ছো উপজাতি
ছো উপজাতি হল চিন কুকি ও মিজো জনগোষ্ঠীর এগারোটি উপজাতির মধ্যে একটি।[১]তারা মিয়ানমারের (পূর্বের বার্মা দেশ) চিন পাহাড়ে মিন্দাত, কানপেটলেট, সামি এবং মাতুপি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা। তাদের শো, কেক্স'উ, চো এবং য়িন্দু নামেও অভিহিত করা হয়।
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল | |
---|---|
চিন পাহাড় মিয়ানমার | |
সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী | |
চিন-কুকি-মিজো জনগোষ্ঠী |
জনসংখ্যা সম্পাদনা
ছো উপজাতির মধ্যে রয়েছে ফানাই (পাউই লুসেই), চিন্দুই, য়িন্দু, নাগায়া, দাই, মাউন এবং মাকান উপ-উপজাতির মানুষ। ১৯৭৩ - ৭৪ সালের জনগণনা অনুযায়ী ছো উপজাতির মানুষের মোট জনসংখ্যা হল ৪১,০৭০ জন।
উৎস সম্পাদনা
অন্যান্য মিজো উপজাতিদের মতো, ছো উপজাতির মানুষ তিব্বত থেকে মেইথে এবং তায়েতে চলে এসেছিল। পোহপা পাহাড় এবং কাবাউ উপত্যকার মধ্য দিয়ে তারা এসেছিল। কাবাউ উপত্যকা থেকে তারা দক্ষিণে ইয়াও উপত্যকায় স্থানান্তরিত হয় এবং দক্ষিণ চিন পাহাড়ে তাদের বর্তমান অবস্থানে বসতি স্থাপন করে (সামি, কানপেটলেট, মাতুপি এবং মিন্দাত জনপদ)।
সামাজিক জীবন সম্পাদনা
ছো জনগোষ্ঠীর অধিকাংশ মানুষই কৃষক। যতক্ষণ কাজ থাকে ততক্ষণ তারা সাধারণত চাষের খামারেই অবস্থান করে, তাই তারা বছরের মধ্যে মাত্র দুই বা তিন মাসের বেশি গ্রামে থাকতে পারে না।
আতিথেয়তা সম্পাদনা
ছো লোকেরা সবসময়েই যে কোনও অতিথির প্রতি যথাযথ আতিথ্য প্রদর্শন করে, এমনকি সম্পূর্ণ অপরিচিত কোন ব্যক্তি হলেও, তারা অতিথি সেবায় কোনো পার্থক্য বা বৈষম্য করে না। যদি ঝড়ের সময় বা প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে অথবা রাতের বেলা তাদের গ্রামের মধ্যে কোন পর্যটক এসে পড়ে, তারা তাদের থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানায়, এমনকি মাঝে মাঝে পীড়াপীড়ি করেই তাকে আশ্রয় দিতে চায়।
প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ড সম্পাদনা
তাদের আতিথেয়তা যেমন আছে, তেমনি তার বিপরীতে, তাদের একটি অদ্ভুত ঐতিহ্য আছে। তাদের প্রতিশোধ নেবার উপায় হল হত্যা করা, হত্যা করতে গিয়ে তারা চিন্তা করে না। এই ঐতিহ্যের মূল কারণ এখনো জানা যায়নি। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল, এই ঐতিহ্য কাছাকাছি বসবাসকারী অন্যান্য মিজোদের (চিনবোই, ইন্দু এবং ইয়াও উপজাতি) মধ্যে পরিলক্ষিত হয় না। ১৯৬৮ সালে, বার্মা সরকার প্রতিশোধ মূলক হত্যার এই ঐতিহ্যকে নির্মূল করার চেষ্টা করেছিল। শুরুর সময়ে, উপজাতির মানুষজন ভয় পেয়ে ভেবেছিল যে তাদের ঐতিহ্য সম্পূর্ণরূপে নির্মূল হয়ে যাবে। এর ফলে হত্যার হার আগের থেকে আরও বেড়ে গিয়েছিল। ধীরে ধীরে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত, হত্যার ঘটনা আগের তুলনায় অনেক কম হয়ে গেছে।[২]