নাগচম্পা

উদ্ভিদের প্রজাতি

নাগচম্পা বা প্লুমেরিয়া (যার বৈজ্ঞানিক নাম:  Plumeria pudica- প্লুমেরিয়া পুডিকা) হল  Apocynaceae-অ্যাপোসাইনাস গণের এক প্রজাতির সপুষ্পক উদ্ভিদ। এই উদ্ভিদের আদি নিবাস পানামা, কলম্বিয়া এবং ভেনিজুয়েলা। তবে এটি বর্তমানে ভারতের প্রাকৃতিক পরিবেশে স্বাভাবিকতা লাভ করেছে। গাছটির পাতা খানিকটা চামচ আকারের এবং পাতার অগ্রভাগ কিছুটা কোবরা তথা নাগের  ফনার মত হওয়ায় বাংলায় একে নাগচম্পা বা নাগ চাঁপা বলা হয়। বাংলার নানা স্থানে এটি 'পুদিকা চম্পা', 'প্রেমনলিনী' ও 'কমলিকা' নামেও পরিচিত। সাদা রঙের পাঁচ পাপড়ির মাঝে হলুদ রঙের আভায় ফুলটির সৌন্দর্য নয়নাভিরাম।

নাগচম্পা
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস সম্পাদনা করুন
মহাজগত: সংবাহী উদ্ভিদ (ট্র্যাকিওফাইট)
জগৎ/রাজ্য: উদ্ভিদ (প্লান্টি)
গোষ্ঠী: সংবাহী উদ্ভিদ ট্র্যাকিওফাইট
ক্লেড: সপুষ্পক উদ্ভিদ (অ্যাঞ্জিওস্পার্মস)
ক্লেড: ইউডিকটস
গোষ্ঠী: অ্যাস্টেরিডস (Asterids)
বর্গ: জেনটিয়ানালেস (Gentianales)
পরিবার: অ্যাপোসাইনাসি (Apocynaceae)
গণ: Plumeria
Jacq.[২]
প্রজাতি: P. pudica
দ্বিপদী নাম
Plumeria pudica
Jacq.[২]

বিবরণ সম্পাদনা

দ্রুত বর্ধনশীল নাগচম্পা গাছটির কাণ্ড বেশি শক্ত হয় না। শাখা-প্রশাখাও কম হয় এবং সোজা উপরে বাড়তে থাকে। উচ্চতা গড়ে আট ফুট (২.৪ মি) থেকে দশ ফুটের (৩ মিটার) হয়। শিরা উপশিরাযুক্ত, গাঢ় সবুজ রঙের গাছের পাতা বেশ পুরু লম্বায় ৬ - ৮ ইঞ্চি (১৫- ২০ সেমি) এবং চওড়ায় ১-২ ইঞ্চি (২.৫ - ৫ সেমি) হয়ে থাকে। শাখা-প্রশাখার অগ্রভাগে গুচ্ছ থোকায় দুধের মত সাদা ফুল ফোটে এবং প্রস্ফুটিত গন্ধহীন ফুল বেশ কয়েকদিন গাছে শোভা পায়। ৫ - ৬ দিন পর অবশ্য ঝরে পড়ে। সারা বছরে কমবেশি ফুল দেখা গেলেও সাধারণত ভারতে তথা বাংলায় বর্ষা ও শরতে গাছে অধিক ফুল ফোটে। সব ধরনের মাটিতে, রৌদ্রকরোজ্জ্বল পরিবেশে উঁচু বা মাঝারি উঁচু মাটিতে ভালো জন্মায়। গাছের ডাল কেটে অর্থাৎ কাটিং পদ্ধতিতে সরাসরি মাটিতে বা টবে রোপন করা যায়।

হর্টিকালচার সম্পাদনা

প্লুমেরিয়া গণের গাছের বৈচিত্র্যময়  পাতার কারণে প্লুমেরিয়া পুডিকাকে  সাধারণত 'গোল্ডেন অ্যারো' বা 'গিল্ডেড স্পুন' বলা হয়। থাইল্যান্ডে এক সংকর জাতির উদ্ভিদ হল  'শ্রী সুপাকর্ন' বা 'পিঙ্ক পুডিকা'। ভারতে প্লুমেরিয়া' গণের আরো ভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদের সাদা  পাপড়ির মাঝে হলুদ, লালচে গোলাপি রঙের ফুল দেখা যায় সেটি বাংলায় কাঠগোলাপ বা লাল কাঠগোলাপ (ইংরেজি: Frangipani- 'ফ্রাঙ্গিপানি') নামে পরিচিত।

বায়োকেমিস্ট্রি সম্পাদনা

নাগচম্পা তথা প্লুমেরিয়া পুডিকা গাছ হতে যে ল্যাটেক্স প্রোটিন পাওয়া যায় ইঁদুরের উপর পরীক্ষায় দেখা গেছে যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ উপাদানটিকে দন্তচিকিৎসায়  (পিরিয়ডোনটাইটিসে) ব্যবহারের সম্ভাবনা আছে। [৩]

সাধারণ নাম সম্পাদনা

  • ব্রাইডাল বুকে
  • হোয়াইট ফ্রাঙ্গিপানি
  • ফিডিল লীফ প্লুমেরিয়া
  • ওয়াইল্ড প্লুমেরিয়া
  • বনেরিয়ান ওলেন্ডার
  • থাই চম্পা (উর্দু)
  • নাগ (কোবরা) চম্পা (বাংলা)
  • நாவில்லா அரளி (" নাভিল্লা আরালী ") (তামিল)

গ্যালারি সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Condit, R (২০২০)। "Plumeria obtusa"বিপদগ্রস্ত প্রজাতির আইইউসিএন লাল তালিকা (ইংরেজি ভাষায়)। আইইউসিএন2020: e.T151953739A151953741। ডিওআই:10.2305/IUCN.UK.2019-3.RLTS.T151953739A151953741.en । সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০২১ 
  2. টেমপ্লেট:IPNI
  3. Oliveira, Lucas E. S.; Moita, Lucas A. (এপ্রিল ২০২২)। "Latex proteins from Plumeria pudica reduce ligature‐induced periodontitis in rats" (ইংরেজি ভাষায়): 786–795। আইএসএসএন 1354-523Xডিওআই:10.1111/odi.13803পিএমআইডি 33586328 |pmid= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)