ফরহাদ দারিয়া
ফরহাদ দারিয়া নাসির (পশতু: فرهاد دريا, ফার্সি: فرهاد دریا, জন্ম: ২২ সেপ্টেম্বর ১৯৬২) একজন আফগান গায়ক, সুরকার এবং সংগীত প্রযোজক। তিনি আফগানিস্তানের জন্য জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) জাতীয় শুভেচ্ছাদূত হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং মিউজিক ভিলেজ এবং অন্যান্য কিছু সংখ্যক দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত রয়েছেন।[১] তিনি কেবল তাঁর সংগীতই নয়, দেশপ্রেমের জন্যও স্নেহ অর্জন করেছেন। তাঁর একটি অনুরাগী বেস রয়েছে, যা তার জন্মস্থান আফগানিস্তান থেকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য অংশ, পাশাপাশি মধ্য এশিয়া এবং তাজিকিস্তান পর্যন্ত ছড়িয়ে রয়েছে। তিনি দরিয়া দারি, পশতু, উজবেক, ফারসি হিন্দি-উর্দু এবং ইংরেজিসহ বিভিন্ন ভাষায় গান করেন।[২]
ফরহাদ দারিয়া فرهاد دريا | |
---|---|
প্রাথমিক তথ্য | |
জন্মনাম | ফরহাদ নাছির |
জন্ম | কাবুল, আফগানিস্তান | ২২ সেপ্টেম্বর ১৯৬২
ধরন | পপ নৃত্য গজল ধ্রুপদী সংগীত |
পেশা | গায়ক, সুরকার, মানবাধিকারকর্মী, শান্তি দূত |
বাদ্যযন্ত্র | হরমোনিয়াম, কীবোর্ড, গিটার |
কার্যকাল | ১৯৮০–বর্তমান |
লেবেল | বিভিন্ন |
প্রাথমিক এবং ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা
দরিয়ার জন্ম আফগানিস্তানের কাবুলে এবং তার পিতা-মাতা জাতীয়তার দিক দিয়ে পশতুন। তিনি শের খান নাসিরের নাতি।[৩] তিনি কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ফারসি সাহিত্য অধ্যয়ন করেছিলেন। এই সময়ে, তিনি আবর (মেঘ) ছদ্মনামে অন্যান্য শিল্পীদের জন্য সংগীত রচনা করেছিলেন এবং আফগান এবং ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীত বাজানো শুরু করেছিলেন। পরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে আফগান সশস্ত্র বাহিনীতে ভর্তি হন।
১৯৯০ সালে তিনি জার্মানিতে পাড়ি জমান এবং আবার গান শুরু করলেন। প্রাগ এবং হামবুর্গ ভ্রমণ করার পরে, দরিয়া প্যারিসে পৌঁছেছিলেন, যেখানে তিনি সুলতানা ইমামের সাথে তার সাক্ষাৎ হয়। ১৯৯৩ সালে দু'জনের বিয়ে হয়েছিল এবং ১৯৯৫ সালে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ভার্জিনিয়ায় চলে আসেন। এক বছর পরে তারা হিজরান দারিয়া নামে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়।
পেশা সম্পাদনা
১৯৮০ সালে আফগানিস্তানের টেলিভিশন নেটওয়ার্কে দরিয়ার টেলিভিশন আত্মপ্রকাশের পর থেকে তিনি দুই ডজনেরও বেশি অ্যালবাম প্রকাশ করেছেন। তিনি আসাদ বাঁদিয়ের সাথে গোরোহ-ই-বরন (অর্থ "বৃষ্টি ব্যান্ড") নামে একটি ব্যান্ড প্রতিষ্ঠিত করেন , যা ১৯৮০ সালে সব থেকে বহুল পরিচিত আফগান ব্যান্ডের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। তাঁর পুরো কেরিয়ার জুড়ে দরিয়া প্রবাসে গাওয়া অ্যালবামের প্রায় ২০ মিলিয়ন কপি বিক্রি করে প্রশংসিত হয়েছেন। যার মধ্যে অনেকগুলো সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধ এবং তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত জাতির পরিণতিতে ঘটে যাওয়া দুর্ভাগ্য নিয়ে কাজ করেণ। বেশিরভাগ সংগীতের লক্ষ্য আফগানদের তাদের দেশে শান্তি ও ঐক্য আনতে সহায়তা করা[১] এবং জাতীয় ঐক্য মূলমন্ত্র নিয়ে কাজ করেণ।
তিনি তার সালাম আফগানিস্তান অ্যালবাম ২০০৩ সালে মার্চ এবং ২০০৪ সালে মিউজিক ভিডিওগুলোর একটি ডিভিডি প্রকাশ করেছিলেন।
২০০৬ সালের সেপ্টেম্বরে, জার্মান সংগীতশিল্পী পিটার মাফয়ের সহযোগিতায় মাফয়ের অ্যালবাম বেজেগুনজেন - এইন অ্যালিয়ানজ ফার কিন্ডারের অংশ হিসাবে দরিয়ার নতুন একক সালামালেক প্রকাশিত হয়েছিল। এটি ছিল দরিয়ার প্রথম রক গান।
২০০৭ এর আগস্টে, দরিয়া তার নতুন অ্যালবাম এইচএ! শেষ করেছেন এবং আফগানিস্তানে মুক্তি পেয়েছিল, এরপরে ২০০৮ সালের মার্চ মাসে জার্মানিতে মুক্তি পায়। এইচএ অ্যালবাম থেকে তাঁর গান দোহেল বেজন (নাজদেক শোদন) ভিডিওটির ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে আফগানের জাতীয় টেলিভিশনে প্রিমিয়ার হয়েছিল।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] সেই বছরের পরে, দরিয়ার নতুন অ্যালবাম ইয়াহু প্রকাশিত হয়েছিল।
পুরস্কার সম্পাদনা
- ২০০৩: আফগানিস্তান: বর্ষসেরা সেরা গায়ক
- ২০০৫: ডেনমার্ক: বছরের সেরা গায়ক
- ২০০৬: মানবাধিকার কমিশন কর্তৃক মানবাধিকার পুরস্কার
- ২০০৮: আফগানিস্তান: বছরের সেরা অ্যালবাম
- ২০০৯: আফগানিস্তান: বর্ষসেরা সেরা গায়ক
- ২০১১: দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত: বছরের সেরা গায়ক
- ২০১২: ভারত: "সুপার স্টার" এটিএন পুরস্কার
ডিস্কোগ্রাফি সম্পাদনা
স্টুডিও অ্যালবাম (কেবলমাত্র আফগানিস্তানে প্রকাশিত)
- রাহে রাফতা (راه رفته) (১৯৮১)
- আফগান লোক সংগীত (محلي) (১৯৮২)
- জারো জেন (زارو جانه) (১৯৮২)
- বারান (باران) (১৯৮৩)
- গজল (غزل) (১৯৮৫)
- বলবোল আওড়া (بلبل آواره) (১৯৮৬)
- মাজদীগার (مازديگر) (১৯৮৮)
- বাজমে গজল (بزم غزل) (১৯৮৮)
- মেহেরবাণী (مهربانی) (১৯৮৯)
স্টুডিও অ্যালবাম (আন্তর্জাতিক প্রকাশ)
- বেগম জান (بیگم جان) (১৯৯২)
- তেরি সুরত (तेरी सूरत / تیری صورت)
- আফগানিস্তান (افغانستان) (১৯৯৫)
- শকর (شكر)(১৯৯৭)
- ইন ফরেইন ল্যান্ড (ر سرزمين بيگانه) (১৯৯৯)
- কাবিলা-এ-আশিক (قبیلهء عاشق) (২০০০)
- গোলম গোলম (لم گُلم) (২০০০)
- সালাম আফগানিস্তান (سلام افغانستان) (২০০৩)
- হা! (ها!) (২০০৭)
- ইয়াহু (২০০৮)
কেবলমাত্র ভিডিও প্রকাশিত
- ইয়ারে বেওয়াফা (یار بی وفا) (১৯৮০)
- আতেছপাঁচা (آتش پرچه) (১৯৯৩)
- লাইভ ইন সান ফ্রান্সিসকো (كنسرت سانفرانسيسكو) (১৯৯৬)
- ইউরোপ লাইভ (১৯৯৯)
সংকলন
- লিসেন টু দ্য ব্যানড (২০১০)
- দ্য রউথ গাইড টু দ্য মিউজিক অফ আফগানিস্তান (২০১০)
চলচ্চিত্রের তালিকা সম্পাদনা
দরিয়া ২০০৭ সালে মিতাক কাজিমির একটি চলচ্চিত্র থ্রু হিয়ার আইসের জন্য অতিরিক্ত স্কোরিং এবং গানের কথা লিখেছিলেন।[৪][৫]
দারিয়া ইন ফরেন ল্যান্ড (১৯৯৮) চলচ্চিত্রের জন্য আবহ সঙ্গীত তৈরি করেছিলেন।[৬]
তথ্যসূত্র সম্পাদনা
- ↑ ক খ "Musician And UN Goodwill Ambassador Named Afghan 'Person Of The Year'"। Radio Free Europe/Radio Liberty। ২৯ মার্চ ২০১১। ১৬ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০১৪।
- ↑ "Lyrics - Farhad Darya"। Afghan Lyrics। ২০০৩। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১১।
Teri Soorat (Hindi)
- ↑ Farhad Darya فرهاد دریا Retrieved 1 December 2017. ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১০ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে
- ↑ Through Her Eyes Retrieved 9 March 2019.
- ↑ Through Her Eyes IMDb. Retrieved 1 December 2017.
- ↑ Review of In Foreign Land at Afghanland ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ নভেম্বর ২০০৭ তারিখে Retrieved 1 December 2017.