সাজ (মিষ্টান্ন)

কুষ্টিয়ায় একটি গ্রাম্য মেলায় বিক্রির জন্য রাখা চিনির সাজ

সাজ, চিনির সাজ বা চিনির ছাঁচ একপ্রকার শুষ্ক চিনির তৈরি মিষ্টান্ন যা বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় ছিল।

বর্ণনা সম্পাদনা

সাজ একটি শুষ্ক ও ছাঁচে তৈরি সাদা মিষ্টান্ন। বিভিন্ন প্রাণী যেমন: হাতি, ঘোড়া, মাছ, পাখি প্রভৃতি আকৃতির ছাঁচে সাজ তৈরি হয়ে থাকে। সাধারণত বিভিন্ন অনুষ্ঠান-উৎসবে, গ্রাম্যমেলা বা হাটবাজারে বাতাসা, কদমার পাশাপাশি সাজ বিক্রি হতে দেখা যায়।

ইতিহাস সম্পাদনা

সাজ শব্দটি ছাঁচ শব্দটি থেকে আগত বলে ধারণা করা হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] সাজ তৈরির ইতিহাস প্রায় দেড়শত বছরের। মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় দেড়শত বছর ধরে পৈত্রিক ব্যবসায় হিসেবে কারিগররা সাজ তৈরি করছেন বলে জানা যায়।[১] এছাড়াও ময়মনসিংহ সাজ তৈরির জন্য বিখ্যাত ছিল।[২]

রন্ধনপ্রণালী সম্পাদনা

সাজ তৈরিতে কেবলমাত্র চিনি ব্যবহার করা হয়। প্রথমে বিশেষভাবে তৈরি করা একটি পাতিলে চিনি জ্বাল দিয়ে চিনির সিরা তৈরি করা হয়। চিনির সিরা তৈরি হলে গরম অবস্থায় সেটি কাঠের ফ্রেম বা ডাইসে ঢালা হয়। এই ছাঁচগুলো বিভিন্ন আকর্ষণীয় আকৃতির হয়ে থাকে। কাঠের ফ্রেমে ঠাণ্ডা হতে দিয়ে অপেক্ষার পর বের করে আনা হয় চিনির সাজ। ছাঁচ থেকে সাজ তৈরি হতে ১০ মিনিট মতো সময় লাগে।

প্রাপ্যতা ও উৎপাদন সম্পাদনা

বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সাজ মিষ্টান্ন হিসেবে জনপ্রিয়। ময়মনসিংহ, মানিকগঞ্জ এবং উত্তরঙ্গের বিভিন্ন জেলায় সাজ তৈরির ঐতিহ্য আছে। সাধারণত বৈশাখী মেলা বা অন্যান্য যে কোনো গ্রাম্য মেলায় চিনির সাজ খুবই জনপ্রিয় ছিল।

চিনির সাজ তৈরি কারিগরদের পারিবারিক ব্যবসা। অনেকেই বংশপরম্পরায় সাজ এবং বাতাসা, মিছরি প্রভৃতি উৎপাদনে জড়িত।

চিনির সাজ তৈরিতে লাভ কম। নতুন কারিগরদের মধ্যে সাজ তৈরির আগ্রহ কম। এছাড়াও চকোলেট এবং অন্যান্য মিষ্টান্নের ব্যাপক জনপ্রিয়তার ফলে সাজ শিল্পের পরিসর অনেক সংকুচিত হয়ে এসেছে।[২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "চিনির হাতি-ঘোড়ার ঐতিহ্যে মানিকগঞ্জের বৈশাখী মেলা"বাংলা ট্রিবিউন। ১০ এপ্রিল ২০১৮। 
  2. দাস, মনোনেশ (১৫ এপ্রিল ২০১৭)। "চকলেট আগ্রাসে ধুঁকছে সাজ শিল্প"ঢাকা টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ১১ মে ২০২৪