দ্য ডিয়ার হান্টার

দ্য ডিয়ার হান্টার মাইকেল চিমিনো পরিচালিত ১৯৭৮ সালের মহাকাব্যিক যুদ্ধভিত্তিক নাট্য চলচ্চিত্র। এটি ভিয়েতনাম যুদ্ধ লড়াই করা তিনজন স্লাভিক-মার্কিন স্টিলওয়ার্কারকে নিয়ে আবর্তিত। তিনজন যোদ্ধা চরিত্রে অভিনয় করেছেন রবার্ট ডি নিরো, ক্রিস্টোফার ওয়াকেনজন স্যাভেজ এবং পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেছেন জন কাজ্যাল (তার সর্বশেষ চলচ্চিত্র), মেরিল স্ট্রিপ ও জর্জ ডিজুন্ডজা। গল্পটি পেনসিলভেনিয়ার পিটসবার্গের দক্ষিণে মনংগাহিলা নদীর তীরবর্তী ক্লেয়ারটন শহরে এবং ভিয়েতনামের পটভূমিতে বর্ণিত।

দ্য ডিয়ার হান্টার
যুক্তরাজ্যে মুক্তির পোস্টার
ইংরেজি: The Deer Hunter
পরিচালকমাইকেল চিমিনো
প্রযোজক
চিত্রনাট্যকারডেরিক ওয়াশবার্ন
কাহিনিকারডেরিক ওয়াশবার্ন
মাইকেল চিমিনো
লুইস এ. গারফিঙ্কল
কুইন কে. রিডেকার
শ্রেষ্ঠাংশে
সুরকারস্ট্যানলি মেয়ার্স
চিত্রগ্রাহকভিলমস জিগমন্ড
সম্পাদকপিটার জিনার
প্রযোজনা
কোম্পানি
পরিবেশক
মুক্তি
  • ৮ ডিসেম্বর ১৯৭৮ (1978-12-08) (লস অ্যাঞ্জেলেস)
  • ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯ (1979-02-23) (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র)
  • ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯ (1979-02-27) (যুক্তরাজ্য)
স্থিতিকাল১৮৪ মিনিট[১]
দেশমার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাজ্য
ভাষাইংরেজি
রুশ
ভিয়েতনামী
ফরাসি
নির্মাণব্যয়$১৫ মিলিয়ন[২]
আয়$৪৯ মিলিয়ন[২]

চলচ্চিত্রটি লাস ভেগাস ও রুশ রুলেট নিয়ে লুইস এ. গারফিঙ্কল ও কুইন কে. রিডেকারের অসমাপ্ত চিত্রনাট্য দ্য ম্যান হু কেম টু প্লে-এর অবলম্বনে নির্মিত। প্রযোজক মাইকেল ডিলি পাণ্ডুলিপিটি ক্রয় করেন এবং নির্মাতা মাইকেল চিমিনোকে চলচ্চিত্রটি নির্মাণের জন্য নিয়োগ দেন। চিমিনো ডেরিক ওয়াশবার্নকে নিয়ে পাণ্ডুলিপির পুনর্লিখন করেন এবং রুশ রুলেটের উপাদান নিয়ে ভিয়েতনাম যুদ্ধে অন্তর্ভুক্ত করেন। চলচ্চিত্রটিতে পূর্বনির্ধারিত নির্মাণব্যয়ের অধিক ব্যয় হয় ও অধিক সময় লাগে এবং মোট ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে সমাপ্ত হয়। চলচ্চিত্রটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এএমআই ফিল্মস এটি বিশ্বব্যাপী মুক্তি দেয় এবং ইউনিভার্সাল পিকচার্স উত্তর আমেরিকায় পরিবেশনার দায়িত্ব পালন করে।

দ্য ডিয়ার হান্টার সমালোচক ও দর্শকদের কাছ থেকে সমাদৃত হয় এবং চিমিনোর পরিচালনা, অভিনয়শিল্পীদের (বিশেষ করে ডি নিরো, ওয়াকেন, কাজ্যাল, ও স্ট্রিপ) অভিনয় পারদর্শিতা ও এর চিত্রনাট্য, বাস্তবসম্মত বিষয়বস্তু ও গল্প বর্ণনা এবং চিত্রগ্রহণ প্রশংসিত হয়। এটি বক্স অফিসেও সফল হয় এবং বিশ্বব্যাপী ৪৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে। এটি ৫১তম একাডেমি পুরস্কারে নয়টি বিভাগে মনোনয়ন লাভ করে এবং শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র, চিমিনো শ্রেষ্ঠ পরিচালনা, ওয়াকেন শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা, শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রহণশ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র সম্পাদনা বিভাগে পাঁচটি পুরস্কার অর্জন করে।

চলচ্চিত্রটি সমাদৃত ও একাডেমি পুরস্কারে সফল হলেও চলচ্চিত্র শিল্পের বেশ কয়েকজন স্বনামধন্য সমালোচক দ্য ডিয়ার হান্টার-এর সরল, গোঁড়া ও ভিয়েত কং ও ভিয়েতনাম যুদ্ধের মার্কিনীদের অবস্থানের ঐতিহাসিকভাবে ভুল চিত্রায়নের জন্য বিদ্রূপ করেন।[৩] ভিয়েত কংদের দ্বারা মার্কিন বন্দীদের রুশ রুলেট খেলার বিষয়টির কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি না থাকার জন্য বিপুলভাবে সমালোচিত হয়, চিমিনো এই দাবী অস্বীকার করলেও এর বিপক্ষে প্রমাণপত্র দিয়ে যুক্তি খণ্ডন করতে পারেননি।

চলচ্চিত্রটি সর্বকালের সেরা চলচ্চিত্রের তালিকায় স্থান করে নেয়, যেমন ২০০৭ সালে আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউটের এএফআইয়ের ১০০ বছর...১০০ চলচ্চিত্র তালিকার ১০ম বার্ষিক সংস্করণে সর্বকালের ৫৩তম সেরা মার্কিন চলচ্চিত্র হিসেবে স্থান পায়। ১৯৯৬ সালে চলচ্চিত্রটি "সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক ও নান্দনিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ" হিসেবে লাইব্রেরি অব কংগ্রেস কর্তৃক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ফিল্ম রেজিস্ট্রিতে সংরক্ষণের জন্য নির্বাচিত হয়।[৪][৫]

অভিনয়শিল্পীদল সম্পাদনা

  • রবার্ট ডি নিরো - স্টাফ সার্জেন্ট মাইকেল "মাইক" ভ্রন্‌স্কি
  • ক্রিস্টোফার ওয়াকেন - করপোরাল নিকানর "নিক" চেভোতারেভিচ
  • জন স্যাভেজ - করপোরাল স্টিভেন পুশকভ
  • জন কাজ্যাল - স্ট্যানলি "স্ট্যান" / "স্টশ"
  • মেরিল স্ট্রিপ - লিন্ডা
  • জর্জ জুন্ডজা - জন ওয়েলশ
  • পিয়ের সেগুই - জুলিয়েন গ্রিন্ডা
  • শার্লি স্টোলার - স্টিভেনের মা
  • চাক অ্যাসপেগ্রেন - পিটার অ্যাক্সেলরড "অ্যাক্সেল"
  • রুটানিয়া আল্ডা - অ্যাঞ্জেলা লুদিদুরাভিচ-পুশকভ
  • পল দামাতো - সার্জেন্ট
  • অ্যামি রাইট - কনে
  • জো গ্রিফাসি - সঙ্গীতদলের প্রধান

নির্মাণ সম্পাদনা

দৃশ্যধারণের স্থান সম্পাদনা

থাইল্যান্ড

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

 
লেমকো হল
  • সেন্ট থিওডোসিয়াস রাশিয়ান অর্থোডক্স ক্যাথিড্রাল, ট্রেমন্ট - ওহাইওর ক্লিভল্যান্ডের নিকটবর্তী এলাকা। একটি দৃশ্যে নাম পরিষ্কারভাবে দৃশ্যমান।[৯]
  • লেমকো হল, ক্লিভল্যান্ড, ওহাইও - এখানে বিবাহের দৃশ্য ধারণ করা হয়। একটি দৃশ্যে নাম পরিষ্কারভাবে দৃশ্যমান।[১০]
  • ইউ.এস. স্টিল সেন্ট্রাল ফারনেস, ক্লিভল্যান্ড, ওহাইও - শুরুতে স্টিল মিলের দৃশ্য[৯]
  • মাউন্ট বেকার-স্নোকোয়ালমি জাতীয় উদ্যান ও নুকস্যাক জলপ্রপাত, ওয়াশিংটনের নর্থ ক্যাসকেডস - হরিণ শিকারের দৃশ্য।[১১][১২]
    এছাড়া নর্থ ক্যাসকেড হাইওয়ে (এসআর ২০), ডায়াবলো হ্রদ
  • স্টোবেনভিল, ওহাইও - কিছু মিল ও পার্শ্ববর্তী এলাকার দৃশ্য।[১৩]
  • স্ট্রুথার্স, ওহাইও - দূরবর্তী বাড়ি ও দীর্ঘ রাস্তার দৃশ্য।[১৪]
  • ওয়ের্টন, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া - মিল ও ট্রেইলারের দৃশ্য।[১৫]

মুক্তি সম্পাদনা

দ্য ডিয়ার হান্টার ১৯৭৮ সালের ৮ই ডিসেম্বর নিউ ইয়র্ক সিটিলস অ্যাঞ্জেলেসে একটি করে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়া হয়।[১৬][১৭] এই মুক্তির কৌশল ছিল চলচ্চিত্রটিকে অস্কারের মনোনয়নের বিবেচনায় আনার জন্য[১৮] এবং এক সপ্তাহ চলার পর আগ্রহ তৈরির জন্য প্রদর্শনী বন্ধ করে দেওয়া হয়।[১৯] অস্কারের মনোনয়ন পাওয়ার পর ইউনিভার্সাল বড় শহরগুলোতে পরিবেশনা বাড়াতে থাকে এবং অস্কার প্রদানের পর ১৯৭৯ সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারি থেকে বিস্তৃত পরিসরে মুক্তি দেয়।[১৯] চলচ্চিত্রটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বক্স অফিসে ৪৮.৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে।[২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "THE DEER HUNTER (X)"British Board of Film Classification। নভেম্বর ১৫, ১৯৭৮। আগস্ট ৯, ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  2. "The Deer Hunter (1978)"বক্স অফিস মোজো। জুন ৭, ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০২৩ 
  3. হার্মেটজ, অলজিন (২৬ এপ্রিল ১৯৭৯)। "Oscar‐Winning 'Deer Hunter' is Under Attack as 'Racist' Film"দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০২৩ 
  4. স্টার্ন, ক্রিস্টোফার (২ ডিসেম্বর ১৯৯৬)। "National Film Registry taps 25 more pix"ভ্যারাইটি (ইংরেজি ভাষায়)। আগস্ট ৯, ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০২৩ 
  5. "Complete National Film Registry Listing"লাইব্রেরি অব কংগ্রেস। অক্টোবর ৩১, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ নভেম্বর ২০২৩ 
  6. "7 Movie Locations in Bangkok - Bangkok.com Magazine"। ব্যাংকক.কম। অক্টোবর ১৩, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ নভেম্বর ২০২৩ 
  7. নাম, সুজান (২০১২)। Moon Thailand। অ্যাভালন ট্রাভেল। পৃষ্ঠা ৩২০। আইএসবিএন 9781598809695 [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  8. "The Deer Hunter film locations"। দ্য ওয়ার্ল্ডওয়াইড গাইড টু মুভি লোকেশন্স। ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫। নভেম্বর ১০, ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ নভেম্বর ২০২৩ 
  9. "ST. THEODOSIUS RUSSIAN ORTHODOX CATHEDRAL"The Encyclopedia of Cleveland History। কেস ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ বিশ্ববিদ্যালয়। ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ৬ নভেম্বর ২০২৩ 
  10. "Lemko Hall"The Encyclopedia of Cleveland History। কেস ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ বিশ্ববিদ্যালয়। মে ২৪, ২০০২। মে ২৫, ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ নভেম্বর ২০২৩ 
  11. ক্রাউস, মারিয়েলা (২০১৩)। Lonely Planet Pacific Northwest's Best Tripsলোনলি প্ল্যানেট। পৃষ্ঠা 118। আইএসবিএন 978-1741798159। এপ্রিল ২৭, ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ নভেম্বর ২০২৩ 
  12. "The Deer Hunter film locations (1978)"। মুভি-লোকেশন্স। নভেম্বর ১০, ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ নভেম্বর ২০২৩ 
  13. ফক্স, র‍্যান্ডি (৫ মে ২০১২)। "'The Deer Hunter' And 'Reckless': Hollywood Briefly Comes To The Factory Valleys (PHOTOS)"হাফপোস্ট। ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ নভেম্বর ২০২৩ 
  14. "Youngstown News, Bowladrome Lanes owners reflect on 40 years in the business"। ভিন্ডি। অক্টোবর ১৩, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ নভেম্বর ২০২৩ 
  15. স্টার্লিং, জো। ""Deer Hunter" Filming Under Way"ওয়ের্টন ডেইলি টাইমস। West Virginia Division of Culture and History। নভেম্বর ২৯, ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ নভেম্বর ২০২৩ 
  16. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Biskind নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  17. ব্যাচ, পৃষ্ঠা ১৬৬।
  18. Chaffin-Quiray, Garrett (writer); Schnider, Steven Jay (general editor) (2003). 1001 Movies You Must See Before You Die (2003 ed.). London, England: Quintet Publishing. p. 642. আইএসবিএন ০-৭৬৪১-৫৭০১-৯.
  19. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Deeley-196 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

টেমপ্লেট:মাইকেল চিমিনো