ওম বান্না (শ্রী ওম বান্না এবং বুলেট বাবাও বলা হয়[১]) হল ভারতের যোধপুরের কাছে পালি জেলায় অবস্থিত একটি উপাসনালয়। এটি ওম বান্না নামক একজন দেবতার প্রতি উৎসর্গীকৃত।[২] এটি পালি থেকে ২০ কিলোমিটার (১২ মা) এবং যোধপুর থেকে ৫৩ কিলোমিটার (৩৩ মা) দূরে পালি-যোধপুর রাজপথে, চোটিলা গ্রামের কাছে অবস্থিত। ওম বান্না বা ওম সিং রাঠোর যে মোটর সাইকেলটি চালাচ্ছিলেন সেটি হল একটি ৩৫০ সিসি রয়্যাল এনফিল্ড বুলেট আরএনজে ৭৭৭৩।

ওম বান্না
ওম বান্না মন্দির
অঞ্চলরাজস্থান, ভারত

নিরাপদ যাত্রার জন্য প্রার্থনা করতে প্রতিদিন শত শত ভক্ত এখানে আসে।[৩][৪]

ইতিহাস ও কিংবদন্তি সম্পাদনা

১৯৮৮ সালের ৫ই মে, ওম বান্না (পূর্বে ওম সিং রাঠোর নামে পরিচিত; বান্না- রাজপুত যুবকদের জন্য ব্যবহৃত একটি সম্মানসূচক শব্দ)[৩] পালির সান্দারাওয়ের কাছে বাংগদি শহর থেকে চোটিলা যাচ্ছিলেন। সেই সময় তাঁর মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি গাছে ধাক্কা মারে। এই দুর্ঘটনার ফলে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয় এবং মোটরসাইকেলটি পাশের খাদে গিয়ে পড়ে। দুর্ঘটনার পরের দিন সকালে, স্থানীয় পুলিশ মোটরসাইকেলটিকে কাছের একটি থানায় নিয়ে যায়। পরের দিন খবর পাওয়া যায় যে এটি থানা থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে গেছে এবং সেটিকে দুর্ঘটনাস্থলে পড়ে থাকতে দেখা যায়।[৫] পুলিশ আবারও মোটরসাইকেলটি তুলে নিয়ে আসে, সেটির জ্বালানী ট্যাঙ্ক খালি করে দেয় এবং সেটিকে তালা দিয়ে রাখে। তাদের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, পরের দিন সকালে এটি আবার অদৃশ্য হয়ে যায় এবং দুর্ঘটনাস্থলে পড়ে থাকতে দেখা যায়। কিংবদন্তি বলে যে মোটরসাইকেলটি বারবার একই খাদে ফিরে যেতে থাকে। এটিকে স্থানীয় থানায় রাখার জন্য পুলিশের প্রতিটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়; মোটরসাইকেলটি সবসময় ভোরের আগে একই জায়গায় ফিরে আসে।

স্থানীয় জনগণ এটিকে একটি অলৌকিক ঘটনা হিসাবে দেখেছিল, এবং তারা "বুলেট বাইক"কে পূজা করতে শুরু করে। অলৌকিক মোটরসাইকেলের খবর আশেপাশের গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে এবং পরে তারা এটিকে পূজা করার জন্য একটি মন্দির তৈরি করে। এই মন্দিরটি "বুলেট বাবার মন্দির" নামে পরিচিত। বিশ্বাস করা হয় যে ওম বান্নার আত্মা দুস্থ যাত্রীদের সাহায্য করে।

 
ওম বান্নার বুলেট বাইক (বুলেট বান্না)

উপাসনা সম্পাদনা

প্রতিদিন আশেপাশের গ্রামবাসী এবং ভ্রমণকারীরা এই বাইকের কাছে থামে এবং এর প্রয়াত মালিক ওম সিং রাঠোরের কাছে প্রার্থনা করে। যারা পাশ দিয়ে যায় তারা থেমে তাদের মাথা নত করে এবং উপকারী আত্মার সম্মানে নৈবেদ্য রেখে যায়। কিছু ড্রাইভার সেখানে ছোট বোতলে মদ্যও রেখে যায়।[৬] বলা হয় যে কোন ব্যক্তি এই মন্দিরে প্রার্থনা করতে না থামলে, তার ভ্রমণ বিপজ্জনক হতে পারে। ভক্তরা মোটরবাইকে 'তিলক' চিহ্ন এঁকে দেয় এবং তাতে একটি লাল সুতো বেঁধে দেয়। স্থানীয় লোকজন ওম বান্নার নামে লোকগান গায়। [৭]

 
যে গাছে ধাক্কা লেগে ওম বান্নার মৃত্যু ঘটেছিল, সেটি চুড়ি, স্কার্ফ ইত্যাদি নৈবেদ্য দিয়ে সাজানো হয়।

নৈবেদ্যের মধ্যে রয়েছে ধূপকাঠি, ফুল, নারকেল, মদ, লাল সুতো এবং মিষ্টি। মন্দিরে একটি চিরন্তন শিখা প্রজ্বলিত রাখা হয়।[৮]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. DelhiAugust 6, Dishank Purohit New; August 6, 2015UPDATED; Ist, 2015 16:29। "From Bullet Baba to Whiskey devi, 6 unusual temples in India"India Today (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৩-২৬ 
  2. Sharma, Anil (সেপ্টেম্বর ২০১০)। "Rev up those prayers at Bullet Banna's"। Overseas Indian। ১৩ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 
  3. "A prayer for drunk rider, shrine for his bike"। Indian Express। ২৫ অক্টোবর ২০০৯। 
  4. "Bullet Baba's temple in Rajasthan"। India Tribune। 
  5. "OM Bana's Bullet 350cc A Highway legend"। DriveSpark। ৩ সেপ্টেম্বর ২০১২। 
  6. "Bullet Baba's Temple in Jodhpur where People worship 350 cc Bullet"amazingindiablog.in। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০১৭ 
  7. "The legend of 'Bullet Baba', a motorcycle revered as saviour of troubled travellers"Deccan Chronicle। ১৬ আগস্ট ২০১৬। 
  8. "Om Banna History at Jai Rajputana Website"। ১৬ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 

https://timesofindia.indiatimes.com/travel/things-to-do/interesting-temples-in-india-and-their-unsolved-mysteries/slideshow_list/70043847.cms

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা