আবু ইব্রাহীমের মৃত্যু

শহীদুল জহির রচিত ২০০৯ সালের বাংলা উপন্যাস

আবু ইব্রাহীমের মৃত্যু বাংলাদেশী লেখক শহীদুল জহির রচিত বাংলা উপন্যাস। এটি ২০০৯ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি মাওলা ব্রাদার্স থেকে মরণোত্তর প্রকাশিত জহিরের চতুর্থ[১] এবং সর্বশেষ প্রকাশিত উপন্যাস।[২] তৎকালীন স্বৈরশাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের শাসনামলের পটভূমিতে রচিত এটি একটি নাতিদীর্ঘ উপন্যাস,[৩] যার কাহিনি গভীর ব্যঞ্জনাসমৃদ্ধ এবং মানবিক অভিজ্ঞতার ভাষ্য।[৪][৫] উপন্যাসটির উৎসর্গপত্রে লেখা হয়েছে: "মানুষের মুত্যু অবশ্যই হয়, কিন্তু মৃত্যুর তাৎপর্য ভিন্ন। প্রচীন চীনে সিমা ছিয়েন নামক একজন সাহিত্যিক বলেছিলেন মানুষের মৃত্যু অনিবার্য, কিন্তু তার তাৎপর্য হবে থাই পাহাড়ের চেয়েও ভারী বা বেলে হাঁসের পালকের চেয়েও হালকা।"[৬][৭]

আবু ইব্রাহীমের মৃত্যু
বইয়ের প্রচ্ছদ
প্রথম সংস্করণের প্রচ্ছদ
লেখকশহীদুল জহির
প্রচ্ছদ শিল্পীধ্রুব এষ
দেশবাংলাদেশ
ভাষাবাংলা
ধরনউপন্যাস
প্রকাশিত৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৯
প্রকাশকমাওলা ব্রাদার্স
মিডিয়া ধরনছাপা (শক্তমলাট)
পৃষ্ঠাসংখ্যা৬৪ (তৃতীয় মুদ্রণ)
পুরস্কারপ্রথম আলো বর্ষসেরা বই ১৪১৫ (২০০৯)
আইএসবিএন৯৮৪৭০১৫৬০০৮৭৭ {{ISBNT}} এ প্যারামিটার ত্রুটি: অবৈধ উপসর্গ
ওসিএলসি১১১২২৫৩৭৯৮
এলসি শ্রেণীPK1730.25.A445
পূর্ববর্তী বইমুখের দিকে দেখি (২০০৬) 

কেউ কেউ "আবু ইব্রাহিমের মৃত্যু" উপন্যাসের সঙ্গে গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেসের ক্রোনিকা দে উনা মুয়ের্তে আনুন্সিয়াদা (১৯৮১) (ক্রনিকলস অব আ ডেথ ফোরটোল্ড) উপন্যাসের মিথস্ক্রিয়া খুঁজে পান।[৮] উপন্যাসটি ২০১০ সালে সৃজনশীল শাখায় প্রথম আলো বর্ষসেরা বই ১৪১৫ পুরস্কার লাভ করে।[৯]

প্রকাশ সম্পাদনা

গ্রন্থাকারে প্রকাশের পূর্বে আবু ইব্রাহীমের মৃত্যু ১৯৯১ সালের ৮ জুন নিপুণ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।[৭] পরবর্তীতে ঢাকার মাওলা ব্রাদার্স থেকে ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম সংস্করণ এবং ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে এর তৃতীয় মুদ্রণ প্রকাশিত হয়।[১০]

সারাংশ সম্পাদনা

কাহিনীর মূল চরিত্র আবু ইব্রাহীম প্রকৃতপক্ষে একজন অসুখি মানুষ। সত্য-মিথ্যা আর ভালো-মন্দের দ্বন্দ্বে জীবন পার করেন তিনি। তার মৃত্যুর দিন থেকে উপন্যাসের গল্প শুরু, এবং সমাপ্তি ঘটে তার মৃত্যু দিয়ে।[১১] পেশায় যিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা। ইব্রাহীমের সংকটাপন্ন জীবনে তার স্ত্রী, কন্যা, সহকর্মী, ঘুষদাতা ব্যবসায়ী ও পুরোনো বান্ধবীর সঙ্গে তার নিরুপায় মিথস্ক্রিয়ার চিত্র উপন্যাসের উপজীব্য বিষয়।[২] উপন্যাসের পটভূমি গড়ে উঠেছে ঢাকার বেইলি রোডের সরকারি কলোনি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মতিঝিল, সচিবালয়সিরাজগঞ্জের এলাকায়।[৪][১২]

চরিত্র সম্পাদনা

  • আবু ইব্রাহীম - সরকারি কর্মচারী
  • মমতা - আবু ইব্রাহীমের স্ত্রী
  • বিন্দু - আবু ইব্রাহীমের কন্যা
  • হেলেন - আবু ইব্রাহীমের সহপাঠী
  • সিদ্দিক হোসেন - অফিসের বস

অনুবাদ সম্পাদনা

উপন্যাসটি সংহতি প্রকাশন থেকে ২০২২ সালে প্রকাশিত লাইফ অ্যান্ড পলিটিক্যাল রিয়ালিটি: টু নভেলাস গ্রন্থে আবু ইব্রাহীম'স ডেথ শিরোনামে ইংরেজি ভাষায় অনুদিত হয়েছে।[১৩] যেটি বাংলা ভাষা থেকে অনুবাদ করেছেন ভারতীয় অনুবাদক ভি রামস্বামী ও শাহরোজা নাহরিন।[১৩] একই বছর উপন্যাসটি বছরের সেরা অনুদিত বই শাখায় অনুবাদ সাহিত্য পুরস্কার লাভ করে।[১৪][১৫]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. হাবিব, তাশরিক-ই-হাবিব (২ জানুয়ারি ২০১৭)। হাসনাত, আবুল, সম্পাদক। "শহীদুল জহিরের তিনটি গল্পে জাদুবাস্তবতার অন্বেষণ"কালি ও কলম। ঢাকা: আবুল খায়ের। ১৩ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০২১ 
  2. "আবু ইব্রাহীমের মৃত্যু"bdnews24.comবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৯। ৩০ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুলাই ২০২০ 
  3. প্রিন্স, মাওলা (১২ সেপ্টেম্বর ২০২২)। "সময়ের দুঃসাহসী কথাশিল্পী শহীদুল জহির"দ্য ডেইলি স্টার (বাংলাদেশ)। ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
  4. আবেদীন, রাফেয়া (২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮)। "শহীদুল জহিরের আবু ইব্রাহীমের মৃত্যু - পরিবেশ ও প্রকৃতি"দৈনিক সংবাদ (বাংলাদেশ)। ১ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০২১ 
  5. "শহীদুল জহিরের আবু ইব্রাহীমের মৃত্যু শংসাবচন"দৈনিক প্রথম আলো। ৮ জানুয়ারি ২০১০। ২০ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুলাই ২০২০ 
  6. জহির ২০০৯, পৃ. ৫ প্রাথমিক সূত্র
  7. "'আবু ইব্রাহীমের মৃত্যু' : একপ্রস্থ আত্মপ্রতিফলন"banglanews24.comবাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ১২ সেপ্টেম্বর ২০১১। ১ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুলাই ২০২০ 
  8. ওয়াধওয়া, সোনি (৮ এপ্রিল ২০২২)। ""Life And Political Reality: Two Novellas" by Shahidul Zahir"। Asian Review of Books। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মার্চ ২০২৩ 
  9. "আজ প্রথম আলো বর্ষসেরা বইয়ের পুরস্কার বিতরণ"দৈনিক প্রথম আলো। ১ ফেব্রুয়ারি ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুলাই ২০২০ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  10. জহির ২০০১, পৃ. ৪ প্রাথমিক সূত্র
  11. উদ্দিন, সিরাজ (২০ জানুয়ারি ২০২৩)। "সে মৃত্যু মুহূর্তেই মনে করিয়ে দেয় জীবন কী"শিলালিপি। নাটোর: দৈনিক কালের কণ্ঠ। ৯ মার্চ ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ মার্চ ২০২৩ 
  12. "শহীদুল জহির ও পরাজিত এক ইব্রাহীমের গল্প"বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬। ১১ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০২১ 
  13. তারিক, জাহানারা (২৮ জুলাই ২০২২)। "Mundanities, magic realism, Bangladesh—Shahidul Zahir's novellas"দ্য ডেইলি স্টার (বাংলাদেশ)। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০২৩ 
  14. "Anubad Sahitya Puraskar 2022 distributed"নিউ এজ (বাংলাদেশ)। ৩১ জানুয়ারি ২০২৩। ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ মার্চ ২০২৩ 
  15. "অনুবাদ সাহিত্য পুরস্কার পাচ্ছেন সালেহা চৌধুরী, ভি রামস্বামী ও শাহরোজা নাহরিন"দ্য ডেইলি স্টার (বাংলাদেশ)। ২৫ জানুয়ারি ২০২৩। ২৫ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ মার্চ ২০২৩ 

সূত্র সম্পাদনা

জহির, শহীদুল (২০০৯)। আবু ইব্রাহীমের মৃত্যু (১ম (৩য় মুদ্রণ) সংস্করণ)। ঢাকা: মাওলা ব্রাদার্স। আইএসবিএন 9847015600877ওসিএলসি 1112253798 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা