ককটেল (২০১২-এর চলচ্চিত্র)

ককটেল হল ২০১২ সালের একটি ভারতীয় প্রণয়ধর্মী কৌতুক-নাট্য চলচ্চিত্র। এটি পরিচালনা করেছিলেন হোমি আদজানিয়া এবং প্রযোজনা করেছিলেন সাইফ আলি খানদীনেশ বিজন। এর মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন দীপিকা পাড়ুকোন, সাইফ আলি খান এবং নবাগত ডায়ানা পেন্টি। এছাড়াও সহযোগী চরিত্রে ছিলেন বোমান ইরানি, ডিম্পল কপাড়িয়া এবং রণদীপ হুদা[৪][৫] ছবির সাউন্ডট্র্যাকটি তৈরি করেছিলেন প্রীতম এবং সেলিম-সুলেমান[৬] ২০১২ সালের ১৩ই জুলাই ককটেল বিশ্বব্যাপী মুক্তি পেয়েছিল। ছবিটি প্রশংসামূলক সমালোচনা পেয়েছিল, বিশেষতঃ পাড়ুকোন এবং পেন্টি তাঁদের অভিনয়ের জন্য উচ্চ প্রশংসিত হয়েছিলেন। ছবির নির্মাণ খরচ ছিল ৬৫০ মিলিয়ন (US$ ৭.৯৫ মিলিয়ন), প্রভূত বাণিজ্যিক সাফল্য পেয়ে এই ছবির আয় দাঁড়িয়েছিল বিশ্বব্যাপী  ১.২৬ বিলিয়ন (US$ ১৫.৪ মিলিয়ন)[৭]

ককটেল
প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পোস্টার
পরিচালকহোমি আদজানিয়া
প্রযোজকসাইফ আলি খান
দীনেশ বিজন
রচয়িতাইমতিয়াজ আলী
সাজিদ আলী
শ্রেষ্ঠাংশেদীপিকা পাড়ুকোন
সাইফ আলি খান
ডায়ানা পেন্টি
ডিম্পল কপাড়িয়া
বোমান ইরানি
রণদীপ হুদা
সুরকার
চিত্রগ্রাহকঅনিল মেহতা
সম্পাদকশ্রীকর প্রসাদ
প্রযোজনা
কোম্পানি
পরিবেশকইরোস ইন্টারন্যাশনাল
মুক্তি
  • ১৩ জুলাই ২০১২ (2012-07-13)
স্থিতিকাল১৪৪ মিনিট[১]
দেশভারত
ভাষাহিন্দি
নির্মাণব্যয়৬৫০ মিলিয়ন (US$ ৭.৯৫ মিলিয়ন)[২]
আয়প্রা. ₹1257.0 million
(worldwide)[৩]

ঘটনা সম্পাদনা

মীরা (ডায়ানা পেন্টি) লাজুক এবং পরম্পরার প্রতি শ্রদ্ধাশীল একটি মেয়ে। সে ভারতে তার পরিবারকে ছেড়ে লন্ডন যাচ্ছে, তার স্বামী কুণালের (রণদীপ হুদা) সাথে থাকার জন্য। লন্ডন বিমানবন্দরে, নির্লজ্জ বিরক্তিকর এবং ফুর্তিবাজ গৌতম "গুটলু" কাপুরের (সাইফ আলী খান) সাথে তার দেখা হয়। সে সরাসরি এসে তাকে বাইরে যাবার প্রস্তাব দেয়। মীরা সবিনয়ে তাকে জানিয়ে দেয় যে সে বিবাহিত এবং সেখান থেকে চলে যায়। মীরা স্বামীর সন্ধান করে অবশেষে তাকে খুঁজে পায়। কিন্তু সে মীরাকে দেখে ক্রুদ্ধ হয়ে বলে যে সে কেবল টাকার জন্যই মীরাকে বিয়ে করেছিল। সে তাকে তার থেকে দূরে থাকতে বলে। এই সব শুনে মীরা ভেঙে পড়ে এবং কোথায় যাবে বুঝতে পারেনা, কারণ সে সেখানে কাউকেই চেনেনা।

একটি ডিপার্টমেন্ট স্টোরের প্রসাধন কক্ষে, মীরার দেখা হয় ভেরোনিকার (দীপিকা পাড়ুকোন) সাথে, যে একজন মুক্তমনা হইচই করা মেয়ে। সে মীরাকে কাঁদতে দেখে তাকে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেয়। ভেরোনিকা মীরাকে তার ঘরে নিয়ে যায় এবং বলে যে, তার ধনী বিবাহ বিচ্ছিন্ন বাবা প্রতি মাসে চেকের মাধ্যমে তাকে প্রচুর পরিমাণে অর্থ পাঠায়, সেই অর্থ দিয়ে ভেরোনিকা ধনী কেতাদুরস্ত জীবন উপভোগ করে। এক রাত্রে, ভেরোনিকা মীরাকে একটি সান্ধ্যক্লাবে নিয়ে যায়, সেখানে তাদের গৌতমের সাথে দেখা হয়। ক্লাবে, গৌতম এবং ভেরোনিকা ঘনিষ্ঠভাবে নাচে, তারপর একত্রে বেরিয়ে যায়। পরের দিন সকালে, একটি চাকরির সাক্ষাৎকার (ইন্টারভিউ) দেওয়ার পর, মীরা ঘরে এসে দেখে গৌতম সোফায় বসে আছে। সে জানতে পারে যে গৌতম এবং ভেরোনিকা আগের রাতে একসাথেই ছিল। এর পরেই গৌতম ভেরোনিকা এবং মীরার সাথে থাকতে চলে আসে এবং ভেরোনিকার সাথে তার "সম্পর্ক বিহীন-সংযুক্তি" চালিয়ে যায়। যদিও মীরা প্রথমদিকে তাকে অপছন্দ করত, পরে তারা তিনজনই ভাল বন্ধু হয়ে যায়।

ঘটনাক্রমে, গৌতমের মা কবিতা (ডিম্পল কপাড়িয়া) এবং কাকা রণধীর (বোমান ইরানি), তার খোঁজে সেখানে এসে পৌঁছোয়। ২টি মেয়েকে নিয়ে গৌতমের মদ্যপ অবস্থা দেখে কবিতা হতবাক হয়ে যায়, এবং জানতে চায় যে সে জীবনে স্থিতিশীল হবার মত কাউকে খুঁজে পেয়েছে কিনা। ভেরোনিকার জীবনযাত্রার কারণে কবিতার তাকে বিশেষ পছন্দ হয়নি, যদিও রণধীরের তার জন্য স্নেহ জন্মায়। গৌতম তার মাকে মিথ্যা করে বলে যে সে মীরার সাথে সম্পর্ক তৈরি করেছে কারণ সে "আদর্শ ভারতীয় নারী", এও বলে যে তাকে তার মায়ের ভালো লাগবে। এই হেঁয়ালির মধ্যেই, গৌতম এবং মীরা ঘনিষ্ঠ হয়ে প্রেমে পড়ে যায়। তবে মীরা এটি স্বীকার করতে দ্বিধা বোধ করে, কারণ সে তার প্রিয় বন্ধু ভেরোনিকাকে দুঃখ দিতে চায় না কারণ ইতিমধ্যেই ভেরোনিকা গৌতমের প্রেমে পড়েছে এবং "শালীন" ভারতীয় নারী হয়ে তার মায়ের অনুমোদনের চেষ্টা করছে।

বেশি দিন মিথ্যাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে না পেরে, গৌতম দুজনের সঙ্গে বসে এবং ভেরোনিকাকে বলে যে, যদিও ভেরোনিকা তাকে ভালবাসে, কিন্তু সে মীরার প্রেমে পড়েছে। মীরা ভেরোনিকার কাছে ক্ষমা চায়, তবে ভেরোনিকা তাকে আশ্বস্ত করে এবং বলে যে এটি ঠিক আছে। জোর করে তারা সবাই ক্লাবে উদ্‌যাপন করতে যায়। কিন্তু, ক্লাবে, মদ্যপ ভেরোনিকা ভেঙে পড়ে, এবং গৌতমকে বলে যে সে যা চায় তাই করবে, এবং সে মীরাকে বলে যে তার আগে আর কেউ তার সাথে এইভাবে ব্যবহার করেনি। পরের দিন সকালে, তারা তিনজন নিজের নিজের পথে চলে যায়। মীরা তার স্বামীর কাছে ফিরে যাওয়া স্থির করে। ভেরোনিকা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে এবং ক্রমবর্ধমান বিপজ্জনক এবং ধ্বংসাত্মক আচরণে জড়িয়ে পড়ে। এক রাত্রে, ভেরোনিকা গাড়িতে ধাক্কায় গুরুতরভাবে আহত হয়। গৌতম তাকে নিয়ে ছুটে আসে হাসপাতালে। মীরা কুণালের সাথে আসে এবং ভান করে যেন সে যেন গৌতমের প্রতি দুর্বলতা কাটিয়ে উঠেছে।

গৌতম ভেরোনিকার যত্ন নেওয়ার জন্য তার সাথে থেকে যায়। ভেরোনিকা মনে করে যে তাদের সম্পর্ক আবার নতুন করে গড়ে উঠছে, তবে শীঘ্রই তার উপলব্ধি হয় যে গৌতম আর আগের মত আনন্দময়, ফুর্তিবাজ মানুষ নেই, যার সাথে সে প্রেমে পড়েছিল, এবং সে যখন মীরার সাথে থাকে তখনই সে আগের মত হয়ে যায়। ভেরোনিকা বুঝতে পারে সে গৌতমের মত মানুষের যোগ্য নয়। সে গৌতমের প্রতি তার ভালবাসার বলি দেয়, এবং মীরার খোঁজ করতে তার সহায়তা করে। তারা কুণালকে খুঁজে পায়। কুণাল তাদের বলে যে মীরা তাকে ছেড়ে চলে গেছে কারণ সে গৌতমকে খুব ভালবাসত এবং সে ভারতে ফিরে গেছে। গৌতম এবং ভেরোনিকা দিল্লি পৌঁছোয়। ভেরোনিকা গৌতমকে সাহায্য করে মীরাকে বিবাহের প্রস্তাব দিতে এবং মীরা তা গ্রহণ করে। ভেরোনিকা এবং মীরা আবার সেরা বন্ধু হয়ে যায় এবং তিন বন্ধু আবার মিলিত হয়।

চরিত্র চিত্রণ সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "COCKTAIL (12A)"British Board of Film Classification। ৯ জুলাই ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৩ নভেম্বর ২০১২ 
  2. Jha, Nishita। "Will The Real Homi Please Stand Up?"। ৩০ মে ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুন ২০১৩ 
  3. "Top Worldwide Grossers All Time"www.boxofficeindia.com। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০১৮ 
  4. "Randeep Hooda does a cameo in Cocktail"। সংগ্রহের তারিখ ২৫ আগস্ট ২০১২ 
  5. "First look: Cocktail"। Sify.com। ২৬ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১২ 
  6. Adarsh, Taran। "Bollywood News Settling for 'Cocktail', not 'Love Aajkal 2'"। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১২ 
  7. "Jism 2 has Strong Opening Kyaa Super Kool Hain Hum Good First Week"। boxofficeindia। ৪ আগস্ট ২০১২। ৭ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ আগস্ট ২০১২ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা