টাক (ইংরেজি: Baldness) বলতে চুলের অভাবকে বোঝায়, বিশেষ করে মাথার চুল।[১] মাথার চুল ক্রমাগত হালকা হয়ে যাওয়ার মাধ্যমে সাধারণত টাক হওয়া প্রকাশ পায়। পুরুষের ক্ষেত্রে এটি অ্যান্ড্রোজেনিক অ্যালোপেসিয়া বা "পুরুষের টাক" নামে পরিচিত। এটি পরিণত মানুষ ও অন্যান্য প্রজাতিতে দেখা যায়। টাকের পরিমাণ ও বিস্তৃতি অনেক বেশি হতে পারে এবং এক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের মধ্যে ভিন্নতা দেখা যায়। মাথার কিছু অংশের চুল পড়ে যাওয়াকে অ্যালোপেসিয়া এরিয়াটা ও পুরো মাথার চুল পড়ে যাওয়াকে অ্যালোপেসিয়া টোটালিস বলে। চুল পড়ে যাওয়ার আরো একটি মারাত্মক প্রকাশ হচ্ছে অ্যালোপেসিয়া ইউনিভার্সালিস। এক্ষেত্রে মাথাসহ সমস্ত শরীরের লোম ঝরে যায়। অনেক সময় এই সমস্যা মানসিক চাপের জন্যও দায়ী।[২]

টাক
প্রকারভেদ ও বহিঃস্থ উৎসসমূহ
পুরুষের টাক মাথা
আইসিডি-১০L৬৫.৯
আইসিডি-৭০৪.০
রোগ তথ্যকেন্দ্র14765

পটভূমি, কারণ ও বিস্তার সম্পাদনা

আংশিক টাক বা Pattern baldness-এর ক্ষেত্রে বংশগতির পটভূমির ওপর ভিত্তি করে টাকের বিস্তার ও প্রাদুর্ভাব বিভিন্ন হয়। পরিবেশগত প্রভাব এই ধরনের মুণ্ডতার ক্ষেত্রে দেখা যায় না। মেরিব্রাউ, অস্ট্রেলিয়া, ভিক্টোরিয়া একটি সূচক গবেষণার মাধ্যমে দেখিয়েছেন যে, মাথার সামনের মাঝে চুল ঝরে পড়ার হার বয়সের ওপর নির্ভরশীল ও ৮০ বছরের উপর বয়সী ৫৭% নারী ও ৭৩.৫% পুরুষ এর দ্বারা আক্রান্ত। মডার্ন মেডিক্যাল লাইব্রেরি'র ওয়েবসাইটের ভাষ্যমতে যুক্তরাষ্ট্রের ৪০ মিলিয়ন বা ৪ কোটি পুরুষ আংশিক টাকের শিকার। প্রায় ২৫% পুরুষের ৩০ বছর বয়সের পরেই মাথা টাক হওয়া শুরু হয়। দুই-তৃতীয়াংশের শুরু হয় ৬০ বছর বয়সে। মুণ্ডতার জিন প্রাপ্তির সম্ভাবনা সেখানে প্রতি ৭-এ ৪ বার।

পুরুষের ক্ষেত্রে টাক সৃষ্টি হতে পারে এই ধরনের চুল কপালে পার্শ্বীয় অংশ থেকে শুরু হয়ে পেছনে ঢালু অংশের দিক পর্যন্ত বিস্তৃত। একে "প্রান্তীয় অংশের চুল" বলে অভিহিত করা হয়। এ স্থানে চুল সচরাচর ২০ বছর বয়সের পরে দেখা যায়, তবে কিছু ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধির শেষ ভাগেও এই চুল দেখা যায়।

মাথার উপরে, শীর্ষে টাক সৃষ্টির সম্ভবনা দেখা যায়। আংশিক টাকের কারণ হিসেবে ডাইহাইড্রোটেস্টোস্টেরন (DHT) নামক একটি শক্তিশালী যৌন হরমোনকে দায়ী করা হয়। এটি শরীর ও মুখের চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তামূলক ভূমিকা রাখে। প্রোস্টেট ও মাথার চুলের ওপর এই হরমোন প্রতিকূল প্রভাব ফেলার ক্ষমতা রাখে, এর ফলে পুরুষে আংশিক টাকের সৃষ্টি হতে পারে।[৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Vary, Jay C. (২০১৫)। "Selected Disorders of Skin Appendages—Acne, Alopecia, Hyperhidrosis"Medical Clinics of North America (ইংরেজি ভাষায়)। 99 (6): 1195–1211। ডিওআই:10.1016/j.mcna.2015.07.003 
  2. Nalluri, Rajani; Harries, Matthew (২০১৬)। "Alopecia in general medicine"Clinical Medicine (ইংরেজি ভাষায়)। 16 (1): 74–78। আইএসএসএন 1470-2118ডিওআই:10.7861/clinmedicine.16-1-74পিএমআইডি 26833522পিএমসি 4954340  
  3. Rebora A (২০০৪)। "Pathogenesis of androgenetic alopecia"। J Am Acad Dermatol50 (5): 777–9। ডিওআই:10.1016/j.jaad.2003.11.073পিএমআইডি 15097964 

আরো পড়ুন সম্পাদনা

বর্হিসূত্র সম্পাদনা