষকতা করা আর তার জন্য উদ্যোগ হাতে নেওয়া। স্বাধীনতার পর এই প্রতিষ্ঠানে কতগুলি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন করা হয়৷ ১৯৪৯ সালে সংস্থার নামটি বদলে ভারতীয় চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ রাখা হয়। সাথে কার্যপ্রণালীরও পরিসর বর্ধন করা হয়৷[৩]

পরিচালনা বর্গ সম্পাদনা

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী হলেন পরিচালনা বর্গের সভাপতি। জৈব-চিকিৎসার বিভিন্ন শাখার বিশেষজ্ঞরা পরিচালনা বর্গকে সহযোগিতা দেন। বিজ্ঞানী উপদেষ্টা জোট, মণ্ডলী, বিশেষজ্ঞ জোট, পরিচালনা সমিতি, বিশেষ কর্মীদল ইত্যাদি সংস্থার বিভিন্ন গবেষণা-কর্ম এবং সাহায্যসমূহ নিরীক্ষণ এবং পরীক্ষণ করে। পরিষদ জৈব-চিকিৎসার গবেষণাসমূহ চালিয়ে নিতে সাধারণত ইন্ট্রামুরেল (আভ্যন্তরীণ) এবং এক্সট্রামুরেল (বাহ্যিক) পদ্ধতির সহায়তা নেন। এক্সট্রামুরেল গবেষণার ভিত্তি এবং এর পদ্ধতি-প্রক্রিয়াসমূহ পরিষদ বিগত সময়ে সংবর্ধন করে আসছে।[৪]

মূল কার্যক্রমণিকা সম্পাদনা

এক্সট্রামুরেল গবেষণার প্রচার-প্রসারের জন্য পরিষদে যথোপযুক্ত আন্তঃগাঁঠনির কিছু উচ্চ-গবেষণার কেন্দ্র চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানে স্থাপন করেছে। দিল্লীস্থ রোগনিদান প্রতিষ্ঠানের মতো কিছু বিশেষ-বিশেষ প্রতিষ্ঠানের সাথে আইসিএমআর সহযোগিতামূলক গবেষণা প্রকল্পের সাহায্যও নিয়েছে।[৫]

"ভাইরাসজনিত গবেষণা এবং রোগনির্ণয় প্রয়োগশালা"র (Viral Research and Diagnostic Laboratories, VRDL) মাধ্যমে আইসিএমআর ভাইরাসের তৎকালীন শনাক্তকরণ এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপ্রণালীতে গুরুত্ব প্রদান করেছে। তারজন্য ভিআরডিএলর নিয়মিত সংবর্ধন এবং সবলীকরণ করে থাকা হয়েছে। গবেষণা ছাড়াও আইসিএমআর ভারতীয় চিকিৎসা বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন দেশের কিছু ফেলোশিপ কার্যসূচীর সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। সাথে উন্নয়নশীল দেশের বিজ্ঞানীদের ভারতীয় প্রতিষ্ঠান অথবা প্রয়োগশালায় এসে কাজ করতে সুযোগ সৃষ্টি করেছে।[৬]

প্রাক্তন চিকিৎসা বিজ্ঞানী এবং শিক্ষকদের জন্য, পরিষদ এমিরেটাস বিজ্ঞানীর পদটি দিয়ে আসছে যাতে তাঁরা অবসরের পর জৈবচিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রটিতে কাজ করে থাকতে পারে৷ বিশেষ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখা বিশেষ ব্যক্তি ছাড়াও দেশের অনুন্নত অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ কর্মে ব্যস্ত হয়ে থাকা গবেষক-বিজ্ঞানীদের পরিষদ নিয়মিতভাবে পুরস্কার-স্বীকৃতিপ্রদান করে আসছে।[৭] বর্তমান পরিষদ ৩৮টা পুরস্কার প্রদান করে। তার ১১টা পুরস্কারই চল্লিশ বছর অনূর্ধ্ব যুব বিজ্ঞানীর জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে।[৩] পরিষদের পৃষ্ঠপোষকতাতেই "ভারতীয় চিকিৎসা গবেষণার পত্রিকা" (Indian Journal of Medical Research) প্রকাশিত হয়ে আসছে।[৮]

ভারতীয় কেন্দ্রসমূহ সম্পাদনা

 
 
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি
জাতীয় এইডস গবেষণা ইনস্টিটিউট
মাইক্রোবিয়াল কনটেইনমেন্ট কমপ্লেক্স
 
জাতীয় পুষ্টি ইনস্টিটিউট, হায়দ্রাবাদ
জাতীয় বায়োমেডিকাল গবেষণার প্রাণী সম্পদ সুবিধা
 
Awantipora
 
Madurai
 
Darbhanga
 
Rewari
ভারতে আইসিএমআর গবেষণা সুবিধার তালিকা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Dhar, Aarti; Joshi, Sandeep (২ জুন ২০১১)। "No need to panic over WHO report on mobiles: ICMR"The Hindu। Chennai, India। 
  2. Bhargava, Pushpa M (১২ নভেম্বর ২০১১)। "Could they buy salt and spices, fuel and milk, and pay rent... with Rs. 2.33 a day?"The Hindu। Chennai, India। 
  3. "overview" (পিডিএফ)। ICMR। সংগ্রহের তারিখ ২১ এপ্রিল ২০২০ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. https://books.google.co.in/books?id=FUjzWFsz5fwC&pg=PA3398&lpg=PA3398&dq=The+council+promotes+biomedical+research+in+the+country+through+intramural+as+well+as+extramural+research.+Over+the+decades,+the+base+of+extramural+research+and+also+its+strategies+have+been+expanded+by+the+council.&source=bl&ots=s4A7yo0T0E&sig=ACfU3U2aKfe_eCgmotVFqylHC4oqLl8-GQ&hl=en&sa=X&ved=2ahUKEwie1pOK7vnoAhXR7XMBHZxgCsYQ6AEwAXoECAsQAQ#v=onepage&q=The%20council%20promotes%20biomedical%20research%20in%20the%20country%20through%20intramural%20as%20well%20as%20extramural%20research.%20Over%20the%20decades%2C%20the%20base%20of%20extramural%20research%20and%20also%20its%20strategies%20have%20been%20expanded%20by%20the%20council.&f=false
  5. "ICMR has signed a memorandum of understanding with the Nichi-In Centre for Regenerative Medicine - The Hindu News article"। Chennai, India। ৩ ডিসেম্বর ২০০৭। ৫ ডিসেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ মে ২০২০ 
  6. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৭ এপ্রিল ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ মে ২০২০ 
  7. "51 Scientists presented with ICMR Awards for years 2009 and 2010"। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  8. http://www.ijmr.org.in/aboutus.asp