ব্রুনাই গৃহযুদ্ধ
ব্রুনাই গৃহযুদ্ধ ১৬৭৩ থেকে ১৬৬০ ব্রুনেই প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ একটি গৃহযুদ্ধের ছিল।
ব্রুনাই গৃহযুদ্ধ | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্বাঞ্চলীয় অধ্যুষিত সাবাহ এলাকা উপহারস্বরূপ সুলু সুলতানকে দেয়া হয় | |||||||
| |||||||
বিবাদমান পক্ষ | |||||||
সুলতান আব্দুল হাক্কুল মুবিন ফোর্স ( Sultan Abdul Hakkul Mubin's Forces) |
সুলতান মুহিদ্দিন ফোর্স (Sultan Muhyiddin's Forces)
| ||||||
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী | |||||||
আব্দুল হাক্কুল মুবিন | সুলতান মুহিদ্দিন |
যুদ্ধুরত পক্ষসমূহ সম্পাদনা
- সুলতান আব্দুল হাক্কুল মুবিনের বাহিনী
- সুলতান মুহিদ্দিনের বাহিনী
- সুলতান মুহাম্মদ আলির অনুসারী
- সুল বাহিনী
কমান্ডার এবং নেতাগণ সম্পাদনা
- আব্দুল হাক্কুল মুবিন
- সুলতান মুহিদ্দিন
মুহিদ্দিন ফোর্স'কে সাহায্য করার উপহারস্বরূপ সাবাহ' এর পূর্বাঞ্চল সুলু সুলতানদের উপহার হিসেবে দেওয়া হয়। এই সময়কালে আব্দুল হাক্কুল মুবিন'কে হত্যা করা হয়।
ইতিহাস সম্পাদনা
ব্রুনাই গৃহযুদ্ধ (The Brunei Civil War) এর সূচনা ঘটে ১৬৬০ সাল নাগাদ। যার ব্যাপ্তিকাল ছিল ১৩ বছর। ১৬৭৩ সালে সুলতান মুহিদ্দিন' এর সিংহাসন আরোহণের মাধ্যমে এই গৃহযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। এবং সুলতান আব্দুল হাক্কুল মুবিনের মৃত্যুর মাধ্যমে মুবিন শাসনের পতন ঘটে। সুলতান মুহাম্মদ আলি (ব্রুনাই এর ত্রয়োদশতম সুলতান) এর শাসনামলে পেঙ্গিরান (Pengiran; Prince) মুদা বোংশু এবং পেঙ্গিরান মুদা আলম (পেঙ্গিরান আব্দুল হাক্কুল মুবিন এর পুত্র) এর সাথে 'মোরগ লড়াই' এর ফলাফল নিয়ে বাকবিতন্ডা বাঁধে। এই খেলাতে পেঙ্গিরান মুদা বংশু'র পরাজয় হয়। মুদা বংশু'র পরাজয়ে পেঙ্গিরান মুদা আলম ব্যাঙ্গবিদ্রূপ করে। এতে প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে পেঙ্গিরান- বোংশু পেঙ্গিরান মুদা আলমকে হত্যা করেন এবং ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। প্রতিশোধস্বরূপ, আব্দুল মুবিন এবং তাঁর অনুসারী সম্প্রদায় সুলতান মুহাম্মদ আলির উপর ক্ষিপ্ত হন এবং হত্যার মাধ্যমে এরপ্রতিশোধ নেয়ন। এর মাধ্যমে সুলতান আব্দুল মুবিন ব্রুনাই এর চতুর্দশতম সুলতানের পদে অধিষ্ঠিত হন। এর পরপরই আব্দুল মুবিন তাঁর নাম ও উপাধি বদলিয়ে 'সুলতান হাক্কুল আব্দুল মুবিন' (Sultan Hakkul Abdul Mubin) গ্রহণ করেন। পুর্ববর্তী সুলতানের অনুসারীদের ক্ষোভ প্রশমনের উপলক্ষে প্রতিপক্ষ সাবেক সুলতান মুহাম্মদ আলি'র নাতি মুহিদ্দিন'কে বেন্দাহারা (Bendahara; Chief Minister) বা প্রধানমন্ত্রীর পদে নিযুক্ত করেন। পরবর্তীকালে সাবেক সুলতানের অনুসারীরা প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন'কে রাজি করান এই সিদ্ধান্তে যে; সুলতান আব্দুল হাক্কুল মুবিন'কে হত্যার মাধ্যমে তাঁর পিতামহের হত্যার প্রতিশোধ নেয়া হবে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে সাবেক সুলতানের প্রতিশোধ'ই ব্রুনাই গৃহযুদ্ধের মূল প্রভাবক ছিল। প্রথম দিকে বেন্দাহারা মুহিদ্দিন এ বিষয়ে তাঁর অপারগতা জানালেও এক সময় তিনি রাজি হন। বেন্দাহারা'কে রাজি করানোর ধারাবাহিকতায় অনুসারীরা প্রতিপক্ষের বাড়ি এবং প্রাসাদে বর্শা ছোড়ার মাধ্যমে এক বিশৃঙখল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এমতবস্থায় সুলতান আব্দুল হাক্কুল মুবিন- বেন্দাহারা মুহিদ্দিনের পরামর্শ মোতাবেক তাঁর তৎকালীন প্রাসাদ থেকে অবস্থান বদলিয়ে পালাউ শারমিন-এ (Pulau Chermin) চলে যান; এবং পরিকল্পনা করেন দাঙ্গা শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত আব্দুল মুবিন সেখানেই থাকবেন। আব্দুল হাক্কুল মুবিনের অনুপস্থতিতে মুহিদ্দিন নিজেকে নতুন (পঞ্চদশতম) সুলতান হিসেবে ঘোষণা করেন। এর ফলেই ব্রুনাই এর গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত ঘটে। যুদ্ধ সময়কালের ঘটনাঃ গৃহযুদ্ধকালীন সময়ে আব্দুল মুবিন কিনারুত, মালয়েশিয়া'য় (Kinarut, Malaysia) চলে যান। সেখানে তিনি দশ বছর অবস্থান করেন। সেখান থেকেই সুলতান মুহিদ্দিন ফোর্স এর মোকাবিলা ও যুদ্ধ পরিচালনা করেন। তাঁরা আবার ব্রুনাই'তে ফিরে এলে সুলতান মুহিদ্দিনের চূড়ান্ত আক্রমণ পরিচালনা করেন যার কারণে তাঁরা আব্দুল মুবিনকে পরাজিত করয়ে ব্যার্থ হন। মহিদ্দিন এ ব্যাপারে সতর্ক ছিলেন যে, গৃহযুদ্ধের সময়কাল অতি দীর্ঘ হচ্ছে ফফলে সুলু সুলতানের নিকট সাহায্য কামনা করেন। বিনিময়ে তিনি পূর্বাঞ্চলীয় অধ্যুষিত এলাকা সাবাহ এলাকা উপহারস্বরূপ দেবার অঙ্গীকার করেন।
ফলাফল সম্পাদনা
অবশেষে বহির্গত শক্তির সাহায্যে মুহিদ্দিন আরোও শক্তিশালী হলো। আব্দুল মুবিন যুদ্ধক্ষেত্রেই মারা যান। ইতিহাসবিদগণ 'মুহিদ্দিন আসলেই কি সুলু সুলতানের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেছেন কি না'; এই ব্যাপারে সন্দিহান। যদিওবা সুলু সুলতান তখনও তাঁর নিজের ব্যাপারগুলো নিয়েই কাজ করে গেছেন। যাইহোক দাবি করা হয়ে থাকে যে ব্রুনাই তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে এবং বিনিময়ে পূর্বাঞ্চল অধ্যুষিত এলাকা সাবাহ উপহারস্বরূপ পাবেন। শর্ত মোতাবেক সুলু সুলতান তা পেয়েছেনও।