থুরায়া আল-হাফেজ (১৯১১-২০০০), (আরবি ثريا الحافظ) একজন সিরীয় রাজনীতিবিদ, যিনি নিকাবের বিরুদ্ধে ও নারীর অধিকারের জন্য প্রচারণা চালিয়ে ছিলেন। তিনি সিরিয়ার প্রথম শিক্ষিকাদের মধ্যে অন্যতম একজন। তিনি পার্লামেন্টের আসনের জন্য ভোটে লড়াই করেছেন, পাশাপাশি নারীবাদী বিষয়বস্তু নিয়ে সংবাদ পত্রে লিখেছেন।

প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষা সম্পাদনা

তিনি ১৯১১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। থুরায়া দামেস্কে বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে ১৯২৮ সালে সিরিয়ার প্রথম মহিলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাদের একজন হন। এই সময়, থুরায়া নারী বুদ্ধিজীবীদের উন্নীত করার জন্য দামেসিন মহিলা জাগরণ সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৯৩০-এর দশকে একজন বিশিষ্ট নারী অধিকার কর্মী হয়ে ওঠেন। ১৯৩০ সালে শিক্ষিত মহিলাদের জন্য ওমেনস স্কুল অ্যালামনা এসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা করতে দেখেছিলেন। ১৯৪২ সালের মে মাসে, তিনি দামেস্কের সরকারি সদর দপ্তরে একশত মহিলার একটি বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্ব দেন, যেখানে তারা সকলেই তাদের পর্দা খুলে ফেলেছিলেন। তিনি যুক্তি দিয়ে একটি বক্তৃতা দিয়েছিলেন যে 'আমরা যে পর্দাটি পরতাম তা ঐশ্বরের পবিত্র গ্রন্থে বা হযরত মোহাম্মদ দ্বারা উল্লেখ করা হয়নি'।[১] ১৯৪৭ সালে, তিনি দামেস্কের মর্যাদাপূর্ণ তাজহিজ স্কুলে আরবি সাহিত্যের প্রশিক্ষক হয়েছিলেন।

রাজনীতি সম্পাদনা

থুরায়া ১৯৫০-এর দশকে সিরিয়ার পার্লামেন্টে একটি আসনে নিজেকে মনোনীত করা প্রথম মহিলা হন। [২] যদিও পরবর্তীকালে তিনি পরাজিত হয়েছিলেন, তার প্রচেষ্টা ছিল আরব বিশ্বে নারীর মর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনের লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তিনি দাবি করেছিলেন যে ভোটে অবৈধ হস্তক্ষেপ করা হয়েছিল এবং তিনি আসলে ৭৫% ভোট পেয়েছিলেন।

দামাস্কাসের দৈনক কাগজ বারাদা থুরায়া স্বামী মুনির আল-রায়েসের মালিকানাধীন একটি সংবাদ পত্র। এই সংবাদ পত্রিকাটির জন্য তিনি ১৯৫৩ সালে লেখা শুরু করেন। একই বছরে, তিনি 'দামেস্কে তার নিজস্ব সাহিত্য ও রাজনৈতিক বৈঠকখানা চালু করেছিলেন, যা উভয় লিঙ্গের জন্য উন্মুক্ত ছিল। বৈঠকখানাটি তার নিজের বাড়িতে ডাকা হয়েছিল এবং মুসলিম ইতিহাসের প্রথম সাহিত্য বৈঠকখানার সভাপতিত্বকারী নবী মোহাম্মদের প্রপৌত্র সুকায়না বিনতে আল-হুসাইনের নামে নামকরণ করা হয়েছিল। [৩]

তার স্বামীর মতো, থুরায়া সংযুক্ত আরব প্রজাতন্ত্রের সময় ও পরে মিশরের গামাল আবদেল নাসেরকে সমর্থন করেছিলেন।[৪]

মৃত্যু সম্পাদনা

তিনি ২০০০ সালে মৃত্যু বরণ করেন।

সূত্র সম্পাদনা

সামি এম মৌবায়েদ, স্টিল অ্যান্ড সিল্ক: সিরিয়া ১৯০০-২০০০ এর রূপ দানকারি পুরুষ ও নারী (সিয়াটেল: কিউন প্রেস, ২০০৬), পৃ। ৪৩৫।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Sami M. Moubayed, Steel and Silk: Men and Women who Shaped Syria 1900-2000 (Seattle: Cune Press, 2006), p. 435.
  2. Moubayad, Sami (জুলাই ৩০, ২০১০)। "Niqab Ban Unveils Syria's Secular Past"Asia Times Online। Archived from the original on অক্টোবর ৫, ২০১০। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ২৯, ২০১১ 
  3. Ghada Talhami, Historical Dictionary of Women in the Middle East and North Africa (Plymouth: Scarecrow, 2013).
  4. Sami M. Moubayed, Steel and Silk: Men and Women who Shaped Syria 1900-2000 (Seattle: Cune Press, 2006), p. 498.