অনিতা অগসপার্গ

জার্মান আইনবিদ, অভিনেত্রী, লেখক এবং কর্মী

অনিতা অগসপার্গ (২২ সেপ্টেম্বর ১৮৫৭ – ২০ ডিসেম্বর ১৯৪৩) ছিলেন একজন জার্মান আইনবিদ, অভিনেত্রী, লেখক, নারীবাদী আন্দোলনের কর্মী এবং শান্তিবাদী।[১]

অনিতা অগসপার্গ
Anita Augspurg
অনিতা অগসপার্গ
অনিতা অগসপার্গ
জন্ম২২ সেপ্টেম্বর ১৮৫৭
ভার্ডেন অ্যান দের অ্যালার, জার্মানি
মৃত্যু২০ ডিসেম্বর ১৯৪৩(1943-12-20) (বয়স ৮৬)
জুরিখ, সুইজারল্যান্ড
পেশাঅভিনেত্রী, আইনজীবী, লেখক
জাতীয়তাজার্মান
বিষয়নারীবাদ
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি"অপেন লেটার", ১৯০৫
সঙ্গীলিডা গুস্তাভা হেইম্যান

জীবনী সম্পাদনা

 
১৯১৫ সালের মহিলাদের আন্তর্জাতিক কংগ্রেস। বাম থেকে ডানে:১. লুসি থুমাইয়ান - আর্মেনিয়া, ২. লিওপোল্ডাইন কুলকা - অস্ট্রিয়া, ৩. লরা হিউজেস - কানাডা, ৪. রোজিকা সুঁইমার - হাঙ্গেরি, ৫. অনিতা অগসপার্গ - জার্মানি, ৬. জেন অ্যাডামস - মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ৭. ইউজেনি হ্যানার, ৮. আলেটা জ্যাকবস - নেদারল্যান্ডস, ৯. ক্রিস্টাল ম্যাকমিলান - যুক্তরাজ্য, ১০. রোজা জেনোনি - ইতালি, ১১. অ্যানা ক্লেম্যান - সুইডেন, ১২. থোরা দাউগার্ড - ডেনমার্ক, ১৩. লুউইস কেইলহাউ - নরওয়ে

অনিতা অগসপার্গ একজন উকিলের মেয়ে ছিলেন, বড় হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি তার পিতার আইন অফিসে কাজ করেন। বার্লিনে তিনি মহিলা কলেজে শিক্ষাদানের জন্য একটি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পন্ন করেন এবং পাশাপাশি তিনি অভিনয়ের ক্লাসও নেন। ১৮৮১ থেকে ১৮৮২ সাল পর্যন্ত তিনি মাইনেনজেন এনসেম্বলের শিক্ষানবিশ ছিলেন এবং জার্মানি, নেদারল্যান্ডস ও লিথুয়ানিয়া জুড়ে কনসার্ট ট্যুরে অংশ নিয়েছিলেন। তার নানি, যিনি ১৮৮৭ সালে মারা গিয়েছিলেন, অগসপার্গকে একটি উল্লেখযোগ্য উত্তরাধিকার রেখেছিলেন, যা তাকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করেছিল।

অভিনেত্রী হিসেবে পাঁচ বছরের কর্মজীবনের পর, তিনি তার বন্ধু সোফিয়া গাউডস্টিকারের সাথে মিউনিখে গিয়েছিলেন, সেখানে ১৮৮৭ সালে তারা যৌথভাবে হোফটেলিয়ার এলভিরা নামে একটি ফটোগ্রাফি স্টুডিও খুলেছিলেন। দুইজনেই ছোট চুল, অপ্রচলিত পোশাক পরতেন এবং নারীদের মুক্তির সংগ্রাম ও তাদের মুক্ত জীবনযাত্রার জন্য ঘন ঘন তাদের সমর্থন প্রকাশ করতেন। সেই অস্বাভাবিক জীবনযাত্রার কারণে, অগসপার্গ নারী আন্দোলনের অন্যান্য ব্যক্তিত্বের তুলনায় নারীবাদ বিরোধীদের দ্বারা ব্যক্তিগত আক্রমণের সম্মুখীন হয়েছিল। তারপরও, মঞ্চ এবং স্টুডিওর মাধ্যমে দ্রুত তাকে সুপরিচিত করে তোলে এবং তার গ্রাহক হিসাবে বায়ার্ন রাজ পরিবারও ছিল।

১৮৯০ সালের মধ্যে অগসপার্গ জার্মান মহিলা আন্দোলনের সাথে গভীরভাবে জড়িত ছিলেন এবং একজন প্রকাশ্য বক্তব্য দেওয়ার অনুশীলনও করেছিলেন। নারীর অধিকারের প্রতি তার অঙ্গীকার তাকে কয়েক বছরের সফল কাজের পর তিনি আইন ডিগ্রির জন্য পড়াশোনা করার সিদ্ধান্ত নেয়। তিনি সুইজারল্যান্ডের জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন, কারণ জার্মানিতে নারীদের তখনও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে সমান প্রবেশাধিকার ছিল না। রোসা লুক্সেমবুর্গের সাথে তিনি ছিলেন আন্তর্জাতিক মহিলা ছাত্রী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা, যার সাথে তার বিক্ষোভপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। তিনি ১৮৯৭ সালে ডক্টরেট নিয়ে তার পড়াশোনা শেষ করেন, তিনি জার্মান সাম্রাজ্যের প্রথম আইন বিভাগের ডক্টরেট। কিন্তু তিনি একজন আইনজীবী হিসাবে অনুশীলন করতে পারেননি, কারণ মহিলাদের তখনও এটি করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল না।

১৮৯৫ সালে অগসপার্গ ডাই ফ্রয়েনবেউইগুং পত্রিকার ("দ্য উইমেন্স মুভমেন্ট") সাথে সমন্বয় করে, তিনি সামাজিক আইনে যে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন তার নিন্দা জানিয়ে প্রবন্ধ লিখেছিলেন, বিশেষ করে তিনি বিবাহকে বৈধ পতিতাবৃত্তির একটি রূপ বলে বর্ণনা করেছিলেন। ১৮৯৬ সালে তিনি বার্লিনে অনুষ্ঠিত মহিলাদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন, যেখানে তিনি নারীবাদী লিডা গুস্তাভা হেইম্যানের সাথে দেখা করেছিলেন, যিনি পরবর্তিতে তার জীবনের বাকি সময় তার সঙ্গী হয়েছিলেন।

তারা দক্ষিণ আমেরিকায় গভীর নির্বাসনে চলে যায়, কিন্তু পরে জুরিখে বসতি স্থাপনের জন্য ইউরোপে ফিরে আসে। সেখানে তার সঙ্গীর কয়েক মাস পর ১৯৪৩ সালে অগসপার্গ মারা যান। হেইম্যানের মতো, তাকে সুইজারল্যান্ডের জুরিখের ফ্লান্টার্ন কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা