ইবরাহিম খাঁ সরকারি কলেজ
ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজ বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর উপজেলার অন্তর্গত একটি সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।[১] উপমহাদেশের প্রথম মুসলিম অধ্যক্ষ শিক্ষাবিদ ইবরাহীম খাঁ কর্তৃক ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত কলেজটি উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট, ডিগ্রি(পাশ) কোর্স এবং কিছু স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের সার্টিফিকেট প্রদান করে।[২]
ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজ | |
---|---|
অবস্থান | |
, , | |
তথ্য | |
বিদ্যালয়ের ধরন | কলেজ |
প্রতিষ্ঠাতা | ইব্রাহিম খাঁ |
অবস্থা | সক্রিয় |
বিদ্যালয় বোর্ড | জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় |
বিদ্যালয় জেলা | টাঙ্গাইল |
বিদ্যালয় নম্বর | ২ |
ইআইআইএন | ১১৪০৬৪ |
• ১১শ শ্রেণী | হ্যাঁ |
• ১২শ শ্রেণী | হ্যাঁ |
• ১৩শ শ্রেণী | হ্যাঁ |
ভাষা | বাংলা, ইংরেজি |
ক্যাম্পাসসমূহ | ইব্রাহিম খাঁ ক্যাম্পাস |
অন্তর্ভুক্তি | জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় |
ওয়েবসাইট | ibrahimkhangovcollege |
ইতিহাস সম্পাদনা
টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর উপজেলা ও পৌরশহরের প্রাণকেন্দ্রে ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ইবরাহীম খাঁ সরকারি কলেজ এতদঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দেশের উত্তর ও পশ্চিম অঞ্চলের প্রবেশদ্বার ‘ভূঞাপুর’ স্নিগ্ধ শ্যামলিমায় ঐশ্বর্যময়ী। ঢাকা-ভূঞাপুর, ঢাকা-তারাকান্দি রোড এবং যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতু ভূঞাপুরের যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। বঙ্গবন্ধু সেতু হতে প্রায় ১৩ কি. মি. উত্তরে রেল ও সড়ক যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থলে ছায়া সুনিবিড় শান্ত ও মনোরম পরিবেশে অবস্থিত এ কলেজ যমুনা বিধৌত জনপদে শিক্ষা বিস্তারে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে।
শিক্ষাবিদ প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ ১৯৪৮ সালে ভূঞাপুরের কিছু সংখ্যক বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তির অনুরোধে এলাকার সর্বস্তরের জনগণের ঐকান্তিক সহযোগিতায় ‘ভূঞাপুরে কলেজ’ প্রতিষ্ঠার মত দুঃসাহসিক কাজে আত্মনিয়োগ করেন। ১৯৪৮ সালের ৪ঠা এপ্রিল মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে সভাপতি করে ‘ভূঞাপুর কলেজ’-এর অর্গানাইজিং কমিটি গঠন করে কলেজটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ১৯৪৮ সালের ১লা জুলাই মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ১০২ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ভূঞাপুর হাই স্কুলে অস্থায়ীভাবে কলেজের কার্যক্রম শুরু হয়। কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জনাব হালিমুজ্জামান খান।
১৯৬৫ সালে স্নাতক (কলা ও ব্যবসায় শিক্ষা) এবং ১৯৭২ সালে স্নাতক (বিজ্ঞান) পাস কোর্স খোলার মাধ্যমে কলেজটি পূর্ণাঙ্গ ডিগ্রি কলেজের মর্যাদা লাভ করে।
১৯৭৮ সালে প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁ’র মৃত্যুর পর তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য কলেজটি ‘ইবরাহীম খাঁ কলেজ’ নামকরণ করা হয়। কলেজটি ১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স খোলার অনুমতি লাভ করে। ১৯৯৬ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বাংলা, দর্শন, সমাজকর্ম ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স, ১৯৯৭ সালে সমাজকর্ম, ব্যবস্থাপনা ও প্রাণিবিদ্যা এবং ২০১৬ সালে বাংলা, অর্থনীতি, মনোবিজ্ঞান ও হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) কোর্স চালু করার অনুমতি লাভ করে। ১৯৯৮ সালে কলেজটিতে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা (বিএম) কোর্স চালু করা হয়। বর্তমানে কলেজে ০৫টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ১ম ও শেষ পর্ব, ০৭টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান), ১৮ টি বিষয়ে স্নাতক (পাস) কোর্স এবং ১৯ টি বিষয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় পাঠদান করা হয়। কলেজে বর্তমান শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৭০০০ হাজার।
ঐতিহ্যবাহী এ কলেজটি ৭ একরের অধিক জমি নিয়ে প্রতিষ্ঠিত। শিক্ষক-কর্মচারীদের আবাসনের জন্য রয়েছে ১৮টি অস্থায়ী বাসা, ০৩টি মার্কেট, কলেজ গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার ও কম্পিউটার ল্যাব। এর রয়েছে দৃষ্টিনন্দন ও সুবিশাল ক্যাম্পাস। তৃণাচ্ছাদিত খেলার মাঠে সারা বছর ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবল ও ব্যাডমিন্টনসহ নানা ধরনের খেলাধুলার চর্চা হয়ে থাকে। দেশের অনেক প্রথিতযশা শিক্ষক ও শিক্ষাবিদ এ কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁদের সংস্পর্শে এ এলাকার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে পড়েছে ইতিবাচক প্রভাব। স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য-স্বাধীন দেশে প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করে শিক্ষা-বিস্তারের পথ অবারিত করেন। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ৩০ শে জুন ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে ভূঞাপুর রেল স্টেশন উদ্বোধনকালে এ কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মচারী, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মী, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে কলেজটি জাতীয়করণের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
১১ই অক্টোবর ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে কলেজটির জাতীয়করণ হয়। কলেজের শিক্ষার্থীদের পাঠদানের পাশাপাশি তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, ভলিবলসহ অন্যান্য খেলাধুলার সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং আন্তকলেজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে শিক্ষার্থীদের বিজয় অর্জনের গৌরব রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সুশৃঙ্খল ও নৈতিক চরিত্র গঠনের জন্য বিএনসিসি, রোভার স্কাউট, গার্লস্ ইন রোভার এবং রেডক্রিসেন্ট-এর সুদক্ষ ইউনিট রয়েছে। বিভিন্ন জাতীয় দিবসে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ, দেশপ্রেম ও ইতিহাস সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন করার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির ভূমিকা অনস্বীকার্য। শিক্ষার্থীদের আলোকিত মানুষ গড়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে সবসময়।
১ জুলাই ১৯৪৮[৩]তারিখে কলেজটিকে প্রথম এমপিওভুক্ত করা হয়।
প্রতিষ্ঠানটি ১১ই অক্টোবর ২০১৩ সালে জাতীয়করণ করা হয়।
অবকাঠামো সম্পাদনা
প্রফেসর মো. কামরুজ্জামান সরকার বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) অধ্যক্ষ
উচ্চ মাধ্যমিক (সাধারণ ও কারিগরি) শ্রেণির পাশাপাশি স্নাতক (পাস), বাংলা, অর্থনীতি,সমাজকর্ম,মনোবিজ্ঞান, প্রাণিবিদ্যা,ব্যবস্থাপনা ও হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক(সম্মান); বাংলা,ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি,দর্শন,সমাজকর্ম এবং ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু আছে।
তথ্যসূত্র সম্পাদনা
- ↑ "প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁর ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত"। Daily Inqilab। ৩০ মার্চ ২০১৯।
- ↑ "বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস)"। www.banbeis.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-২৪।
- ↑ "সরকারি কলেজের তালিকা"। www.banbeis.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০১-২৪।
বহিঃসংযোগ সম্পাদনা
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিষয়ক এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |