খয়েরি কাঠঠোকরা

পাখির প্রজাতি

খয়েরি কাঠঠোকরা বা লালচে কাঠঠোকরা পিসিডি বর্গের অন্তর্গত পাখি। এরা খয়েরি কাঠকুড়ালি নামেও পরিচিত।

খয়েরি কাঠঠোকরা
Celeus brachyurus
পুরুষ খয়েরি কাঠঠোকরা,দক্ষিণ ভারত
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: প্রাণীজগৎ
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: পক্ষী
বর্গ: পিসিফর্মিস
পরিবার: পিসিডি
গণ: Micropternus
প্রজাতি: brachyurus
প্রতিশব্দ
  • Celeus brachyurus (Vieillot, 1818)

বিবরণ সম্পাদনা

লালচে কাঠঠোকরার দেহের দৈর্ঘ্য ২৫ সেন্টিমিটার ও ওজন ১০৫ গ্রাম। এদের পুরো দেহের পালক লালচে-খয়েরি, তার ওপর রয়েছে কালচে ডোরা। কাঁধ-ঢাকনি, ডানা লেজ ও বগলে আড়াআড়ি ডোরা রয়েছে। গলার পালক আঁইশের মতো দেখায়। পিঠ ও পেটে হালকা কালচে টান, ছিট ও ছোপ রয়েছে। চোখের রঙ বাদামি লাল। চোখের নিচে অর্ধচন্দ্রাকৃতির উজ্জ্বল লাল পট্টি আছে। ঠোঁট ও নখ কালো। পা ও পায়ের পাতা নীলচে-সবুজ। স্ত্রী আকারে কিছুটা ছোট এবং স্ত্রীর কান-ঢাকনি হালকা পীত বর্ণের। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির বুক ও তলপেটে স্পষ্ট আড়াআড়ি ডোরা ও অর্ধচন্দ্রাকৃতির দাগ থাকে।[২]

শ্রেণিবিন্যাস সম্পাদনা

  • M. b. brachyurus (Vieillot, 1818) – জাভা[৩]
  • M. b. humei Kloss, 1918 – পশ্চিম হিমালয়ের পাশাপাশি গলা, দাগযুক্ত মাথা এবং ফ্যাকাশে মুখ রয়েছে।
  • M. b. jerdonii (Malherbe, 1849) - ভারত ও শ্রীলঙ্কা
  • M. b. phaioceps (Blyth, 1845) – মধ্য নেপাল থেকে মিয়ানমার, ইউনান এবং দক্ষিণ থাইল্যান্ড পর্যন্ত পূর্ব হিমালয়
  • M. b. fokiensis (Swinhoe, 1863) – দক্ষিণ-পূর্ব চীন এবং উত্তর ভিয়েতনাম
  • M. b. holroydi Swinhoe, 1870 – হাইনান
  • M. b. williamsoni Kloss, 1918 – দক্ষিণ থাইল্যান্ড
  • M. b. annamensis Delacour & Jabouille, 1924 – লাওস, কম্বোডিয়া এবং দক্ষিণ ভিয়েতনাম।
  • M. b. badius (Raffles, 1822) – সুমাত্রা দ্বীপ
  • M. b. badiosus (Bonaparte, 1850) – বোর্নিও দ্বীপ

বাসস্থান ও খাদ্যাভাস সম্পাদনা

লালচে কাঠঠোকরা আর্দ্র পাতাঝরা বন, চিরসবুজ বনসহ বন-বাগান, এমনকি লোকালয়েও বাস করে। এরা একাকী বা জোড়ায় ঘুরে বেড়ায়। ছোট পোকামাকড়, পিঁপড়া, লার্ভা, উইপোকা, বুনো ডুমুর ও ডুমুরের রস প্রিয় খাবার। এরা চমৎকার ভঙ্গিমায় গাছে ঝুলে থেকে পিঁপড়া ও পোকামাকড়ের বাসায় ঠোঁট চালায়। টসটসে উইপোকা খাওয়ার জন্য উইঢিবিতে আক্রমণ চালাতেও ছাড়ে না।

প্রজনন সম্পাদনা

এপ্রিল-মে প্রজননকাল। এ সময় গাছের খোঁড়ল বা গর্তের মতো জায়গায় বাসা বানায়। কখনো কখনো গেছো পিঁপড়ার বাসার ভেতরে বা ওপরেও বাসা করতে পারে। ডিম পাড়ে ২-৩টি। ডিমের রং সাদা। ১৪-১৮ দিন তা দেওয়ার পর ডিম থেকে ছানা বেরোয়। ছানারা প্রায় ২৫-২৭ দিনে উড়তে পারে। লালচে কাঠঠোকরা প্রায় পাঁচ বছর বাঁচে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. BirdLife International (২০১২)। "Micropternus brachyurus"বিপদগ্রস্ত প্রজাতির আইইউসিএন লাল তালিকা (ইংরেজি ভাষায়)। আইইউসিএন2012। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৩ 
  2. প্রতিবেদক, নিজস্ব। "লালচে কাঠঠোকরা"Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-০৩ 
  3. Trotman-Dickenson, D.I. (১৯৮৩)। Public Sector Economics। Elsevier। পৃষ্ঠা 171–181। আইএসবিএন 978-0-434-98584-5 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা