টাইপ ০৩৫ ডুবোজাহাজ

টাইপ ০৩৫ ডুবোজাহাজ (ন্যাটো প্রদত্ত নাম:মিং শ্রেণী) হলো একটি ডিজেল-ইলেক্ট্রিক আক্রমণকারী ডুবোজাহাজ। এটি রোমিও শ্রেণীর ডুবোজাহাজের উন্নত সংস্করণ। এগুলো তৈরি করা হয়েছিল ১৯৬২ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত।[২]

টাইপ ০৩৫ ডুবোজাহাজ
শ্রেণি'র সারাংশ
নাম: মিং শ্রেণী
নির্মাতা:
  • উচ্যাং শিপইয়ার্ড
  • জিয়ান্গনান শিপইয়ার্ড
ব্যবহারকারী:
পূর্বসূরী: টাইপ ০৩৩ (রোমিও শ্রেণী)
উত্তরসূরী অনুযায়ী: টাইপ ০৩৯ (সং শ্রেণী)
অনুমোদন লাভ:
  • টাইপ ০৩৫ ১৯৭৪-১৯৯০
  • টাইপ ০৩৫এ ১৯৮২-বর্তমান
  • টাইপ ০৩৫জি ১৯৯০-বর্তমান
  • টাইপ ০৩৫বি ২০০০-বর্তমান
সম্পন্ন:
  • ২ টাইপ ০৩৫
  • ৪ টাইপ ০৩৫এ
  • ১২ টাইপ ০৩৫জি
  • ৫ টাইপ ০৩৫বি
সক্রিয়:
  • ১১ টাইপ ০৩৫জি(৯ চীন, ২ বাংলাদেশ)
  • ৫ টাইপ ০৩৫বি
হারানো:
অবসরপ্রাপ্ত:
  • ২ টাইপ ০৩৫
  • ৪ টাইপ ০৩৫এ
সাধারণ বৈশিষ্ট্য
প্রকার: আক্রমণকারী ডুবোজাহাজ
ওজন: ১৬০৯ টন (ভাসমান অবস্থায়) [১], ২১১০ টন (ডুবন্ত অবস্থায়)[২]
দৈর্ঘ্য: ৭৬ মি (২৪৯ ফু)[২]
প্রস্থ: ৭.৬ মি (২৫ ফু)[২]
ড্রাফট: ৫.১ মি (১৭ ফু)[২]
গভীরতা: ৭.৬ মি (২৫ ফু)[২]
প্রচালনশক্তি: টাইপ ই৩৯০জেডসি-১ ডিজেল ইঞ্জিন, ৫,২০০ অশ্বশক্তি (৩,৯০০ কিওয়াট)[২]
গতিবেগ: ১৮ নট (৩৩ কিমি/ঘ) (ডুবন্ত অবস্থায়)[২]
পরীক্ষিত গভীরতা: ৩০০ মি (৯৮০ ফু)[২]
লোকবল: ৫৭
রণসজ্জা: ৫৩৩ মিমি (২১ ইঞ্চি) টর্পেডো টিউব[২]

পটভূমি সম্পাদনা

১৯৬৩ সালে, ১৯৫০ সালে চীন-সোভিয়েতের বন্ধুত্ব, জোট এবং পারস্পরিক সহায়তা চুক্তির আওতায়, সোভিয়েত ইউনিয়ন রোমিও শ্রেণীর ডুবোজাহাজ উৎপাদন করার জন্য চীনকে প্রয়োজনীয় নকশার বিবরণ দেয়।[৩] চীনা রূপটি টাইপ ০৩৩ রোমিও শ্রেণী হিসাবে পরিচিতি লাভ করে, যার মধ্যে চীন ১৯৬২ থেকে ১৯৮৪ এর মধ্যে মোট ৮৪টি তৈরি করেছিল।

১৯৭০-এর দশকে, চীন নিজস্ব ডুবোজাহাজ শিল্প তৈরির জন্য প্রতিষ্ঠা করে উহান শিপ ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড ডিজাইন ইনস্টিটিউট (৭০১ ইনস্টিটিউট) যারা কে টাইপ ০৩৩ হলের উপর ভিত্তি করে উন্নত ডুবোজাহাজ তৈরিতে নেতৃত্ব দেয়, যার নাম টাইপ ০৩৫ মিং ছিল। [২] ১৯৭৪ সালে এ শ্রেণির দুটি ডুবোজাহাজের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছিল।

ডুবোজাহাজের আরও উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে, ১৯৮০ এর দশকের গোড়ার দিকে টাইপ ০৩৫এ মিং ক্লাস নামে একটি নতুন এবং উন্নত নকশা তৈরি করা হয়েছিল।[২] এই উন্নত "এ" মডেলগুলির মধ্যে প্রথমটি ১৯৮২ সালে পরিষেবাতে প্রবেশ করে ও আরও তিনটি নির্মাণাধীন ছিল তখন।[২] পরবর্তী তিনটির নির্মাণ ১৯৯০-এর মধ্যে শেষ করা হয়।[২]

টাইপ ০৩৫জি মিং ক্লাস এর অসংখ্য বৈকল্পিক রয়েছে। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৯-এর মধ্যে মোট ১২ টি নির্মিত এবং কমিশন করা হয়েছিল। [২] শব্দ হ্রাস, অস্ত্র, সেন্সর এবং এতে ক্রুদের জীবনযাত্রার মানউন্নয়নসহ এগুলিকে আরও উন্নত করে নির্মাণ করা হয়। প্ল্যান এই উপ-শ্রেণিকে "পুরানো বোতলে নতুন ওয়াইন" হিসাবে উল্লেখ করে। টাইপ ০৩৫এ এর দুটি ডুবোজাহাজকে টাইপ ০৩৫জি-এর মতো করে একই মানে আপগ্রেড করা হয়েছিল।

সর্বাধিক আধুনিক নকশার রূপটি হলো টাইপ ০৩৫বি মিং ক্লাস, যাতে একটি নতুন নকশাকৃত কনইং টাওয়ার এবং হালের অংশ রয়েছে, ফলে এটি দেখতে টাইপ ০৩৯ ডুবোজাহাজের অনুরূপ। টাইপ ০৩৫বি তাদের টর্পেডো টিউব থেকে স্থল আক্রমণের জন্য ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র চালাতে সক্ষম। ২০০০ এবং ২০০৩ এর মধ্যে নতুন এই রূপটি মোট চারটি ডুবোজাহাজকে কমিশন দেয়া হয়।[২]

শ্রেণীর ডুবোজাহাজ সম্পাদনা

নিম্নলিখিত প্রতিটি ডুবোজাহাজ প্রকার অনুসারে নিম্নরূপ:

  • টাইপ ০৩৫ মিং ক্লাস: ২৩২ এবং ২৩৩
  • টাইপ ০৩৫ এ মিং ক্লাস: ৩৫২, ৩৫৩ এবং ৩৫৪
  • ইএস৫ডি: ৩৪২
  • টাইপ ০৩৫ জি মিং ক্লাস : ৩৫৬, ৩৫৭, ৩৫৮, ৩৫৯, ৩৬০, ৩৬১, ৩৬২, ৩৬৩, ৩০৫, ৩০৬, ৩০৭ এবং ৩০৮
  • টাইপ ০৩৫ বি মিং ক্লাস: ৩০৯, ৩১০, ৩১১, ৩১২ এবং ৩১৩

রপ্তানি সম্পাদনা

দূর্ঘটনা সম্পাদনা

২০০৩ সালের এপ্রিল মাসে, হলুদ সাগরে অনুশীলনের সময় মিং-ক্লাস ডুবোজাহাজ ৩৬১ একটি যান্ত্রিক ব্যর্থতায় পড়েছিল যার ফলে বোর্ডের সমস্ত ৭০ জন সদস্যের মৃত্যু হয়েছিল।[৬][৭] এটি চীন অন্যতম সবচেয়ে খারাপ শান্তিকালীন সামরিক বিপর্যয়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "প্রথমবারের মত দু'টি সাবমেরিন সংযোজনের মাধ্যমে ত্রিমাত্রিক শক্তি হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর আত্মপ্রকাশ– সাবমেরিন 'নবযাত্রা' ও 'জয়যাত্রা' এর কমিশনিং করলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা"আইএসপিআর। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-২৭ 
  2. Type 035 submarine (in Chinese) ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ জুলাই ২০১৫ তারিখে, haijun360.com, সংগ্রহের তারিখ ১ মে ২০১৫
  3. Korabli VMF SSSR , Vol.1, Part 2, Yu. Apalkov, Sankt Peterburg, 2003, আইএসবিএন  ৫-৮১৭২-০০৭২-৪
  4. Navy to get submarines, corvettes, Newage.com
  5. "Bangladesh commissions first submarine"। ঢাকা ট্রিবিউন। 
  6. Becker, Jeffrey; Liebenberg, David; Mackenzie, Peter (ডিসেম্বর ২০১৩)। "Behind the Periscope: Leadership in China's Navy"। Defense Technical Information Center। পৃষ্ঠা 81। ৫ জুন ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০২০ 
  7. You Ji (২০১২)। "Meeting the Challenge of the Upcoming PLAAF Leadership Reshuffle"। The Chinese Air Force: Evolving Concepts, Roles, and Capabilities (পিডিএফ)। National Defense University Press। পৃষ্ঠা 231। আইএসবিএন 978-0-16-091386-0