মহাস্থান প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর

মহাস্থান প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর

মহাস্থানগড় প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর ১৯৬৭ সালে করতোয়া নদীর কিনারা ও মহাস্থানগড়ের টিলা সংলগ্ন এলাকায় প্রতিষ্ঠা করা হয়। মহাস্থানগড়ের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের গুরুত্ব উপলব্ধি করে এই প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরের উদ্যোগ নেয়া হয়। পরে বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সেটি দেখাশোনা করার উদ্যগ নেয়।[২]

মহাস্থানগড় প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর
মহাস্থানগড় জাদুঘর
মানচিত্র
স্থাপিত১৯৬৭
অবস্থানমহাস্থানগড়, বগুড়া, রাজশাহী, বাংলাদেশ
স্থানাঙ্ক২৪°৫৭′৪৫″ উত্তর ৮৯°২০′৩৯″ পূর্ব / ২৪.৯৬২৪৭৬° উত্তর ৮৯.৩৪৪২৬৫° পূর্ব / 24.962476; 89.344265
ধরনপ্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর
সংগ্রহ
  • পাথরে খোদাইকৃত দেব-দেবীর মূর্তি
  • ধ্যানমগ্ন বুদ্ধমূর্তি
  • নকশা করা ইট-পাথরের টুকরো
  • মূল্যবান পাথরের অলংকার
মালিকবাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়[১]

নিদর্শনসমূহ সম্পাদনা

উত্তর অঞ্চলের ঐতিহাসিক স্থানগুলো মহাস্থানগড়, দিনাজপুর, পাহাড়পুর, শেরপুর, রানী ভবানীপুর এলাকা থেকে বিভিন্ন সময়ে উদ্ধার করা প্রাচীন সামগ্রী ধীরে ধীরে জাদুঘরে শোভা পেতে থাকে। হাজার হাজার বছর আগের সোনা, রুপা, লোহা, ব্রোঞ্জ, পাথর, কাঁসাসহ বিভিন্ন মূল্যবান ধাতব পদার্থ ও পোড়ামাটির তৈরি মূর্তি, আত্মরক্ষার জন্য ধারালো অস্ত্র, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ইত্যাদি সামগ্রী শোভাবর্ধন করে মহাস্থানগড় জাদুঘরের।

সংগ্রহ সম্পাদনা

 
জাদুঘরের মূল প্রবেশপথ

জাদুঘরে মহাস্থানগড় ও আশপাশের অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করা অসংখ্য প্রত্নবস্তুর নমুনা রয়েছে। মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও অন্যান্য রাজবংশের অসংখ্য স্মৃতিচিহ্ন এখানে যত্নের সঙ্গে সংরক্ষিত আছে। জাদুঘরে বেশ পুরানো মাটির মূর্তি, বাসনপত্র, স্বর্ণবস্তু, ব্রোঞ্জের সামগ্রী, কালো পাথরের মূর্তি, বেলে পাথরের মূর্তি, মাটি দিয়ে তৈরি খোদাই করা ইট, বিভিন্ন শিলালিপি, মাটি ও অন্যান্য ধাতুর তৈরি বোতাম, কানের ফুল, নাক ফুল, মূল্যবান পাথর, মার্বেল, পোড়া মাটির পুতুল, খেলনা, নানা ধরনের প্রাচীন অলংকারসহ বহু প্রাচীন ও মূল্যবান নিদর্শন রয়েছে।

এছাড়া জাদুঘরের অভ্যন্তরে সংরক্ষরণ করা রয়েছে বিভিন্ন সময়ের সাক্ষ্য বহন করা পোড়া মাটি ও দামি পাথরের একাধিক মূর্তি, শিলালিপি, অলংকার ও ধাতব সামগ্রী। এগুলোর মধ্যে উল্লে¬খযোগ্য কয়েকটি হলো খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতকের পোড়ামাটির দণ্ডয়িমান মূর্তি, ৭ম থেকে ১১শ শতকের পোড়ামাটির দ্রব্য, ১৫শ শতকের আরবি শিলালিপি, ১৮শ শতকের মূল্যবান মার্বেল পাথরের গণেশ, ১১শ শতকের বিঞ্চু , ১২শ শতকের ব্রহ্ম, ৮ম-১২শ শতকের স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রা, ৮ম থেকে ১০ম শতকের অলংকৃত মাটির বল, ৯ম এবং ১০ শতকের অষ্ট ধাতু নির্মিত বালা, বিভিন্ন সময়ের লৌহ নির্মিত দ্রব্যাদি, ১১শ শতকের কালো পাথরের অম্বিকা, ১০ম ও ১১শ শতকের পোড়া মাটির ফলক, ৭ম থেকে ৯ম শতকের বিভিন্ন আকারের ব্রোঞ্জের মূর্তি, চতুর্থ ও পঞ্চম শতকের পোড়ামাটির মূর্তির অংশবিশেষ প্রভৃতি।[৩]

অবকাঠামো সম্পাদনা

জাদুঘরের প্রদর্শন কক্ষের বাইরে রয়েছে সুদৃশ্য বাগান। নানা রঙের ফুলফল গাছের সমারোহ সেখানে। বাইরের চত্বরেও রাখা হয়েছে বেশকিছু প্রত্নতাত্ত্বিক নমুনা। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, গবেষক, বিশেষজ্ঞরা শিক্ষা সফরের জন্য এখানে আসেন। আগতদের জন্য মহাস্থানগড়ের টিলাসংলগ্ন আম বাগানে গড়ে তোলা হয়েছে পিকনিক স্পট।

দর্শনের সময় সম্পাদনা

এ জাদুঘরের গ্রীষ্মকালীন সময়সূচী হলো বেলা ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। দুপুর ১টা থেকে ত্রিশ মিনিট মধ্যাহ্ন বিরতি। আর শীত কালীন সময়সূচী হলো সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা। দুপুর ১টা থেকে ৩০ মিনিট মধ্যাহ্ন বিরতি। মহাস্থানগড় জাদুঘর সপ্তাহের রোববার পূর্ণ দিবস, সোমবার অর্ধ দিবস এবং সরকারি ছুটির দিনগুলোতে বন্ধ থাকে।

চিত্রশালা সম্পাদনা

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর - বাংলাপিডিয়া"। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। 
  2. "শিবগঞ্জ উপজেলা - বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন"মহাস্থান যাদুঘর। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি ও বেসিস। [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. "প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর, মহাস্থান"। ইত্তেফাক গ্রুপ অব পাবলিকেশন্স লিঃ।