কলকাতার অর্থনীতি: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
MdsShakil (আলোচনা | অবদান)
Aksh2000 (আলাপ)-এর সম্পাদিত সংস্করণ হতে Al Riaz Uddin Ripon-এর সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণে ফেরত: ধ্বংসাত্মক সম্পাদনা বাতিল
Aksh2000 (আলোচনা | অবদান)
(সম্পাদনা সারাংশ অপসারিত)
ট্যাগ: পুনর্বহালকৃত মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
৩ নং লাইন:
[[চিত্র:KolkataHSBC.JPG|thumb|এইচএসবিসি ভবন, শহরের প্রধান প্রধান টেলেকম পরিষেবার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এইচএসবিসি-এর মতো বহু বহুজাতিক সংস্থা কলকাতার আর্থিক পুনরুজ্জীবনের জন্য দায়ী]]
[[File:Urbana Residential Complex in kolkata.jpg|thumb|right|কলকাতায় নির্নিয়মান বহুতল]]
'''কলকাতার অর্থনীতি''' [[ভারত]] তথা [[পশ্চিমবঙ্গ]] রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থব্যবস্থা। [[কলকাতা]] [[পূর্ব ভারত]] তথা সমগ্র [[উত্তর-পূর্ব ভারত|উত্তর-পূর্বাঞ্চলের]] প্রধান ব্যবসায়িক, বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র এবং যোগাযোগের প্রধান বন্দর। [[ভারত|ভারতের]] দ্বিতীয় বৃহত্তম স্টক এক্সচেঞ্জ<ref>[http://www.cse-india.com/cse_factbook.htm CSE Factbook] {{ওয়েব আর্কাইভ|ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20060419055547/http://cse-india.com/cse_factbook.htm |তারিখ=১৯ এপ্রিল ২০০৬ }}. Calcutta Stock Exchange Association Ltd.</ref> [[কলকাতা স্টক এক্সচেঞ্জ]] কলকাতাতেই অবস্থিত। এছাড়াও দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্দর, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং উচ্চশিক্ষিত কর্মশক্তি সরবরাহকারী একাধিক কলেজের অবস্থান এই শহরেই। কলকাতা ভারত উপমহাদেশের অন্যতম দরিদ্র শহর। এ শহরের প্রায় চার ভাগের এক ভাগই দরিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে। কলকাতা দক্ষিণ এশিয়ায় মুম্বাই,ঢাকা, দিল্লি, করাচী,পর চট্টগ্রামের3rd পর ৬ষ্ঠ বৃহৎ অর্থনীতির শহর।২০২০ সালের হিসাবে, কলকাতার জিডিপি ৫২$177 বিলিয়ন (Nominal) মার্কিন ডলার। এছাড়া কলকাতার পিপিপি ১২০$264 বিলিয়ন (PPP) মার্কিন ডলার।কলকাতা শহরের অর্থনীতি প্রায় চট্টগ্রাম শহরের অর্থনীতির সমান।{{cn}}ডলার।
 
অনেকগুলি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইউনিট ও বৃহৎ ভারতীয় কর্পোরেশনের ব্যবসাকেন্দ্র কলকাতায় অবস্থিত। এগুলির উৎপাদিত দ্রব্যসামগ্রী বিভিন্ন ধরনের। যেমন – ইঞ্জিনিয়ারিং দ্রব্য, ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল সামগ্রী, কেবল, ইস্পাত, চামড়া, টেক্সটাইল, অলংকার, যুদ্ধজাহাজ, অটোমোবাইল, রেলওয়ে কোচ ও ওয়াগন, চা, কাগজ, ফার্মাকিউটিক্যাল, রাসায়নিক, তামাক, খাদ্যসামগ্রী, পাটজাত দ্রব্য ইত্যাদি। বেশ কয়েকটি প্রসিদ্ধ সংস্থার কেন্দ্রীয় কার্যালয় কলকাতায় অবস্থিত। যেমন – [[আইটিসি লিমিটেড]], [[বাটা ইন্ডিয়া]], [[হলদিয়া]] পেট্রোকেমিক্যাল লিমিটেড, [[বিড়লা কর্পোরেশন]], মার্লিন প্রজেক্টস লিমিটেড, বেঙ্গল পিয়ারলেস, ওরিয়েন্ট ফ্যানস, এক্সাইড, বার্জার প্রিন্টস, [[কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড]] ও ন্যাশনাল ইনসিওরেন্স কোম্পানি। কয়েকটি ব্যাংকের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ও কলকাতায়। যেমন – [[ইউকো ব্যাংক]] ও [[ইউনাইটেড ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া]]। এছাড়া [[স্ট্যান্ডার্ড চ্যার্টার্ড ব্যাংক|স্ট্যান্ডার্ড চ্যার্টার্ড ব্যাংকের]] একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দফতর কলকাতায় অবস্থিত।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=Standard Chartered Bank website |ইউআরএল=http://www.standardchartered.com/in/home/aboutus.html |সংগ্রহের-তারিখ=১৮ ডিসেম্বর ২০০৮ |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20060322065948/http://www.standardchartered.com/in/home/aboutus.html |আর্কাইভের-তারিখ=২২ মার্চ ২০০৬ |অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ }}</ref>
 
<ref name = "Telegraph1" >{{ওয়েব উদ্ধৃতি | ইউআরএল = http://www.telegraphindia.com/1061130/asp/frontpage/story_7071031.asp
কলকাতার অধিকাংশ বস্তিবাসীই শহরের ঘরোয়া অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত।<ref>Thomas, 1997, pp. 113-114</ref> সাম্প্রতিক কাল পর্যন্ত দেখা ট্রেন্ড অনুসারে নমনীয় উৎপাদন কলকাতার একটি বৈশিষ্ট্য। ঘরোয়া সেক্টরগুলি মোট শ্রমশক্তির ৪০% সরবরাহ করে থাকে।<ref>[https://e-revistes.upc.edu/bitstream/2099/701/1/res02-1.htm Globalizing Cities: A New Spatial Order, Mark D. Bjelland et al.]</ref>
উদাহরণস্বরূপ, ২০০৫ সালের হিসাব অনুযায়ী, কলকাতার ২,৭৫,০০০ [[কলকাতার হকার|হকার]] মোট ৮,৭৭২ কোটি ভারতীয় টাকার (প্রায় ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) লেনদেন করেন।<ref name = "Telegraph1" >{{ওয়েব উদ্ধৃতি | ইউআরএল = http://www.telegraphindia.com/1061130/asp/frontpage/story_7071031.asp
| শিরোনাম = Hawkers stay as Rs. 265 crore talks | সংগ্রহের-তারিখ = 2008-02-16 | শেষাংশ =Ganguly | প্রথমাংশ = Deepankar| কর্ম =| প্রকাশক = ''The Telegraph'', 30 November 2006}}</ref>
 
ইংরেজদের বসতি পত্তনের আগে থেকেই আদি কলকাতা অঞ্চলটি শেঠ, বসাক প্রভৃতি তন্তুবায় ব্যবসায়ীদের ব্যবসাকেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠে। পরে তাদের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে ইংরেজ বণিকরা এই অঞ্চলে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করেন। অষ্টাদশ শতকের মধ্যভাগ থেকে দেখা যায় বাঙালি ব্যবসায়ীরা কৌলিক পেশার বদলে নতুন যুগের সঙ্গে সায্যজ্যপূর্ণ ব্যবসায় নামতে শুরু করেছেন। সেযুগের বিশিষ্ট বাঙালি ব্যবসায়ীদের মধ্যে লক্ষ্মীকান্ত ধর, বৈষ্ণবচরণ শেঠ, মতিলাল শীল, প্রাণকৃষ্ণ লাহা প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। এঁরা জাতিতে ছিলেন তাঁতি, সুবর্ণবণিক অথবা কায়স্থ। ঊনবিংশ শতকে ব্রাহ্মণরাও এই পেশায় আসেন। [[দ্বারকানাথ ঠাকুর]] ছিলেন সেযুগের বিশিষ্ট ব্রাহ্মণ বণিক।<ref>কলকাতা: এক পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস, অতুল সুর, সুরজিৎচন্দ্র দাস প্রকাশিত, ১৯৮১, পৃষ্ঠা ২০৮-২২৬</ref>
 
বিংশ শতাব্দীর ষাট থেকে নব্বই দশকের মধ্যবর্তী সময়কাল কলকাতার অর্থনৈতিক ইতিহাসে এক অবক্ষয়ের যুগ। [[ভারত বিভাগ]], তারসঙ্গে আগত শরণার্থীর স্রোত, ট্রেড-ইউনিয়নগুলির বাড়বাড়ন্ত, মূলধনের অভাব, [[বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ]], [[নকশাল]] আন্দোলন, ঘন ঘন ধর্মঘট ও বনধ্, পাট শিল্পে মন্দা, পরিকাঠামো ও ব্যবস্থাপনার অবনতি কলকাতার অর্থব্যবস্থাকে প্রায় ধ্বংস করে দেয়। আশির দশকে এই তীব্র অবক্ষয়ের কারণে কলকাতাকে বলা হত ‘মৃত্যুপথযাত্রী নগরী’।<ref>[http://service.spiegel.de/cache/international/spiegel/0,1518,387701,00.html Spiegel online article]</ref> কিন্তু এর পর থেকেই কলকাতায় সুদিন একটু একটু করে ফিরতে থাকে। [[ভারতের অর্থনীতি|ভারতীয় অর্থব্যবস্থায়]] উদারীকরণ কলকাতার ভাগ্য ফিরিয়ে দেয়। তারাতলা, কল্যাণী, উলুবেড়িয়া, ডানকুনি, কসবা, হাওড়া প্রভৃতি বৃহত্তর কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে ছোটো বড় নানা ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট গড়ে ওঠে। বানতলায় গড়ে ওঠে সুবিশাল চর্মনগরী। রফতানি প্রক্রিয়াকরণ ক্ষেত্র গড়ে ওঠে ফলতায়। এছাড়াও কিছু বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান, যেমন দেশের প্রথম খেলনা পার্ক, রত্ন ও গহনা পার্কও স্থাপিত হয়।
 
পশ্চিমবঙ্গের সরকার প্রত্যক্ষ বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগের সপক্ষে। এই পুঁজি মূলত আসে সফটওয়্যার ও ইলেকট্রনিক্স-এর ক্ষেত্রে।<ref name="Dasgupta, 2002"/> কলকাতা দেশের [[তথ্য প্রযুক্তি]] শিল্পের অন্যতম কেন্দ্র। কলকাতা এবং তার পার্শ্ববর্তী বিধাননগরের সম্প্রসারিত অংশ সেক্টর-ফাইভ ও রাজারহাট নিউ টাউন আজ দেশের প্রধানতম আইটি গন্তব্যগুলির মধ্যে একটি।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=Frontline article |ইউআরএল=http://www.hinduonnet.com/fline/fl2205/stories/20050311002411900.htm |সংগ্রহের-তারিখ=১৮ ডিসেম্বর ২০০৮ |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20080618052037/http://www.hinduonnet.com/fline/fl2205/stories/20050311002411900.htm |আর্কাইভের-তারিখ=১৮ জুন ২০০৮ |অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ }}</ref> [[আইবিএম]], [[এইচএসবিসি]], [[এবিএন অ্যামরো]] ইত্যাদি একাধিক বহুজাতিক সংস্থা সহ বহু ব্যবসাক্ষেত্র আজ কলকাতায় তাদের অফিস স্থাপন করেছে। [[স্কাইটেক]], টেল আইটি নেটওয়ার্ক, ডব্লিউডিসি, গ্রেট মিডিয়া টেকনোলজিস, ভিসন কম্পটেক ও পোলারিস নেটওয়ার্কের মতো বহু কলকাতা-ভিত্তিক সংস্থাগুলি স্থাপিত হয়। এগুলি ছাড়াও অন্যান্য বড় বড় ভারতীয় সফটওয়্যার ফার্ম যেমন [[উইপ্রো]], [[টিসিএস]], এমবিটি, [[কনিজেন্ট]] প্রভৃতি কলকাতাকে ব্যবসাকেন্দ্র করে তোলেন। কলকাতা তথা সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের এই সাম্প্রতিক আর্থিক উন্নতির আজ একে দেশের তৃতীয় বর্ধনশীল অর্থব্যবস্থায় পরিণত করেছে।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি |শিরোনাম=Remarks of Consul General Henry V. Jardine to The Indo-American Chamber of Commerce “INDO-U.S. RELATIONS – RISING TO NEW HEIGHTS” October 19, 2005 |ইউআরএল=http://calcutta.usconsulate.gov/19oct2005.html |সংগ্রহের-তারিখ=১৮ ডিসেম্বর ২০০৮ |আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20060515214213/http://calcutta.usconsulate.gov/19oct2005.html |আর্কাইভের-তারিখ=১৫ মে ২০০৬ |অকার্যকর-ইউআরএল=হ্যাঁ }}</ref> শহরের আইটি সেক্টরগুলির বার্ষিক বৃদ্ধির হার আজ ৭০%, যা সারা ভারতের তিনগুণ।<ref>Datta, T.[http://news.bbc.co.uk/2/hi/programmes/crossing_continents/4830762.stm "Rising Kolkata's winners and losers".] BBC Crossing Continents article. 22 March, 2006</ref> [[দুর্গাপুর|দুর্গাপুরের]] অন্ডালে প্রস্তাবিত এয়াট্রোপোলিশ বা বিমাননগরী; গভীর সমুদ্র বন্দর; [[পুরুলিয়া]], [[মালদা]], [[কোচবিহার]] ইত্যাদি স্থানে একাধিক নতুন বিমানবন্দর; কলকাতা বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণ ও দ্বিতীয় বিমানবন্দর; নিউ টাউনে অত্যাধুনিক শহর; [[শিলিগুড়ি]], [[হাওড়া]] প্রভৃতি স্থানে আধুনিক উপনগরী; বর্ধমান শহরের ব্যাপক উন্নতি; মেট্রো রেলওয়ের সম্প্রসারণ ইত্যাদির পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন রাজ্যের তথা কলকাতার অর্থনৈতিক মানচিত্রকে খোলনলচে বদলে দিয়েছে এই একবিংশ শতকে।<ref>[http://www.telegraphindia.com/1060331/asp/frontpage/story_6038121.asp Bengal on IT highway.] The Telgraph. 31 March 2006.</ref>