জোসেফ এভারআর্ড ডেনিস পেরেরা (১৯৩০-২০১৩) শ্রীলঙ্কা সেনাবাহিনীর একজন জেনারেল ছিলেন। তিনি ছিলেন ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের কর্মকর্তা এবং ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালনকারী শ্রীলঙ্কার সেনা কমান্ডার[১] শ্রীলঙ্কা সেনাবাহিনী নারী শাখা এই জেনারেলের পরিকল্পনাতেই তৈরি করা হয়েছিলো।[২] ২০১৩ সালে জেনারেল ডেনিস মারা যান।

ডেনিস পেরেরা
জন্ম১০ অক্টোবর ১৯৩০
গাম্পাহা, শ্রীলঙ্কা
মৃত্যু১১ আগস্ট ২০১৩(2013-08-11) (বয়স ৮২)
আনুগত্যশ্রীলঙ্কা শ্রীলঙ্কা
সেবা/শাখা সিলন সেনাবাহিনী
 শ্রীলঙ্কা সেনাবাহিনী
কার্যকাল১৯৪৯-১৯৮১
পদমর্যাদা জেনারেল
ইউনিটশ্রীলঙ্কা সেনাবাহিনী কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্স
নেতৃত্বসমূহশ্রীলঙ্কা সেনাবাহিনীর কমান্ডার
যুদ্ধ/সংগ্রামসাম্যবাদী সশস্ত্র বিদ্রোহ বিরোধী সমরাভিযান (শ্রীলঙ্কা)
শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধ
পুরস্কার বিশিষ্ট সেবা বিভূষণ
অন্য কাজজেনারেল স্যার জন কোটলেওয়ালা প্রতিরক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য
অস্ট্রেলিয়াতে নিযুক্ত শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রদূত

সামরিক কর্মজীবন সম্পাদনা

পূর্ব জীবন সম্পাদনা

শ্রীলঙ্কার প্রথম ক্যাডেট অফিসার ব্যাচ গঠনের সময় পেরেরাকে সিলন সেনাবাহিনীতে যোগদানের জন্য প্রথম দশজন প্রার্থীর একজন নির্বাচিত করা হয়েছিলো। উনিশতম জন্মদিনে নবগঠিত সিলন সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে তিনি মন্স অফিসার ক্যাডেট স্কুলে এবং তারপরে রয়্যাল মিলিটারি একাডেমি, স্যান্ডহার্স্টে তার বেসিক অফিসার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং ১৯৫১ সালের ২ আগস্ট প্রথম ফিল্ড ইঞ্জিনিয়ার্সে দ্বিতীয় লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশন প্রাপ্ত হন এবং কাজ করেন রাইনের ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর একটি ইউনিটের সাথে কিছু সময়ের জন্য। নিজ দেশে ফিরে আসার পরে তিনি নতুন ইঞ্জিনিয়ারিং স্কোয়াড্রন গঠনে অংশ নিয়ে দিয়াতলাওয়া গ্যারিসনে অবস্থান নেন এবং পরে ১৯৫৩ সালে সদ্য নির্মিত পানাগোডা সেনানিবাসে চলে যান, সেখানে ১৯৫৭ সালে সিলন ইঞ্জিনিয়ার্স গঠন করা হয়েছিল। এই সময়ে তিনি পদোন্নতি পেয়েছিলেন। ১৯৫৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি লেফটেন্যান্ট এবং ১৯৫৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ক্যাপ্টেন; ইঞ্জিনিয়ারিং ট্রুপ এবং স্কোয়াড্রন কমান্ডার হিসেবে কাজ করেছেন। এরপরে তিনি সেনা সদর দপ্তরে স্টাফ ক্যাপ্টেন (প্রশাসন) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৭ সালে তিনি রয়েল স্কুল অব মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করেন এবং ফিরে আসার সময় তিনি অফিসার কমান্ডিং, সিলন স্কুল অব মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৬০ সালের ১ অক্টোবর, তিনি মেজর পদে পদোন্নতি লাভ করেন এবং ১৯৬১ সালে তিনি ব্রিটিশ আর্মি স্টাফ কলেজ, কেম্বারলেতে পড়েন।

উচ্চতর নেতৃত্ব সম্পাদনা

কর্মজীবনের সময় তিনি বেশ কয়েকটি শ্রীলঙ্কা হাই কমিশনের সাথে যুক্ত ছিলেন এবং লন্ডনে তিন বছর ধরে লঙ্কান হাই কমিশনের মিলিটারি অ্যাটাচি ছিলেন এবং তারপরে সিলন ইঞ্জিনিয়ার্সের প্রথম ফিল্ড ইঞ্জিনিয়ার রেজিমেন্টের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি ১৯৬৮ সালে আর্মি ট্রেনিং সেন্টারে অফিসার প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করেন। ১৯৬৯ সালের ১ অক্টোবর লেফটেন্যান্ট কর্নেলের পদোন্নতি পেয়ে তিনি ১৯৬৯ থেকে ১৯৭২ পর্যন্ত সেনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কমান্ড্যান্ট ছিলেন এবং ১৯৭১ সালের সাম্যবাদী রাজনৈতিক দল জেভিপির সশস্ত্র বিদ্রোহের সময় সেনা কমান্ডার, দক্ষিণী কমান্ডের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তারপরে নয়াদিল্লির ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে পড়াশোনা করার পরে তিনি কমান্ডার, নর্দান কমান্ডের দায়িত্ব পালন করেছিলেন; চিফ অব স্টাফ নিযুক্ত হওয়ার আগে সেনা সদর দপ্তরে পরিচালক পরিকল্পনা ও পরিচালক অপারেশনস এবং প্রশিক্ষণ, ১৯৭৩ সালের ৩১ জানুয়ারি কর্নেল পদে পদোন্নতি পেয়েছিলেন। ১৯৭৬ সালে তিনি নিরপেক্ষ জাতিসংঘের সম্মেলনে সমস্ত বিদেশী প্রতিনিধি দলের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং ব্রিগেডিয়ার পদে পদোন্নতি পেয়েছিলেন ৫ আগস্ট ১৯৭৭ তারিখে।

সেনা কমান্ডার সম্পাদনা

১৯৭৭ সালের ১৪ ই অক্টোবর মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি পেয়ে তিনি শ্রীলঙ্কা সেনাবাহিনীর কমান্ডার নিযুক্ত হন, ৪৬ বছর বয়সে এই পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত সর্বকনিষ্ঠ কর্মকর্তা এবং প্রথম প্রকৌশল কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি এই পদে থাকতে ১৯৮১ সালের ৩১ অক্টোবর অবধি সেনা থেকে অবসর গ্রহণের পর তার চাকরির শেষ দিনটিতে তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে পদোন্নতি পেয়েছিলেন। ২০০৭ সালে তাকে পূর্ণ জেনারেলের পদমর্যাদায় ভূষিত করা হয়।[৩]

সেনা কমান্ডার থাকাকালীন তিনি স্যার জন কোটেলাওয়ালা ডিফেন্স একাডেমি (কেডিএ) প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে স্যার জন কোটেলাওয়ালার কাছ থেকে একটি প্রতিরক্ষা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। কেডিএ প্রতিষ্ঠার জন্য, তাকে যুক্তরাজ্যের চার্টার্ড ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট এবং শ্রীলঙ্কার ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টের ফেলো করা হয়েছিল। কেডিএ তাকে ডক্টর অব লেটারস (হোনরিস কাউসা) ভূষিত করেছিলো এবং ১৯৯৫ সালের ৯ নভেম্বর তাকে প্রথম চ্যান্সেলর করা হয় এবং ৩০ ডিসেম্বর ২০১০ অবধি দায়িত্ব পালন করেন। তিনি শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনী মহিলা কোর ধারণাটি উপলব্ধি করে শ্রীলঙ্কার মহিলাদের জন্য সাধারণ সৈন্য হিসেবে সেনাবাহিনীতে যোগদানের পথ তৈরি করেছিলেন।[৪]

তথসূত্র সম্পাদনা

  1. "Past Army Commanders"। Sri Lanka Army। ৩০ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ 
  2. "History Of 1 SLAWC"alt.army.lk/slawc 
  3. Former service chiefs promoted
  4. "General Deshamanya J E D Perera VSV D Litt (Honoris Causa) FCMI (UK) FIMgt (SL) ndc psc"army.lk। Sri Lanka Army। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০২০