ঝিল্লু সিংহ যাদব (Jhillu Singh Yadav, জন্ম ১৯৫০) একজন ভারতীয় জৈব রসায়নবিদ এবং ইন্টারফেসেস (জেএলএসসিআই) এ সাসটেইনেবল রসায়নের জন্য ইন্দো-ফরাসী যৌথ পরীক্ষাগারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। এটি ভারতীয় রাসায়নিক প্রযুক্তি এবং রেনেস ১ বিশ্ববিদ্যালয় এর যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।[১] তিনি ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ কেমিক্যাল টেকনোলজির (আইআইসিটি) একজন প্রাক্তন পরিচালক এবং অ্যালিলিক এবং অ্যাসিটাইলেনিক অ্যালকোহল এবং স্পাইরোঅ্যাসিটাল জৈব সংশ্লেষ সম্পর্কিত গবেষণার জন্য পরিচিত।[২] তিনি ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমী,[৩] ভারতীয় বিজ্ঞান একাডেমি,[৪] ভারতের জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমি,[৫] ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ কেমিক্যাল এঞ্জিনিয়ারস এবং ওয়ার্ল্ড একাডেমি অফ সায়েন্সেস এর নির্বাচিত ফেলো।[৬] বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য ভারত সরকারের শীর্ষস্থানীয় সংস্থা বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা কাউন্সিল ১৯৯১ সালে তাকে সর্বোচ্চ ভারতীয় বিজ্ঞান পুরস্কারের অন্যতম শান্তি স্বরূপ ভাটনাগর পুরস্কার দিয়ে তাঁকে সম্মানিত করে।[৭]

ঝিল্লু সিংহ যাদব
জন্ম (1950-08-04) ৪ আগস্ট ১৯৫০ (বয়স ৭৩)
জাতীয়তাভারতীয়
মাতৃশিক্ষায়তন
পরিচিতির কারণঅ্যালিলিক এবং অ্যাসিটাইলেনিক অ্যালকোহলের জৈব সংশ্লেষ নিয়ে অধ্যয়ন
পুরস্কার
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্র
প্রতিষ্ঠানসমূহ
ডক্টরাল উপদেষ্টাসুখ দেব

জীবনী সম্পাদনা

 
ইন্ডিয়ান ইন্সটিউট অফ কেমিক্যাল টেকনোলজি

জে.এস. যাদব ১৯৫০ সালের ৪ আগস্ট ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের পূর্ব সীমান্তের একটি শহর আজমগড় -এ জন্মগ্রহণ করেছিলেন। স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করার পর ১৯৬৮ সালে তাঁর স্নাতক এবং স্নাতকোত্তরের পড়াশুনা করেন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় এ। [৮] তাঁর ডক্টরাল পঠন জাতীয় রাসায়নিক গবেষণাগার এ সুখ দেবের নেতৃত্বে এবং পিএইচডি করার সময় ১৯৭৭-৭৮ সালে রাইস বিশ্ববিদ্যালয় -এ অতি অল্প সময়ে অবস্থান করেছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি উইসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াশোনা করেন এবং ১৯৮০ সালে বিজ্ঞানী হিসাবে জাতীয় রাসায়নিক পরীক্ষাগারে যোগদানের জন্য ভারতে ফিরে আসেন। [৩] পরে তিনি ভারতীয় রাসায়নিক প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট এ চলে যান। সেখানে তিনি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[৯] অবসর গ্রহণের পরে তিনি বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা কাউন্সিলের ভাটনাগর ফেলো হিসাবে আইআইসিটি-র সাথে তাঁর সহযোগিতা অব্যাহত রাখেন।[৮]

যাদব বিবাহ বন্ধনে জানকির সাথে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির দুই পুত্র রয়েছে। পরিবারটি এখন তেলেঙ্গানার হায়দ্রাবাদ এ বাস করে।

উত্তরাধিকার সম্পাদনা

যাদব জটিল প্রাকৃতিক পণ্য ও ওষুধের সংশ্লেষণ এবং অ্যালিলিক ও অ্যাসিটাইলেনিক অ্যালকোহল এবং স্পাইরোঅ্যাসিটালের সংশ্লেষন করতে প্রোটোকল বিকাশের জন্য কৃতিত্বপ্রাপ্ত।[১০][১১] তাঁর গবেষণায় ১০০ টিরও বেশি পেটেন্ট নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে[১২] (এর মধ্যে তাঁর নিজের হাতে রয়েছে ৪৭ টি) এবং এগুলির ফলে ডিলটিয়াজেম, ওনডাসেট্রন, পাইরাজিনামাইড, কেটোটিফেন, মেফ্লোকাইন এবং ট্যামোক্সিফিন প্রভৃতি ফার্মাসিউটিকাল এবং কৃষি রাসায়নিক সংশ্লেষণের জন্য কার্যকর ব্যয় শাশ্রয়কারী পদ্ধতির বিকাশ ঘটেছে। [৩] তিনি ১০০০ টিরও বেশি পিয়ার-রিভিউ নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন[১৩] এবং ১১০ জনের অধিক গবেষকের পরামর্শদাতা ছিলেন। ফেরোমোন সম্পর্কিত তাঁর কাজ পরিবেশ বান্ধব কৃষি পণ্য বিকাশের জন্য একটি সমন্বিত কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে সহায়তা করেছে।[৩] রেনে গ্রির সাথে তিনি সাসটেইনেবল রসায়নের জন্য ইন্দো-ফরাসী যৌথ পরীক্ষাগারের (জেএলএসসিআই) প্রতিষ্ঠাতা। এটি বিশ্ববিদ্যালয় রেনেস ১ এবং ভারতীয় রাসায়নিক প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের দ্বারা যৌথভাবে প্রতিষ্ঠিত। সেখানে তিনি এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[১]

পুরস্কার এবং সম্মান সম্পাদনা

বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা কাউন্সিল ১৯৯১ সালে যাদবকে শান্তি স্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার প্রদান করেছিল। এটি ১৯৯১ সালের সর্ব্বোচ্চ ভারতীয় বিজ্ঞান সম্মান। [১৪] ১৯৯৯ সালে তিনি ভিএএসভিআইকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন[১৫] এবং ২০০২ সালে র‌্যানবাক্সি গবেষণা পুরস্কার। ২০০৩ সালে তাঁকে দুটি সম্মান প্রদান করা হয়। বিজ্ঞান রত্ন সম্মান এবং গয়াল পুরস্কার এবং ২০০৪ সালে তিনি বিজ্ঞান গৌরব সম্মান পুরস্কার পেয়েছিলেন।[৩] তিনি তিনটি বড় ভারতীয় বিজ্ঞান একাডেমীর নির্বাচিত ফেলো যেমন ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমি, ভারতের জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমী [৫] এবং ভারতীয় বিজ্ঞান একাডেমি। [৪] তিনি ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার্সের ফেলো এবং ওয়ার্ল্ড একাডেমি অফ সায়েন্সেস এর একজন নির্বাচিত ফেলো। [৬] আরকিভোক জার্নাল যাদবের উপর ২০১৬ সালের দ্বিতীয় সংখ্যাটির মাধ্যমে একটি ফেস্টশ্রিফ্ট প্রকাশ করেছে। [৮]

আরো দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Indo-French joint lab co-founders honoured"। French Embassy in India। ২১ এপ্রিল ২০১৫। 
  2. "Brief Profile of the Awardee"। Shanti Swarup Bhatnagar Prize। ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৬ 
  3. "Indian fellow"। Indian National Science Academy। ২০১৬। ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০২০ 
  4. "Fellow profile"। Indian Academy of Sciences। ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৬ 
  5. "NASI fellows"। National Academy of Sciences India। ২০১৬। ১৬ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০২০ 
  6. "TWAS fellow"। The World Academy of Sciences। ২০১৬। 
  7. "View Bhatnagar Awardees"। Shanti Swarup Bhatnagar Prize। ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৬ 
  8. S. Chandrasekar (২০১৬)। "Dr. Jhillu Singh Yadav – Scientist par excellence - A Tribute"Arkivoc - Issue in Honor of Dr. Jhillu S. YadavII: 1–8। 
  9. "SERB profile" (পিডিএফ)। Science and Engineering Research Board। ২০১৬। 
  10. "Handbook of Shanti Swarup Bhatnagar Prize Winners" (পিডিএফ)। Council of Scientific and Industrial Research। ১৯৯৯। পৃষ্ঠা 34। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৬ 
  11. Douglass F. Taber (২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩)। Organic Synthesis: State of the Art 2009 - 2011। OUP USA। পৃষ্ঠা 143–। আইএসবিএন 978-0-19-996572-4 
  12. "Yadav on One Organic Chemist One Day"। One Organic Chemist One Day। ২০১৬। 
  13. "Browse by Fellow"। Indian Academy of Sciences। ২০১৬। 
  14. "Chemical Sciences"। Council of Scientific and Industrial Research। ২০১৬। ১২ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০১৬ 
  15. "VASVIK Industrial Research Award"। VASVIK Foundation। ২০১৬। ২ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০২০