জুমাবোই আহমাদজোনোভিচ খোদজিয়েভ (১৯৬৮/১৯৮৯–২০০১) একজন উজবেক ইসলামপন্থী জিহাদি ছিলেন। তিনি জুমা নামাঙ্গানি নামে অধিক পরিচিত ছিল। তাঁর যথেষ্ট অনুসারী ছিল। তিনি উজবেকিস্তানের ইসলামিক মুভমেন্ট অফ উজবেকিস্তান (আইএমইউ) এর সহ-প্রতিষ্ঠা এবং দীর্ঘদিন নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। আইএমইউ যথেষ্ট তালেবান পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছিল এবং উত্তর আফগানিস্তানে স্বাধীনভাবে কাজ করার অনুমতি পেয়েছিল।[১]

জুমা নামাঙ্গানি
জন্ম নামজুমাবোই আহমেদজোনোভিচ খোদজিয়েভ
ডাকনামজুমা হাকিম, জুমা কাসিমভ, তোজিবোই
জন্ম১৯৬৮ বা ১৯৬৯
নামাঙ্গান, উজবেকিস্তান
মৃত্যুনভেম্বর ২০০১ (2001-12) (বয়স : ৩১–৩৩)
আফগানিস্তান
আনুগত্য
Wars

জীবনী সম্পাদনা

জুমাবোই তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত উজবেকিস্থানের নামাঙ্গানে ১৯৬৮ বা ৬৯ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি সোভিয়েত বাহিনীর প্যারাট্রুপার ছিলেন। ১৯৭৯ সালে সোভিয়েত আফগান যুদ্ধ শুরু হলে সোভিয়েত তাদের জাতীয় সৈন্যদের ব্যবহার না করে তাদের আওতাভুক্ত মধ্য এশিয়ার অন্যান্য মুসলিম প্রজাতন্ত্রগুলো থেকে হাজার হাজার সৈন্য সংগ্রহ করে যুদ্ধে প্রেরণ করে। এরা সোভিয়েত ইউনিয়নের হয়ে আফগান মুজাহেদিনের সাথে লড়াই করতে যায়। এই সৈনিকদের অনেকেই তখন তাদের বিরোধী মুসলিম মুজাহিদদের ধার্মিকতায় বিমুগ্ধ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন এবং নিজেদের ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সচেতন হতে থাকেন, যে ব্যাপারে মস্কো তাদের অন্ধকারে রেখেছিল। তারা নিজেদের ধর্মীয় স্বকীয়তা ও জাতিগত স্বাধীনতার ব্যাপারে সচেতন হতে থাকে।

আফগানিস্তান যুদ্ধে জুমাবোইকে পাঠানো হয়েছিল যুদ্ধের পর তিনি উজবেকিস্তানের ফারগানা উপত্যকায় তার নিজ শহর নামাঙ্গানে ফিরে আসেন এবং নিজস্ব অভিজ্ঞতার আলোকে জিহাদের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। সেই উদ্দেশ্যে তিনি স্থানীয় ইসলামপন্থি নেতা তৌহির ইউলদাশেভের সাথে যুক্ত হন। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ভাঙ্গনের ফলে আকস্মিকভাবে উজবেকিস্তান স্বাধীন হয়ে গেলে দেশটি অস্থিতিশীল হতে থাকে। সেই সুযোগে ইউলদেশেভ এবং খোজায়েভ আদোলাত (বিচার) নামে একটি সালাফি জিহাদি দল প্রতিষ্ঠা করেন।

আদোলাত নামাঙ্গানের কর্তৃত্ব গ্রহণ করে এবং সেখানে দ্রুত শরিয়া আইন আরোপের মাধ্যমে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করে। এর ফলে সদ্য প্রতিষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট করিমভকে উপেক্ষা করে ক্রমবর্ধমান আদোলাত দৃঢ়তাপূর্ণ ও প্রভাবশালী হয়ে ওঠে। যার ফলে করিমভ উজবেকিস্তানে শরিয়া আরোপ করতে বাধ্য হয়। কিন্তু ১৯৯২ সালে করিমভ তাসখন্দে তার কর্তৃত্বকে সফলভাবে শক্তিশালী করতে সক্ষম হন এবং আদোলাতকে নিষিদ্ধ করে ফারগানা উপত্যকা অঞ্চলের উপর কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।

ফারগানা উপত্যকায় নিয়ন্ত্রণ হারালে গ্রেপ্তার এড়াতে ১৯৯২ সালে জুমাবোই তাজিকিস্তানে চলে যান। তখন সেখানে রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ চলছিল। সেখানে গিয়ে তিনি ইসলামপন্থী নেতা সাইদ আবদুল্লাহ নুরির ইসলামিক রেনেসাঁ পার্টি অফ তাজিকিস্তানে (IRPT) যোগ দেন। আফগানিস্তানে নামাঙ্গানির যুদ্ধের অভিজ্ঞতা থাকার কারণে IRPT তাকে পার্বত্য তাভিলদারা উপত্যকা অঞ্চলে সক্রিয় ইউনিটের কমান্ডের দায়িত্ব দিয়েছিল। এই দায়িত্বে তিনি যথেষ্ট সফলও হয়েছিলেন। ১৯৯৭ সালে ইমোমালি রহমনভ এবং IRPT চুক্তিবদ্ধ হয়ে ক্ষমতা ভাগাভাগি করতে সম্মত হন। এই ঘটনায় তাজিক ইসলামপন্থীদের প্রতি হতাশ হয়ে নামাঙ্গানি তৌহির ইউলদেশিভকে সাথে নিয়ে ১৯৯৮ সালে ইসলামিক মুভমেন্ট অফ উজবেকিস্তান বা আইএমইউ গঠন করেন।

২০০১ সালে আফগানিস্তানে একটি বিমান হামলায় জুমাবোই নিহত হন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Rashid, Ahmed (২০০১)। "The Fires of Faith in Central Asia": 45–55। জেস্টোর 40209731ডিওআই:10.1215/07402775-2001-2001