বিমলা প্রসাদ চলিহা

ভারতীয় রাজনীতিবিদ

বিমলা প্রসাদ চলিহা (ইংরেজি: Bimala Prasad Chaliha; অসমীয়া: বিমলা প্রসাদ চলিহা) ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস দলের একজন নেতা ও অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।[২]। ১৯৭১ সনে তাকে পদ্মবিভূষণ পুরস্কার দ্বারা সন্মানিত করা হয়।

অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী
বিমলা প্রসাদ চলিহা
অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী
আসামের মুখ্যমন্ত্রী[১]
কাজের মেয়াদ
২৮ ডিসেম্বর, ১৯৫৭ – ৬ নভেম্বর, ১৯৭০[১]
নেতাভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
পূর্বসূরীবিষ্ণুরাম মেধি
উত্তরসূরীমহেন্দ্র মোহন চৌধুরী[১]
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম২৬ মার্চ, ১৯১২
শিবসাগর
মৃত্যু২৫ ফেব্রুবারী, ১৯৭১
রাজনৈতিক দলভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
ধর্মহিন্দু
পুরস্কার পদ্মবিভূষণ (১৯৭১)

জন্ম ও বংশ পরিচয় সম্পাদনা

১৯১২ সনে ২৬ মার্চ তারিখে অসমের শিবসাগর জেলায় বিমলা প্রসাদ চলিহা জন্মগ্রহণ করেন।[২] তার পিতার নাম কালিপ্রসাদ চলিহা ও মাতার নাম নিকুঞ্জলতা। পিতা কালিপ্রসাদ ছিলেন শিবসাগর ন্যায়ালয়ের একজন প্রখ্যাত উকিল। মাতা নিকুঞ্জলতা ছিলেন মণিরাম দেওয়ানের নাতি।।[২] তাদের পরিবার ছিল অভিজাত শ্রেনীর বংশ ও তাদের চা-বাগান ছিল। কালিপ্রসাদ চলিহার পাঁচটি পুত্র ও পাঁচটি কন্যা ছিল।[২]

শিক্ষা সম্পাদনা

বিমলা প্রসাদ চলিহা বাল্যকালের শিক্ষা শিবসাগর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সম্পূর্ণ করেন। ১৯২৮ সনে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তারপর তিনি কলকাতার সি.টি কলেজে নামভর্তি করেন যদিও শিক্ষা অসমাপ্ত করে অসমে ফিরে আসেন ও কংগ্রেস দলে যোগদান করেন। এখানেই তার শিক্ষাজীবন সমাপ্ত হয়।

রাজনৈতিক জীবন সম্পাদনা

১৯৩০ সনে বিমলা প্রসাদ চলিহার রাজনৈতিক জীবন আরম্ভ হয়। ১৯৩১ সনে মহাত্মা গান্ধী জনসাধারনকে আহ্বান জানিয়েছিলেন যে গ্রামীণ তাঁত উন্নত হওয়া প্রয়োজন। ১৯৩৪ সনে মহাত্মা গান্ধী অসমের শিবসাগরে আসেন। সেই সময়ে বিমলা প্রসাদ চলিহা একটি উন্নত শ্রেনীর তাঁত প্রস্তুত করে মহাত্মা গান্ধীকে দেখান। উন্নত শ্রেণীত তাঁত দেখে মহাত্মা গান্ধী মোহিত হন ও বিমলা প্রসাদ চলিহাকে আঞ্চলিক শিল্পের প্রশিক্ষন নেওয়ার জন্য বিহারে পাঠান। তারপর তাকে সর্বভারতীয় স্পীনার এসোশিয়েন অসম শাখার সম্পাদক রুপে নিযুক্তি প্রদান করা হয়। ১৯৪১ সনে বিমল প্রসাদ চলিহা ব্যক্তিগত সত্যাগ্রহ ও ১৯৪১ সনের আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। ১৯৪২ সনে তিনি আঞ্চলিক সংগঠন শক্তিশালী ভাবে গড়ে তোলার জন্য মনোযোগ দেন। আন্দোলনে যোগদান করার জন্য ১৯৪২ সনে ১৯৪৪ সন পর্যন্ত তার কারাবাস হয়েছিল। ১৯৮৬ সনের সাধারণ নির্বাচনে শিবসাগর পশ্চিম সমষ্টি থেকে বিমলা প্রসাদ চলিহা নির্বাচিত হয়েছিল। ভারত স্বাধীন হওয়ার পর গোপীনাথ বরদলৈ-এর নেতৃত্বে অসমে স্বাধীন মন্ত্রিসভা গঠিত হয়। এই মন্ত্রিসভায় তাকে গ্রাম উন্নয়ন বিভাগ পরিচালনার দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৪৭-৪৮ সন পর্যন্ত তিনি রাজ্যিক বিধান সভার সংসদী সচিব ছিলেন। তিনি অসম এপেক্স ব্যাঙ্কঅসম কুটির শিল্পের প্রথম চেয়ারম্যান রুপে নিযুক্তি লাভ করেন। ১৯৫০ সনে বিমলা প্রসাদ চলিহা অসম প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও ১৯৫২ সনে সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সনে তিনি শিবসাগর সমষ্টি থেকে লোকসভার সদস্য রুপে নির্বাচিত হয়েছিল। তাছাড়াও তিনি নগা শান্তি মিশনের সদস্য ছিলেন।

মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সম্পাদনা

১৯৫৭ সনের ২৮ ডিসেম্বর তারিখে বিমলা প্রসাদ চলিহা অসমের মুখ্যমন্ত্রী পদে নিযুক্তি লাভ করেন। এই পদে তিনি ১৯৭১ সনের ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ছিলেন। এই সময়সীমার মধ্যে তিনি নানান সমস্যার সন্মুখীন হন । এরমধ্যে ১৯৬০ সনের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ সনের চীনা আক্রমণ, ১৯৬৫ সনের পাকিস্তান আক্রমণ, তৈল শোধনাগার আন্দোলন, ১৯৬৬ সনের মিজো বিদ্রোহ, মেঘালয় স্থাপনের প্রচেষ্টা, পাকিস্তানি অনুপ্রবেশ ইত্যাদি প্রধান ছিল।

মৃত্যু সম্পাদনা

১৯৭১ সনের ২৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে বিমলা প্রসাদ চলিহার মৃত্যু হয়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Assam Legislative Assembly - Chief Ministers since 1937"। Assam Legislative Assembly, Dispur, Guwahati। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ২০, ২০১২ 
  2. সমীন কলিতা (২০০৭)। অসমর মুখ্যমন্ত্রীসকল, পঞ্চম প্রকাশ। রাজেন্দ্র মোহন শর্মা, চন্দ্র প্রকাশ পাণবজার। পৃষ্ঠা ৬১, ৬২, ৬৩।