প্রভাস রায় (ইংরাজী: Pravas Roy ) (জন্ম- ১৪ এপ্রিল,১৯০৭ - মৃত্যু- ২৩ মে, ১৯৯১) স্বদেশী ও খিলাফত আন্দোলনে যুক্ত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ।[১]

প্রভাস রায়
প্রভাস রায়
জন্ম(১৯০৭-০৪-১৪)১৪ এপ্রিল ১৯০৭
বুড়ুল, দক্ষিণ ২৪ পরগণা পশ্চিমবঙ্গ
মৃত্যু২৩ মে ১৯৯১(1991-05-23) (বয়স ৮৪)
মাতৃশিক্ষায়তনবিদ্যাসাগর কলেজ
পেশাস্বদেশী ও খিলাফত আন্দোলনে যুক্ত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব
পিতা-মাতাসুরেন্দ্রনাথ রায় (পিতা)

সংক্ষিপ্ত জীবনী সম্পাদনা

প্রভাস রায়ের জন্ম ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দের ১৪ এপ্রিল (১ বৈশাখ ১৩১৪ বঙ্গাব্দ) পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বুড়ুলে। পিতার নাম সুরেন্দ্রনাথ রায়। স্কুলের পড়াশোনা বুড়ুল হাই স্কুলে। কৈশোরেই তিনি স্বদেশী আন্দোলন ও ঐতিহাসিক খিলাফত আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। স্কুলে ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে তিনি শিক্ষক হিসেবে পেলেন চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহের অন্যতম সংগঠক মাস্টারদা সূর্য সেনের সহযোগী অনুরূপচন্দ্র সেনকে। তার সংস্পর্শে এসে বিপ্লবী আন্দোলনে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। [২] ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে অনুরূপচন্দ্র সেন গ্রেপ্তার হন এবং সেই সময় তার বিরুদ্ধেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্রাবস্থায় তিনি কলেজ থেকে গ্রেফতার এড়িয়ে পালিয়ে যান। ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে মাস্টারদা'র সঙ্গে তার পরিচয় হয় ।১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের পরই তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে তিনি আত্মগোপন করে থাকলেও ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে ধরা পড়েন। কারাবাসের সময় ভবানী সেন, ধরণীধর গোস্বামী, আবদুল রেজ্জাক খাঁ প্রমুখের কাছে মার্কসবাদের শিক্ষা নেন।

রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপ সম্পাদনা

১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে জেল হতে মুক্ত হয়ে শ্রমিক ও কৃষক আন্দোলন আত্মনিয়োগ করেন । ওই বছরই কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ পান। আবদুল মোমিন, নিত্যানন্দ চৌধুরী প্রমুখের সঙ্গে বিড়লাপুর, বজবজ, মেটিয়াবুরুজ চটকল, সূতাকল শ্রমিকদের আন্দোলন সংগঠিত করেন। পার্টির নির্দেশে ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত চব্বিশ পরগনা জেলা কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন । ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি কংগ্রেস ছাড়েন এবং সেই বছরই কাকদ্বীপ, সন্দেশখালি প্রভৃতি স্থানে কৃষকদের ঐতিহাসিক তেভাগা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। সহকর্মী হিসাবে কংসারী হালদারও ছিলেন। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে কমিউনিস্ট পার্টি বেআইনি ঘোষিত হলে তিনিও আত্মগোপন করেন; কিন্তু কিছুকাল পরই গ্রেপ্তার হন। ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে পার্টির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহৃত হলে তিনি ছাড়া পান। ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে কমিউনিস্ট পার্টি বিভক্ত হলে তিনি সি.পি .আই.(এম)-এ যোগ দেন এবং চব্বিশ পরগনা জেলা কমিটির সম্পাদক নির্বাচিত হন । দলের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সদস্যও ছিলেন তিনি। ১৯৫২ থেকে ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দ ব্যতিরেকে ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দের সাধারণ নির্বাচন অবধি প্রতিটি নির্বাচনে জয়ী হয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য হয়েছেন । প্রথম ও দ্বিতীয় যুক্তফ্রন্ট এবং প্রথমে ও দ্বিতীয় বামফ্রন্ট মন্ত্রীসভার সদস্য ছিলেন তিনি ।

মৃত্যু সম্পাদনা

প্রভাস রায় ৮৪ বৎসর বয়সে ইংরাজী ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দের ২৩ শে মে (৭ জ্যেষ্ঠ ১৩৯৮ বঙ্গাব্দ) প্রয়াত হন। পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট সরকার তার স্মৃতির উদ্দেশ্যে দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার আমতলায় "প্রভাস রায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং সেন্টার" স্থাপন করে ।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, দ্বিতীয় খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, জানুয়ারি ২০১৯, পৃষ্ঠা ২৩৩, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-২৯২-৬
  2. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৮ এপ্রিল ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মার্চ ২০২০