ব্যবহারকারী:Kaushik sur/বেলজীয় জাহাজ এ৪

এটি একটি ছোট মারসি ক্লাস নৌ ট্রলার যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বেলজিয়াম দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল। এটি প্রকৃত পক্ষে এইচএম জন এবস নামে ব্রিটিশ রয়্যাল নেভির নির্মিত। জাহাজটি ১৯৪০ সালের মে মাসে বেলজীয় স্বর্ণ স্থানান্তরের জন্য বিখ্যাত যা যুদ্ধের (Battle of Belgium) সময় ব্রিটেনে সংরক্ষিত ছিল। এই অভিযানের সাফল্য শুধু এটাই না যে এটা নির্বাসিত বেলজিয়াম সরকারকে সামরিক অভিযানের তহবিল যোগান দিয়েছিল উপরন্তু এটি জার্মান দখলদারদের তাদের যুদ্ধ প্রচেষ্টায় সাহায্য করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ থেকে বঞ্চিতও করে। বেলজিয়ামের আত্মসমর্পণের পর এই নৌতরী ও তার সেনারা ১৯৪৬ সালে নিরপেক্ষ স্পেনে আশ্রয় গ্রহণ করে। পরে নৌসেনাদের মুক্তি দেয়া হয় এবং জাহাজটি ভেঙ্গে ফেলা হয়।

Belgian ship A4
ইতিহাস
যুক্তরাজ্য
নাম: John Ebbs (জন এবস)
নির্মাণাদেশ: ১৯১৬
নির্মাতা: Cochranes, Selby, England
অভিষেক: ২ অক্টোবর ১৯১৭
অকার্যকর: ১৯২০
নিয়তি: Sold to Belgium
বেলজিয়াম
নাম:
  • Pilote 4 (১৯২০–১৯৩৯, ১৯৪৬)
  • Patrouilleur A4 (১৯৩৯–১৯৪৫)
অর্জন: ১৯২০
ডিকমিশন: ১৯৪৬
নিয়তি: Scrapped in Spain, ১৯৪৮
সাধারণ বৈশিষ্ট্য
প্রকার ও শ্রেণী: Mersey-শ্রেণী naval trawler
টনিজ: ৩৩৪ লং টন (৩৩৯ টন)
দৈর্ঘ্য: ১৪৮ ফু (৪৫ মি)
গভীরতা: ৪.৫ মিটার (১৫ ফু)
ইনস্টল ক্ষমতা: ৬০০ অশ্বশক্তি (৪৫০ কিওয়াট)
গতিবেগ: ৯ থেকে ১০ নট (১৭ থেকে ১৯ কিমি/ঘ; ১০ থেকে ১২ মা/ঘ)
সাধারণ বৈশিষ্ট্য Royal Navy
রণসজ্জা:
সাধারণ বৈশিষ্ট্য Belgian Navy
লোকবল: 27
রণসজ্জা:


পটভূমি সম্পাদনা

পাইলট ৪, Pilote 4 ( পরবর্তীতে নাম Patrouilleur A4) ১৯২০ সালে বেলজিয়াম নৌবাহিনী কতৃক ক্রয় করা হয় যা আগে ব্রিটিশ রয়্যাল নেভিতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এইচএম জন এবস (HMS John Ebbs (FY3566)) নামে ব্যবহার করা হয়েছে। এটি নর্থ ইয়র্কশায়ারের সেলবেতে কোচ্রান্স (একটি জাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান) নির্মিত একটি মারসি শ্রেণীর জাহাজ যা ২ অক্টোবর ১৯১৭ সালে চালু করা হয়। ৩৩৯ টন ওজনের এই জাহাজটি ১৪৮ ফুট (৪৫ মিটার) লম্বা এবং এর উচ্চতা ছিল ৪.৫ মিটার (১৫ ফুট)। এর ইঞ্জিন ৬০০ হর্সপাওয়ার (৪৫০ কিলোওয়াট) শক্তি উৎপাদনে সক্ষম। এটি ঘণ্টায় ৯ থেকে ১০ নট (১৭ থেকে ১৯ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা) গতিতে চলতে পারে। বেলজিয়াম নৌবাহিনী নিয়ন্ত্রণ কক্ষে ২টি মাক্সিম মেশিনগান ও জাহাজের সামনে একটি ৪৭ মিমি ট্যাঙ্ক প্রতিরোধী বন্দুক বসিয়ে একে সজ্জিত করে। এটিকে ১৯৩৯ সালে ভেঙ্গে ফেলার চিন্তা করা হয়েছিল কিন্তু জার্মান আগ্রাসনের ফলে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির ক্রমাবনতি ঘটায় সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে বেলজীয় জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয় একে পুনরায় চালু করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায়ে বেলজিয়ামের নিরপেক্ষ অবস্থানের কারণে জাহাজটির চারিদিকে বড় করে বেলজিয়ামের পতাকা একে দেয়া হয় এবং সাদা কালিতে বেলজিয়াম লিখে দেয়া হয় যাতে করে একে যুদ্ধ জাহাজ ভেবে কেউ ভুল না করে। পরবর্তীতে ১০ মে ১৯৪০ সালে বেলজিয়াম জার্মানি দ্বারা আক্রান্ত হলে এতে পুনরায় রঙ করা হয়।

বেলজীয় স্বর্ণ স্থানান্তর সম্পাদনা

যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বেলজিয়াম বেলজা (Belga) নামে একটি স্বর্ণ ভিত্তিক মুদ্রা ব্যবস্থা চালু করে যা বেলজীয় ফ্রাংক এর সাথে সমান্তরালে চলতে থাকে। বেলজা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য ব্যবহার করা হত এবং এর দ্বারা বোঝানো হতো ১৯৪০ সালের মধ্যে বেলজিয়ামের জাতীয় ব্যাঙ্কের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ স্বর্ণের মজুদ ছিল যা প্রায় ৬০০ টনের সমান। ১৯৩০ সালের দিকে আন্তর্জাতিক উত্তেজনা তীব্রতর হতে থাকায় বেলজীয় সরকার তার বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ মজুদ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডায় স্থানান্তরিত করে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে বেলজার মূল্য ধরে রাখার জন্য বেশ কিছু স্বর্ণ তারা দেশে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হয়। যখন জার্মানি আক্রমণের জন্য সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে ১৯৪০ সালের মে মাসে বেলজিয়ামে প্রবেশ করে তখনও ওস্টেন্ডের বন্দরে ব্যাঙ্কের অফিসে ৪০ টন সোনা মজুদ ছিল। ঐ সময় লেফটেন্যান্ট ভ্যান ভারেনবার্গের নেতৃত্বে বন্দরে উপস্থিত একমাত্র ব্যবহারযোগ্য জাহাজ ছিল এ৪। ১৯৪০ সালের ১৯ মে জাহাজটিতে ঐ স্বর্ণ মজুদ করে, ডানকির্ক (বেলজীয় সীমান্তবর্তী উত্তর ফ্রান্সের একটি শহর) এড়িয়ে (যেহেতু সেখানে জার্মান বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ দল লাফটওয়াফে বোমা বর্ষণ করছিল) পি১৬ জাহাজটিকে সাথে নিয়ে (যাতে বেসামরিক শরণার্থীরা অবস্থান করছিল), ব্রিটিশ উপকূলের দিকে যাত্রা করে। নিরাপত্তার উদ্বেগ থাকায় বন্দরে বন্দরে স্থানান্তরের পর বেলজিয়ামের আত্মসমার্পনের মাত্র ২ দিন আগে ঐ স্বর্ণ ২৬ মে প্লাইমাউথ বন্দরে পৌঁছে । ঐ স্বর্ণ শেষপর্যন্ত ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ডে মজুদ রাখা হয়। এ৪ ইংল্যান্ডে স্বর্ণ স্থানান্তরের জন্য বেলজিয়াম সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী এবং পরবর্তীতে ন্যাশনাল ব্যাংকের গভর্নর হাবার্ট অ্যানসিয়াক্সকেও বহন করে। এই বিপুল পরিমান বেলজীয় স্বর্ণ জার্মান আক্রমণের পূর্বেই উদ্ধার করতে পারায় নির্বাসিত বেলজিয়াম সরকার অন্য্ অনেক নির্বাসিত সরকারের যারা ব্রিটিশ অর্থনৈতিক সমর্থনের ভরসা করেছিল তাদের ন্যায় নিজেদের কার্যক্রম চালাতে সক্ষম হয়।


ফলাফল সম্পাদনা

২৮ মে বেলজিয়াম আনুষ্ঠানিক আত্মসমার্পন করায় এবং ঐ সময় ইংল্যান্ডেও বেলজিয়ামের আনুষ্ঠানিক কোন সরকার না থাকায় এ৪ এর ক্রুরা বেলজিয়ামে ফিরে যাওয়া এড়ানোর জন্য যাতে করে তাদের জার্মান যুদ্ধবন্ধী হতে না হয় তাই তাদের জাহাজ নিরপেক্ষ স্পেনের বিলবাওতে নিয়ে যায় । তারা স্পেনে পৌছায় ২৬ জুন এবং যুদ্ধের বাকি দিনগুলি ওখানেই অবস্থান করে। বেলজিয়াম ১৯৪৬ সালে আবারও জাহাজের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায় এবং ১৯৪৮ সালে জাহাজটি ভেঙ্গে ফেলা হয়। স্বর্ণ স্থানান্তরে ভূমিকার জন্য লেফটেন্যান্ট ভ্যান ভারেনবার্গ বেলজিয়ামের তৃতীয় সর্বোচ্চ পদক অর্ডার অফ লিওপোল্ডে ভূষিত হন।


তথ্যসূত্র সম্পাদনা

[১] [২] [৩] [৪] [৫] [৬] [৭]

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

"Belgian%20gold%20in%20Foreign%20Hands".%20National%20Bank%20of%20Belgium%20Museum.%20Retrieved%2020%20August%202013. Bultinck, Leen. "Belgian gold in Foreign Hands". National Bank of Belgium Museum. Retrieved 20 August 2013.

[http://"Evacuation%20fonds%20BNB"%20%5BEvacuation%20of%20NBB%20funds%5D.%20KLM-MRA%20(in%20French).%20Retrieved%2020%20August%202013. "Evacuation fonds BNB" [Evacuation of NBB funds]. KLM-MRA (in French). Retrieved 20 August 2013.]

  1. ১। Pottinger, James (2006). "HMS John Ebbs". Shetland Life Magazine. Retrieved 20 August 2013.
  2. ২। "A4 ex HMS John Ebbs". Marine Belge (in French). Retrieved 20 August 2013.
  3. ৩। "Photo n° 33893". CEGESOMA (in French). Retrieved 25 August 2013.
  4. ৪। Bultinck, Leen. "Belgian gold in foreign hands". National Bank of Belgium Museum. Retrieved 25 August 2013.
  5. ৫। "Nos marins et l'Espagne". Marine Belge (in French). Retrieved 20 August 2013.
  6. ৬। "A Brief History of Belgian Banknotes and Coins – 1914–1944: Wars and Monetary Upheavals". National Bank of Belgium. Retrieved 25 August 2013.
  7. ৭। Erik, Buyst (November 2011). "Camille Gutt and Postwar International Finance". EH.net (Book review). Economic History Association. Retrieved 13 July 2013.