জহর দাশগুপ্ত

ভারতীয় চিত্রশিল্পী

জহর দাশগুপ্ত (জন্ম: ৩১ মে ১৯৪২) ভারতের একজন সমসাময়িক চিত্রশিল্পী।[১]

জহর দাশগুপ্ত
২০১৪ সালে জহর দাশগুপ্ত
জন্ম
জহর লাল দাশগুপ্ত

(1942-05-31) ৩১ মে ১৯৪২ (বয়স ৮১)
জাতীয়তাভারতীয়
শিক্ষাকলা ভবন, শান্তিনিকেতন
পরিচিতির কারণচিত্রকলা
পুরস্কারপরিচরন সরকার স্মৃতি পুরস্কার

প্রারম্ভিক জীবন এবং শিক্ষা সম্পাদনা

জহর দাশগুপ্তের শৈশব কেটেছিল জামশেদপুর শহরে, যেখানে ছোট বয়স থেকে তিনি মেঝেতে হাতি, কুকুর, গাছ আঁকতেন। পরে পিতা নরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত যিনি কার্যনির্বাহী পদে টিসকোতে চাকরি করতেন এবং চাকরি ছেড়ে সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ মাইনিং অ্যান্ড ফুয়েল রিসার্চ ইনস্টিটিউটে বিজ্ঞানী হিসাবে যোগদানের কারণে তাদের পরিবার ধানবাদে চলে আসেন। মাত্র নয় বছর বয়সে তিনি স্ট্যালিনের মুখ এবং মা সরদা দেবীকে দেয়ালে আঁকেন। এটি তার পিতামাতার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল এবং তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কোনও একটি আর্ট স্কুলে তাকে ভর্তি করতে হবে। ১৯৬০ সালে তিনি শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এটাই ছিল তার জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়। কলা ভবনে তিনি নন্দলাল বোস, রামকিঙ্কর বাইজ এবং বিনোদ বিহারী মুখোপাধ্যায়ের মতো পরামর্শদাতাদের অধীনে তার প্রাথমিক পাঠ গ্রহণ করেছিলেন এবং ১৯৬৪ সালে তিনি কলা ভবন থেকে ডিপ্লোমা অর্জন করেছিলেন। তার প্রথম চাকরি ছিল উত্তর কলকাতার একটি অবাঙালি স্কুলে একজন শিল্প শিক্ষক হিসাবে। সেখানে তিনি বহু বছর চাকরি করেছিলেন। তার সংগ্রামের সময়ে, তিনি পরিবার পরিচালনার জন্য অনেক আঁকার টিউশনিও করাতেন। একই সঙ্গে তিনি নিয়মিত আর্ট শোগুলিতে অংশগ্রহণ করতেন।

জীবন যাত্রা সম্পাদনা

জহর দাশগুপ্ত তার চিত্রকলায় বিভিন্ন রঙের প্রকার খুঁজে পাওয়া যায়, যেমন পূর্বে তিনি তেল রঙ ব্যবহার করেছেন এখন তিনি মূলত কালি, প্যাস্টেল এবং এক্রাইলিক রঙে কাজ করেন। বিড়লা একাডেমিতে তার প্রথম একক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কলকাতায় তার অন্যান্য একক প্রদর্শনীগুলি মধ্যে ছিল লক্ষ্মণ আর্ট গ্যালারী, ললিত কলা একাডেমি, চিত্রকুট, চারুকলা একাডেমি। বিদেশেও তার চিত্রকলা একক প্রদর্শন করেছিলেন, ২০০৪ সালে গ্যালারী হানসমানিয়া (নরওয়ে) এবং পরে ক্লাব বাংলাদেশ (সুইডেন)। পরবর্তীকালে তিনি ভারত এবং বিদেশেও বহু দলগত প্রদর্শনীতেও অংশ নিয়েছিলেন। আক্রিটি আর্ট গ্যালারী, বিড়লা একাডেমি, চারুকলা একাডেমি, জাহাঙ্গীর আর্ট গ্যালারী, এআইএফএসিএস, কমলনায়ন বাজাজ আর্ট গ্যালারী, ইন্ডিয়া হ্যাবিট্যাট সেন্টার, নেহেরু সেন্টার, লোকায়তা আর্ট গ্যালারী, চেমল্ট আর্ট গ্যালারী, মুলক রাজ আনন্দ কেন্দ্র এবং আরও অনেকের মতো আর্ট শোগুলিতে অংশগ্রহণ করেছেন। তার চিত্রকলা দক্ষিণ কোরিয়া, লন্ডন, প্যারিস এবং কানাডায়ও প্রদর্শিত হয়েছিল।

তিনি কলকাতার চারুকলা একাডেমির সাবেক প্রেসিডেন্ট ছিলেন এবং ওখানেই থাকেন। তিনি স্বরসঙ্গম-বিড়লা ইনস্টিটিউট অব ভিজ্যুয়াল অ্যান্ড পারফর্মিং আর্টস নামীয় আর্ট একাডেমির অধ্যক্ষ হিসাবে কাজ করছেন।

রাজনীতি সম্পাদনা

১৯৭০-এর দশকে পশ্চিমবঙ্গের শিল্প ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের অনেকই বাম আদর্শের প্রতি আকৃষ্ট হতেন। তাদের মধ্যে জহর দাশগুপ্তও ছিলেন এবং তিনিও গণনাট্য সংঘে যোগ দেন। ১৯৭৪ এবং ১৯৮৪ সালে মধ্যমগ্রাম উত্তর ২৪ পরগনার বামপন্থী দলগুলির অধীনে তিনি দু'বার পঞ্চায়েতের ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে তিনি ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করেছিলেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ অক্টোবর ২০১৯ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা